(বাঁ দিক) মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র
বিরল খনিজ নিয়ে চিনের সঙ্গে লড়াইয়ে ভারতের ‘সমর্থন’ চাইল আমেরিকা। শুধু ভারত নয়, এই লড়াইয়ে ইউরোপ এবং এশিয়ার অন্য দেশগুলিকেও পাশে চাইছে মার্কিন প্রশাসন। একই সঙ্গে চিনের শি জিনপিঙের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী আর্থিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টার অভিযোগও তুলেছে তারা।
সম্প্রতি বিরল খনিজ রফতানিতে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে চিন। জিনপিং প্রশাসনের এই পদক্ষেপে বেজায় চটেছে আমেরিকা। চিনা পণ্যের উপর অতিরিক্ত ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুঁশিয়ারি আগেই দিয়ে রেখেছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। চিনের এই পদক্ষেপকে বিশ্ব অর্থনীতির কাছে সরাসরি চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছে মার্কিন প্রশাসন। ‘ফক্স বিজ়নেস’-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ডোনাল্ড ট্রাম্প সরকারের অর্থসচিব স্কট বেসেন্ট বলেন, ‘‘এই লড়াই চিন বনাম বাকি বিশ্বের। আমরা চিনের বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিরোধ গড়ে তুলেছি। আমেরিকা কখনওই বেজিংকে বিরল খনিজের উপর তার আধিপত্যকে অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করতে দেবে না।’’
বেসেন্ট মনে করেন, চিনের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে সম্মিলিত ভাবে লড়তে হবে। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা বিভিন্ন উপায়ে আমাদের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা করবই। ইতিমধ্যেই আমরা আমাদের বন্ধু দেশগুলির সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলেছি। চলতি সপ্তাহে তাদের সঙ্গে দেখা করব। আশা করি, ভারত, ইউরোপ এবং এশিয়ার অন্য গণতান্ত্রিক দেশগুলি থেকে আমরা সমর্থন পাব।’’
গত ৯ অক্টোবর চিনের মাটিতে বিদেশি সংস্থার উত্তোলন এবং প্রক্রিয়াকরণ করা বিরল খনিজের রফতানিতে বেশ কিছু বিধিনিষেধ চাপিয়েছে বেজিং। চিন থেকে বিদেশি সংস্থাগুলির রফতানি করা পণ্যে বিন্দুমাত্র বিরল খনিজের উপস্থিতি থাকলে তার জন্য বিশেষ অনুমতি নিতে হবে। শুধু তা-ই নয়, ওই বিরল খনিজ প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রের যন্ত্রপাতি তৈরিতে ব্যবহার করা হবে না, ঘোষণা করে জানাতে হবে। জনসাধারণের ভোগ্যপণ্য তৈরির ক্ষেত্রে ওই বিরল খনিজ ব্যবহার করা যেতে পারে। ঘোষণাপত্রে এই সব কিছুরই উল্লেখ থাকতে হবে বলে জানিয়েছে বেজিং। কেন তারা এই বিধিনিষেধ আরোপ করেছে, তারও যুক্তি দিয়েছে। তাদের দাবি, বিশ্বে শান্তি বজায় রাখতে এই পদক্ষেপ আবশ্যক! আগামী ১ নভেম্বর থেকে এই বিধিনিষেধ কার্যকর হবে।
বিরল খনিজের রফতানির উপর চিনের বিধিনিষেধ যে সহজে মেনে নেবে না, তা আগেই বুঝিয়ে দিয়েছিল ট্রাম্প প্রশাসন। চিনা পণ্যের উপর অতিরিক্ত ১০০ শতাংশ আমদানি শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছে তারা। যদিও আমেরিকার হুমকির সামনে মাথা নত করবে না, তা-ও স্পষ্ট করেছে বেজিং। চিনের বাণিজ্য মন্ত্রকের মতে, এ ধরনের কোনও হুমকিতে কাজ হবে না। একই সঙ্গে আমেরিকাকে আলোচনার টেবিলের বসার আহ্বান জানিয়েছে। তাদের কথায়, ‘‘আমেরিকা চাইলে আলোচনা মাধ্যমে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করতে পারে। আমরা কখনওই শুল্কযুদ্ধ চাই না।’’ তবে বেসেন্টের কথা থেকে স্পষ্ট চিনের সঙ্গে এখনই তারা কোনও আলোচনা চাইছে না।