USA

বরফ পড়লেও ভোটের হাওয়া কিন্তু বেশ গরম

ডেমোক্র্যাটদের জন্য এই ভোটটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এই নির্বাচনে ভোট দেবেন শুধুই পাক্কা ডেমোক্র্যাট সমর্থকেরা।

Advertisement

শুভঙ্কর মুখোপাধ্যায়

ন্যাশভিল (টেনেসি) শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০২০ ১১:০০
Share:

প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী বার্নি স্যান্ডার্স। ছবি: এএফপি।

মাধ্যমিকের মাস কয়েক আগে স্কুলে টেস্ট পরীক্ষা হত। আমেরিকার এই ‘সুপার টিউজ়ডে প্রাইমারি’ ব্যাপারটা তেমনই বটে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে নিজের দলের একাধিক প্রার্থীর বাজারটা যাচাই করে নেওয়া। সময়কাল ফেব্রুয়ারি-মার্চের কোনও এক মঙ্গলবার। স্কুলের টেস্টের সময়ে দেশে বেশ ঠান্ডা থাকত। আর এখানে এখনও বেশ ঠান্ডা, সেই ছোটবেলার টেস্ট-আবহের মতোই। উপরি পাওনা, মাঝেমধ্যে একটু বরফ। বরফ পড়ছে বটে, কিন্তু আসলে হাওয়া চরম গরম।

Advertisement

আগামিকাল, ৩ মার্চ ‘সুপার টিউজ়ডে’। এই গুরুত্বপূর্ণ দিনটিতে ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান দলের অভ্যন্তরীণ নির্বাচন হওয়ার কথা। কিন্তু এ বছর রিপাবলিকান দলের প্রায় সব মনোনয়ন-ই ঢুকেছে রিপাবলিকান দলের প্রার্থী, বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঝুলিতে। ফলে মঙ্গলবার আর ভোট দিতে হবে না রিপাবলিকান সমর্থকদের।

হোয়াইট হাউস দখলের লড়াই

Advertisement

৩ মার্চ

সুপার টিউজ়ডে

• ‘প্রাইমারি’ হবে ১৪টি প্রদেশে— অ্যালাবামা, আরক্যানস, ক্যালিফর্নিয়া, কোলোর‌্যাডো, মেন, ম্যাসাচুসেটস, মিনেসোটা, নর্থ ক্যারোলাইনা, ওকলাহোমা, টেনেসি, টেক্সাস, উটা, ভার্মন্ট এবং ভার্জিনিয়ায়

১৩-১৬ জুলাই

• ডেমোক্র্যাট দলের জাতীয় কনভেনশন

২৪-২৭ অগস্ট

• রিপাবলিকান দলের জাতীয় কনভেনশন

৩ নভেম্বর
প্রেসিডেন্ট নির্বাচন

কিন্তু, ডেমোক্র্যাটদের জন্য এই ভোটটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এই নির্বাচনে ভোট দেবেন শুধুই পাক্কা ডেমোক্র্যাট সমর্থকেরা। রিপাবলিকান সমর্থক বা ভাসমান ভোটারেরা কেনই বা কষ্ট করে কোনও ডেমোক্র্যাট প্রার্থীর হয়ে ভোট দিতে বেরোবেন! কালকের ভোট গুরুত্বপূর্ণ দু’টি কারণে। এক, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তথা রিপাবলিকানদের হারানোর দায়িত্ব দেওয়া হবে কোন ডেমোক্র্যাট প্রার্থীর কাঁধে, তা মোটামুটি সুপার টিউজ়ডে ঠিক করে দেবে। হালের মার্কিন মুলুকে কাজটা বেশ কঠিন। আর দুই, ট্রাম্প জেতার পর থেকে গত চার বছর ধরে ডেমোক্র্যাট দল নেতৃত্বহীনতায় ভুগছে। দলের সম্ভাব্য প্রেসিডেন্ট প্রার্থীদের মধ্যে কে ভাল সংগঠক, আর কে ভাল প্রশাসক, তার বিচার নিয়ে জোর ধন্দ চলছে ডেমোক্র্যাট দলের অন্দরে।

কয়েক দিনের আগের পরিসংখ্যান বলছিল, সব চেয়ে এগিয়ে ‘আটাত্তুরে বুড়ো’ বার্নি স্যান্ডার্স, আর তাঁর ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলছেন ‘সে দিনের ছেলে’ পিট বুটিজেজ। কিন্তু কাল তাঁর মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন বুটিজেজ। অন্য দিকে, সাউথ ক্যারোলাইনার প্রাইমারিতে জিতে দৌড়ে অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছেন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সময়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এই দুই প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বী ‘লৌহমানবী’ এলিজাবেথ ওয়ারেন। নিন্দুকেরা বলছে, মহিলা বলে এলিজাবেথকে মাঝপথে থেমে যেতে হবে। তা হলে, হাতে রইল দুই। বার্নির আবার ‘বদনাম’ আছে সোশ্যালিস্ট বলে। ট্রাম্প তো ওঁর সম্পর্কে বলেই দিয়েছেন, ‘ওই লোকটা কমিউনিস্ট’! আমেরিকার আমজনতা আবার কমিউনিস্টদের পছন্দ করেন না। তা হলে কি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী শেষমেশ বাইডেন! হতেই পারে!

এই সব জল্পনা-কল্পনা নিয়ে আমেরিকায় সগৌরবে ‘মঙ্গলবার’ আসিতেছে। কবির কবিতায় যেমন আছে, এ কলকাতার মধ্যে আছে আরেকটা কলকাতা! তেমনই মার্কিন মুলুকে এখন, এই ভোটের মধ্যে আছে আর এক ভোটের কথা।

শুধু দেখতে থাকুন...।

লেখক টেনেসি স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিক

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন