হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি। ছবি: রয়টার্স।
সোমবার বৈঠক শেষে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে আমন্ত্রিত বিশিষ্ট অতিথিদের ধন্যবাদ জানান। তিনি তাঁর সমাজমাধ্যম ‘ট্রুথ’-এ লেখেন, “ ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁ, ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আলেকজ়ান্ডার স্টাব, ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি, ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার, জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রেডরিখ মার্জ়, ইউরোপীয় কমিশনের সভাপতি উরসুলা ভনডের লেইন এবং ন্যাটোর মহাসচিব মার্ক রুটের সঙ্গে ওভাল অফিসে আমার খুব ভাল বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে আমরা ইউক্রেনের নিরাপত্তার বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। এ ব্যাপারে ইউরোপীয় দেশগুলি তাদের সহমত জানিয়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেনের ‘শান্তিচুক্তি’ নিয়ে সবাই খুব খুশি।”
ট্রাম্প আরও লেখেন, “বৈঠক শেষে আমি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছি। পাশাপাশি, জ়েলেনস্কি এবং পুতিনের মধ্যে একটি বৈঠকের প্রস্তাবও দিয়েছি। ইতিমধ্যেই সেই বৈঠকের তোড়জোড় শুরু করা হচ্ছে। সেই বৈঠক হওয়ার পর, আমরা একটি ত্রিপাক্ষিক বৈঠক করব। সেখানে দুই রাষ্ট্রপ্রধান থাকবেন এবং আমিও থাকব।”
ট্রাম্প এও লেখেন, “প্রায় চার বছর ধরে এই যুদ্ধ চলছে। রাশিয়া-ইউক্রেনের জন্য এই বৈঠক খুবই ভাল এবং গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ছিল। মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্স, মার্কিন বিদেশসচিব মার্কো রুবিয়ো এবং আমেরিকার বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ রাশিয়া ও ইউক্রেনের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। আমি আবারও সকলকে ধন্যবাদ জানাই।”
জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রেডরিখ মার্জ় জানান, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ফোনে কথা হয়েছে। পুতিন জানিয়েছেন আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। তবে সেই বৈঠকটি কোথায় হবে তা এখনও ঠিক করা হয়নি।
সোমবারের বৈঠকে জ়েলেনস্কি জানান, তিনি পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করতে রাজি। তিনি এও জানান, রাশিয়া ইউক্রেনের সঙ্গে একটি দ্বিপাক্ষিক এবং ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের প্রস্তাব রেখেছে।
রাশিয়ার উদ্দেশে জ়েলেনস্কি বলেন, “আমি বিশ্বাস করি আমাদের নিঃস্বার্থ ভাবে দেখা করা উচিত এবং খুব তারাতারি এই যুদ্ধ শেষ করা উচিত।”
সিএনএন সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, সোমবার ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক শেষ করার পর বেশির ভাগ ইউরোপীয় নেতা হোয়াইট হাউস থেকে বেরিয়ে তাঁদের গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। বাকিরা যাঁরা রয়েছেন তাঁরাও খুব শীঘ্রই বেরিয়ে যাবেন বলে জানা গিয়েছে।
সিএনএন সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, সোমবার জ়েলেনস্কি এবং অন্যান্য ইউরোপীয় নেতার সঙ্গে বৈঠকের মাঝেই রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ফোন করেন ট্রাম্প। জানা গিয়েছে, খানিক ক্ষণ বৈঠক থামিয়ে পুতিনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইউরোপীয় নেতাদের মধ্যে বৈঠক শেষ হয়েছে। তবে, এখনও পর্যন্ত কোনও রফাসূত্র মেলেনি।
বৈঠক শেষে জ়েলেনস্কি জানান, সোমবার হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে অস্ত্র কেনা নিয়ে আলোচনা হয়। ইউক্রেনের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে ইউরোপীয় তহবিল থেকে ৯০০০ কোটি ডলার তাদের দেওয়া হবে যাতে তারা আমেরিকা থেকে অস্ত্র কিনতে পারে। পাশাপাশি, জ়েলেনস্কির আরও একটি প্রস্তাব ছিল, ইউক্রেন যেই ড্রোন তৈরি করবে, তার মধ্যে কিছু আমেরিকাকে কিনতে হবে। তবে এ বিষয়ে এখনও কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। জ়েলেনস্কি জানান, আগামী ১০ দিনের মধ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানা যাবে।
জ়েলেনস্কি আরও জানান, ট্রাম্পের সঙ্গে ‘ভূমি বিনিময়’ প্রসঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা হয় তাঁর।
সোমবারের বৈঠকের পর, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশংসা করলেন ইউরোপীয় নেতারা। তাঁরা জানান, রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ থামাতে তৎপর ট্রাম্প।
ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি ট্রাম্পকে বলেন, “শান্তিচুক্তিকে সমর্থন করার অর্থ হল প্রথমে ইউক্রেনকে সমর্থন করতে হবে। আমরা যদি দু’দেশের মধ্যে শান্তি চাই এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে চাই, তা হলে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে তা করতে হবে। আমরা ইউক্রেনের পক্ষেই আছি।”
ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আলেকজ়ান্ডার স্টাব বলেন, “ইউরোপ এবং আমেরিকা ইউক্রেনকে সাহায্য করছে।”
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁ জানান ট্রাম্প, পুতিন এবং জ়েলেনস্কির বৈঠকে অন্তত এক জন ইউরোপীয় নেতাকে সামিল করানো উচিত বলে মনে করেন তিনি।
সোমবারের বৈঠকের পর ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমার জানান, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ইউক্রেন এবং ইউরোপের বৈঠকটি একটি ‘ঐতিহাসিক পদক্ষেপ’ হতে পারে।
বৈঠকের পরে জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রেডরিখ মার্জ় জানান, গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে চূড়ান্ত আলোচনার পথ খোলা রয়েছে। আলাস্কায় ট্রাম্প ও পুতিনের বৈঠকের পরেই সেই পথ খুলে গিয়েছিল। জ়েলনস্কির সঙ্গে এ দিনের বৈঠকের পরেও ‘শান্তি চুক্তি’ বিষয়ে চূড়ান্ত সমাধানের রাস্তা খোলা রইল। তিনি এও জানিয়েছেন, গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে সেই আলোচনার আগে ইউরোপ নেতারা যুদ্ধ বিরতি দেখতে চান। তাঁর মত, সকলে হয়ে যুদ্ধ বিরতির জন্য কাজ করা উচিত।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি এবং ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে হোয়াইট হাউসে ছবি তোলেন।
ছবি: সংগৃহীত।
ইউরোপীয় নেতাদের একটি প্রতিনিধিদল হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করছে বৈঠকে বসেন এবং ইউক্রেনের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেন।
ভলোদিমির জ়েলেনস্কি জানান, ট্রাম্পের সঙ্গে ‘খুব ভাল’ বৈঠক হয়েছে তাঁর। তিনি বলেন, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে আমাদের খুব ভাল এবং গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে। আমরা খুবই সংবেদনশীল বিষয় এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে কথা বলেছি।”
এ দিনের বৈঠক হয়েছিল, ভূমি বিনিময় ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে। ইউক্রেন ও রাশিয়া শান্তি চুক্তির জন্য কী ভূমিকা পালন করবে তা নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়।
ট্রাম্পের দাবি, সম্মিলিত চুক্তির ফলে এমন একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছোনো হবে যেখানে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে ভবিষ্যতে আর কোনও আগ্রাসন হবে না। ট্রাম্পের আরও দাবি, এই বৈঠকের পরে ভূমি বিনিময়ের মাধ্যমে শান্তিচুক্তি ফলপ্রসূর পথে এগোবে।
এর পরে শুধু অপেক্ষা দুই রাষ্ট্রপ্রধান পুতিন ও জ়েলেনস্কি মুখোমুখি বৈঠকের। চূড়ান্ত সেই বৈঠকে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ‘শান্তিদূত’ মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
ডোনাল্ড ট্রাম্প জানান, তিনি আশা করছেন খবু শীঘ্রই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে একটি ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হবে।
জ়েলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক শেষ করেই যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার জন্য রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনকে ফোন করবেন তিনি। সোমবার হোয়াইট হাউসে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে এ কথা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। সেই সঙ্গে তাঁর তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য, ‘‘ইউরোপীয় দেশগুলির নিরাপত্তার স্বার্থে প্রয়োজনে যে কোনও সামরিক পদক্ষেপে নেতৃত্ব দিতে আমেরিকা প্রস্তুত।’’ ট্রাম্পের এই মন্তব্য আদতে ইউক্রেনে মার্কিন সেনা মোতায়েনের ইঙ্গিত কি না, তা নিয়ে জল্পনা দানা বেঁধেছে বৈঠক শুরুর আগেই।
সোমবার বৈঠকে জ়েলেনস্কি একটি কালো রঙের স্যুট পরেন। তা দেখে ট্রাম্প তাঁর প্রসংশা করেন। জ়েলেনস্কির উদ্দেশে ট্রাম্প বলেন, “ কালো রঙের ওই স্যুটে জ়েলেনস্কিকে চমৎকার দেখতে লাগছে।”
বৈঠকের আগেই জ়েলেনস্কি জানান, ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ শেষ করতে তিনি বৈঠকের মাধ্যমে কূটনৈতিক উপায় খুঁজে বার করতে প্রস্তুত।
ডোনাল্ড ট্রাম্প জানান, জ়েলেনস্কি এবং ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের ফলাফল যাই হোক না কেনও, ইউক্রেনের পাশে আমেরিকা থাকবে।
বৈঠকে বসার আগে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট তাঁর স্ত্রী ওলেনা ভোলোদিমিরিভনা জ়েলেনস্কার লেখা একটি চিঠি তুলে দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্টের হাতে। ট্রাম্প-পত্নী মেলানিয়ার উদ্দেশে ওই চিঠিটি লিখেছেন ইউক্রেনের ফার্স্ট লেডি ওলেনা। প্রসঙ্গত, গত ১৫ অগস্ট আলাস্কায় বৈঠকের সময় স্বামী ডোনাল্ড ট্রাম্পের হাত দিয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে একটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন মেলানিয়া। সেই চিঠির বিষয়বস্তু সম্পর্কে খোলসা করে বলতে চায়নি হোয়াইট হাউস। তবে এটুকু জানা গিয়েছে, রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধের ফলে যে সমস্ত শিশুরা দুর্দশায় পড়েছে, তাদের কথা লিখেছিলেন মেলানিয়া। যুদ্ধের ভুক্তভোগী শিশুদের দিকে পুতিনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন তিনি।
রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধবিরতি নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনার জন্য হোয়াইট হাউসে পৌঁছলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি। হোয়াইট হাউসে তাঁকে স্বাগত জানালেন ট্রাম্প। ওভাল অফিসে ট্রাম্পের পাশের আসনে বসেছেন তিনি। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ওই ওভাল হাউসেই ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ের পরে উঠে গিয়েছিলেন জ়েলেনস্কি।
ট্রাম্প-জেলেনস্কি বৈঠকের আগে হোয়াইট হাউসে পৌঁছেছেন ইউরোপীয় নেতারা। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁ, ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মার এবং ইটালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি রয়েছেন তাঁদের মধ্যে। ট্রাম্প-জেলেনস্কি বৈঠকেও তাঁরা থাকতে পারেন বলে অনুমান।
হোয়াইট হাউসে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের আগে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি দাবি করলেন, রাশিয়াকে যুদ্ধবিরতিতে বাধ্য করার মতো শক্তি রয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্টের। সেই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘ইউক্রেনের নিরাপত্তার নিশ্চয়তায় বিষয়টি আমার কাছে আলোচনায় অগ্রাধিকার পাবে। ইউক্রেনের জনগণ তাঁদের ভূমি এবং স্বাধীনতার জন্য লড়াই করছে।’’
ট্রাম্প-জ়েলেনস্কি বৈঠকের আগেও রুশ-ইউক্রেন সংঘর্ষ অব্যাহত। সোমবার ইউক্রেনের বায়ুসেনা দাবি করেছে, গত রাত থেকে রাজধানী কিভ-সহ বিভিন্ন শহরে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে পুতিনের সেনা। একই সঙ্গে ইউক্রেনের উপর ১৪০টি ড্রোন হামলাও চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ। অন্য দিকে, ক্রেমলিনের পাল্টা দাবি, ইউক্রেন তাদের পরমাণুকেন্দ্রের কাছে ড্রোন হামলার চেষ্টা করেছে। তবে পরমাণুকেন্দ্রের কোনও ক্ষতি হয়নি। পরিস্থিতি বলছে, গত দু’মাসে রুশ ফৌজের ধারাবাহিক অগ্রগতি হচ্ছে ডনেৎস্ক-ওল্ডবাস্ট এবং লুহানস্ক অঞ্চলে (যাদের একত্রে ডনবাস বলা হয়)। খেরসন এবং জ়াপোরিঝিয়া, খারকিভ, সুমি, মিকোলিভ এবং নিপ্রোপেট্রোভস্কের কিছু কিছু অঞ্চলেও পুতিনসেনার দাপটে পিছু হটছে ইউক্রেন সেনা। এই আবহে সোমবার যুদ্ধবিরতির শর্ত নিয়ে জ়েলেনস্কি কতটা অনড় থাকতে পারেন, তা নিয়ে জল্পনা রয়েছে।
গত ২৮ ফেব্রুয়ারি হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় দেখেছিল গোটা বিশ্ব। এর পর জ়েলেনস্কি বৈঠক অসমাপ্ত রেখেই ওয়াশিংটন ছেড়েছিলেন। আর ট্রাম্প? সরাসরি ইউক্রেনকে সমস্ত রকম সামরিক সহায়তা বন্ধের ঘোষণা করেছিলেন। তবে সেই দূরত্ব দূরে সরিয়ে তিন সপ্তাহ পরে যুদ্ধ পরিস্থিতি সম্পর্কে ট্রাম্পের সঙ্গে টেলিফোনে আলোচনা করেছিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। কিন্তু বরফ তাতে যে পুরোপুরি গলেনি, সোমবার দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের আগে ট্রাম্পের জোড়া শর্ত ঘোষণাতেই তা স্পষ্ট বলে মনে করছেন কূটনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনেকে। নেটোর সদস্যপদের আর্জি প্রত্যাখ্যাত হলে জ়েলেনস্কি সোমবার ট্রাম্পের কাছে ‘নিরাপত্তার বিকল্প আশ্বাস’ চাইতে পারেন ইউক্রেনের সংবাদমাধ্যম ইঙ্গিত দিয়েছে।
জ়েলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকের আগেই ইউক্রেনের দুই আবদার খারিজ করেছেন ট্রাম্প। সোমবার সকাল ৬টা ৪৭ মিনিটে (ভারতীয় সময় অনুসারে) সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। সেখানে তিনি জানিয়ে দেন, ২০১৪ সালে রাশিয়া অধিকৃত ইউক্রেনীয় ভূখণ্ড ক্রাইমিয়া আর ফেরত পাবে না ইউক্রেন। পাশাপাশি, ইউক্রেনের দীর্ঘ দিনের আর্জি খারিজ করে ট্রাম্প ঘোষণা করেন, আমেরিকার নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট নেটো-র অন্তর্ভুক্ত হতে পারবে না জ়েলেনস্কির দেশ। এই পরিস্থিতিতে ট্রাম্পের শর্ত মেনে সাড়ে তিন বছরের রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের বিরতি হয় কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে ইতিমধ্যেই।