মাসুদ আজহার। —ফাইল চিত্র।
সন্ত্রাস নিয়ে ভারত-পাকিস্তান চাপান-উতোরের মধ্যেই জইশ-ই-মহম্মদ প্রধান মাসুদ আজহারকে ‘আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী’ হিসেবে চিহ্নিত করতে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের কাছে নতুন করে আবেদন জানাল আমেরিকা, ব্রিটেন ও ফ্রান্স।
এমন যে হতে চলেছে, সে ইঙ্গিত মিলেছিল আগেই। গত কাল ফ্রান্স জানিয়েছিল, চিন বাধা দিলেও মাসুদ আজহারকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে তারা ফের রাষ্ট্রপুঞ্জের দ্বারস্থ হবে।
এই প্রস্তাব পাশ হয়ে গেলে, পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদী সংগঠন জইশ এবং তার প্রধান মাসুদকে গোটা বিশ্বে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হবে। তাঁর যাবতীয় সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হবে। সেই সঙ্গে মাসুদ আজহারের আন্তর্জাতিক সফরেও নিষেধাজ্ঞা জারি হবে। এ প্রস্তাবে রাশিয়ার ভোট মিলবে বলেই অনুমান করা যায়। কারণ মস্কো বরাবরই মাসুদ আজহারকে ‘আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী’ ঘোষণার পক্ষে সায় দিয়েছে। কিন্তু সকলের নজর চিনের দিকে। কারণ এর আগে যত বার এই প্রস্তাব উঠেছে, বেজিং বাগড়া দিয়ে এসেছে। আগামী দশ দিনের মধ্যে নিজেদের সিদ্ধান্ত জানাবে নিরাপত্তা পরিষদ।
২০০১ সালে সংসদে জঙ্গি হানা, ২০১৬ সালে পঠানকোট হামলা, ওই বছরেই উরিতে সন্ত্রাস এবং সর্বশেষ পুলওয়ামার হামলা— এই সব ক’টিতেই অন্যতম ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে অভিযুক্ত মাসুদ আজহার। তাদের মাটিতেই যে জইশের এই বাড়বাড়ন্ত, প্রতিবার সে অভিযোগ অস্বীকার করে গিয়েছে পাকিস্তান। বরং ‘সন্ত্রাসে মদত’ যে ইসলামাবাদের অন্যতম সরকারি নীতি, সে কথা উঠে এসেছে বারবার। ২০০৯ সালে মাসুদকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী ঘোষণার জন্য নিরাপত্তা পরিষদে আবেদন জানিয়েছিল দিল্লি। পরে ২০১৬তে দিল্লি ফের আমেরিকা, ব্রিটেন ও ফ্রান্সের সঙ্গে একযোগে মাসুদকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার প্রস্তাব দিয়েছিল। ২০১৭ সালে আবার নিরাপত্তা পরিষদের কাছে একই প্রস্তাব দেয় আমেরিকা-ব্রিটেন-ফ্রান্স। কিন্তু প্রতিটি ক্ষেত্রে পরিষদের স্থায়ী সদস্য চিনের চাপে সেই আবেদন নস্যাৎ হয়ে গিয়েছিল। ফলে এ বারে তার অন্যথা হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে।