Coronavirus

কড়াকড়ি ইইউ-এর, তথ্য গোপন করা হচ্ছে না, দাবি চিনের

এত দিন গৃহবন্দি থাকায় মানুষের শরীরে প্রাকৃতিক ভাবে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়নি। টিকাকরণও যথাযথ হয়নি। চিনের দাবি, ভয়াবহ সংক্রমণ ঘটলেও মৃত্যু নেই দেশে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০২৩ ০৬:৩৯
Share:

করোনাভাইরাসের তাণ্ডব চলছে। মৃতদেহের সারি শাংহাইয়ের একটি শেষকৃত্যের স্থানে। ছবি রয়টার্স।

চিনের বিরুদ্ধে কোভিড সংক্রান্ত তথ্য গোপন করার অভিযোগ বারবারই জানিয়ে এসেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। জবাবে আজ বেজিং দাবি করল, তারা গোড়া থেকেই দেশের করোনা পরিস্থিতি সম্পর্কে সব তথ্য প্রকাশ করছে।

Advertisement

চিনের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র মাও নিং বলেন, ‘‘যে দিন থেকে কোভিড শুরু হয়েছে, সেই দিন থেকে সম্পূর্ণ খোলাখুলি ভাবে স্বচ্ছতার সঙ্গে যাবতীয় সব তথ্য আন্তর্জাতিক সংগঠনকে জানিয়ে আসছে চিন। আমরা আশা করব, বিশ্বে অতিমারি রোধে হু সচিবালয় একটি বিজ্ঞানভিত্তিক, সঠিক ও সদর্থক ভূমিকা পালন করবে।’’ মাও নিং জানিয়েছেন, ৯ ডিসেম্বর থেকে এ পর্যন্ত হু-এর সঙ্গে তিনটি বৈঠক করেছে চিন। আরও একটি শীঘ্রই হবে। করোনা সংক্রান্ত তথ্যও দেওয়া হচ্ছে হু-কে।

গত তিন বছর ধরে ‘জ়িরো কোভিড’ নীতি বজায় ছিল চিন। গোটা বিশ্ব স্বাভাবিক জীবনে ফিরলেও চিন ফেরেনি। দেশ করোনা-শূন্য না হওয়া ইস্তক তারা নিয়মকানুন লঘু করতে নারাজ ছিল। লকডাউন, মাস্ক পরা, দূরত্ববিধি, সবই চালু ছিল। সম্প্রতি লকডাউন থাকাকালীন একটি বাড়িতে আগুন লাগে। কঠোর নিয়মের জেরে বাড়ি থেকে বেরোতে পারেননি বাসিন্দারা। আগুনে পুড়ে মারা যান তাঁরা। এর পরেই কোভিডবিধি প্রত্যাহারের দাবিতে চিন জুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। চাপের মুখে সরকার রাতারাতি সব নিয়ম তুলে দেয়। সঙ্গে সঙ্গে করোনা সংক্রমণ ঢেউ আছড়ে পড়ে চিনে। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, এত দিন গৃহবন্দি থাকায় মানুষের শরীরে প্রাকৃতিক ভাবে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়নি। টিকাকরণও যথাযথ হয়নি। চিনের দাবি, ভয়াবহ সংক্রমণ ঘটলেও মৃত্যু নেই দেশে। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়া ও বিভিন্ন সূত্রে সামনে আসা খবর সম্পূর্ণ অন্য ছবিই দেখিয়েছে। একটি সরকারি বৈঠকের রিপোর্ট সম্প্রতি ফাঁস হয়ে যায়। তাতেও দেখা গিয়েছে লক্ষ লক্ষ সংক্রমণের তথ্য গোপন করা হচ্ছে চিনে। এই রিপোর্ট ফাঁসের পরে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, দৈনিক সংক্রমণ ও মৃত্যুর খবর প্রকাশ করা হবে না। যদিও হু বারবার করে চাপ দিতে থাকে। তারা জানায়, অতিমারি নিয়ন্ত্রণে আনতে গেলে চিনের ভিতরের খবর জানা জরুরী। দিনে কত সংক্রমণ, কত জন হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন, কত জনের মৃত্যু হচ্ছে, রোগের চরিত্র কেমন— এই সব তথ্য বিশদে জানতে চায় হু। যদিও এত দিন পর্যন্ত সাড়া মেলেনি। শেষমেশ আজ প্রথম এই প্রসঙ্গে মুখ খুলেছে চিন। তবে বেজিং যা-ই বলুক, হু-কর্তা মাইক রায়ানের বক্তব্য, চিন সংক্রমিতের সংখ্যা, হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা কমিয়ে দেখাচ্ছে। তবে রায়ান এ-ও জানিয়েছেন, গত ১০ দিনে পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। চিন তাদের সঙ্গে আলোচনা ও তথ্য আদানপ্রদান বাড়িয়েছে।

Advertisement

সদ্য সীমান্ত খুলে দিয়েছে চিন। বিদেশ ভ্রমণের অনুমতি দিয়েছে দেশবাসীকে। কিন্তু বেশির ভাগ দেশ চিনা পর্যটকদের জন্য কড়াকড়ি শুরু করেছে। ভারত, আমেরিকা, তাইওয়ান, জাপানে প্রবেশের জন্য চিনা ব্যক্তিদের কোভিড নেগেটিভ হওয়া বাধ্যতামূলক। আজ ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)-ও একটি নিয়মাবলী প্রকাশ করেছে। তাতে বলা হয়েছে, চিনগামী বা চিন থেকে আসা বিমানের সব যাত্রীকে মাস্ক পরতে হবে। যাত্রীদের সকলকে বিমানে ওঠার আগে কোভিড নেগেটিভ রিপোর্ট দেখাতে হবে। তবে একই সঙ্গে ইইউ জানিয়েছে, তাদের প্রকাশ করা নিয়মাবলী মানা হবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত তারা সদস্য দেশগুলির উপরে ছেড়ে দিচ্ছে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত প্রতিটি সদস্য দেশ নিজেদের মতো করে নেবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement