রবিবার সকালেও রাশিয়া এবং ইউক্রেন একে অন্যের বিরুদ্ধে হামলা চালিয়েছে। — ফাইল চিত্র।
আলোচনার মাধ্যমে রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ থামানোর জন্য ‘উল্লেখযোগ্য ছাড়’ দিয়েছে রাশিয়া! রবিবার আমেরিকার এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানালেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্স। যুদ্ধবিরতি নিয়ে দু’দেশ আলোচনার টেবিলে বসবে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে ভান্সের দাবি, শান্তি ফেরানোর বিষয়ে তিনি আশাবাদী। এ দিকে রবিবার সকালেও রাশিয়া এবং ইউক্রেন একে অন্যের বিরুদ্ধে হামলা চালিয়েছে। আবার দু’দেশের মধ্যে বন্দি বিনিময়ও হয়েছে রবিবার।
রবিবার রাশিয়ার কুর্স্ক অঞ্চলে একটি পরমাণুকেন্দ্রের কাছে ইউক্রেন ড্রোন হামলা করেছে বলে দাবি মস্কোর। যদিও তাতে পরমাণুকেন্দ্রের ক্ষতি হয়নি। আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা ‘আইএইএ’ জানিয়েছে, পরমাণুকেন্দ্রে তেজস্ক্রিয় বিকিরণের মাত্রা স্বাভাবিকই রয়েছে। পাল্টা অভিযোগ রয়েছে কিভেরও। ইউক্রেনের বায়ুসেনার দাবি, রাশিয়া তাদের উপর ড্রোন হামলা চালিয়েছে। অভিযোগ এবং পাল্টা অভিযোগের মাঝে রবিবার মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্টের এই মন্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম ‘এনবিসি’-কে ভান্স জানান, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বেশ কয়েকটি ছাড় দিয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ সংক্রান্ত বার্তাও। বস্তুত, রাশিয়া যাতে ভবিষ্যতে ইউক্রেনে হামলা করতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে চাইছে কিভ এবং তার ইউরোপীয় বন্ধুরা। সম্প্রতি হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁদের আলোচনাতেও এই প্রসঙ্গ উঠে এসেছে।
মস্কোর অবস্থান প্রসঙ্গে ভান্স বলেন, “আমি মনে করি গত সাড়ে তিন বছরের সংঘর্ষে এই প্রথম বার রাশিয়া প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে ‘উল্লেখযোগ্য ছাড়’-এর কথা বলেছে।” কিভের শাসন ব্যবস্থাকে রাশিয়া নিজের অঙ্গুলিহেলনে নিয়ন্ত্রণ করবে না, সেই আশ্বাসও মস্কো দিয়েছে বলে দাবি ভান্সের।
এ দিকে রবিবারই রাশিয়া এবং ইউক্রেন উভয় দেশই সংযুক্ত আরব আমিরশাহির মধ্যস্থতায় পরস্পরের মধ্যে ১৪৬ জন বন্দি বিনিময় করেছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কির পাশাপাশি এবং রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রকও এই বন্দি বিনিয়মের কথা ঘোষণা করেছে। তবে এরই মধ্যে দু’দেশই একে অন্যের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ তুলেছে রবিবারও।
মস্কোর অভিযোগ, শনিবার রাত থেকে রবিবার সকালের মধ্যে রাশিয়ার পশ্চিম কুর্স্ক এলাকায় ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন। সংবাদ সংস্থা এপি জানিয়েছে, হামলার সময়ে কুর্স্কের একটি পরমাণুকেন্দ্রে আগুনের স্ফুলিঙ্গ দেখা গিয়েছে বলেও দাবি করছে রাশিয়া। যদিও আগুন সঙ্গে সঙ্গে নিবিয়ে ফেলা হয়। একটি ট্রান্সফর্মারের ক্ষতি হলেও তেজস্ক্রিয় বিকিরণ স্বাভাবিক মাত্রার মধ্যেই ছিল বলে দাবি মস্কোর। পাশাপাশি রাশিয়ার বেশ কিছু বিদ্যুৎকেন্দ্র লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার রাত থেকে রবিবার সকাল পর্যন্ত ইউক্রেনের ৯৫টি ড্রোন রুশ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করেছে বলে দাবি ক্রেমলিনের। অন্য দিকে ইউক্রেনের বায়ুসেনার দাবি, রাশিয়াও তাদের উপর ৭২টি ড্রোন দিয়ে হামলা চালিয়েছে। এর মধ্যে ৪৮টি ড্রোন ধ্বংস করা হয়েছে বলে দাবি কিভের।