নিলামে তিমির বমি, দাম উঠল ১১ লক্ষ!

মেঘ না চাইতেই জল! গন্ধেই বড়লোক হয়ে গেলেন ব্রিটেনের ওয়েলস এলাকার এক বাসিন্দা! সমুদ্র সৈকতে দৌড়চ্ছিলেন পোষ্য কুকুরটিকে নিয়ে। এটা অবশ্য তাঁর রোজকার রুটিন। দৌড়ের সময় অবিশ্বাস্য কিছু ঘটে না কোনও দিনই। এ দিনও ঘটবে বলে তিনি আশা করেননি।

Advertisement
সংবাদ সংস্থা  শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ১৬:৫৭
Share:

মেঘ না চাইতেই জল!

Advertisement

গন্ধেই বড়লোক হয়ে গেলেন ব্রিটেনের ওয়েলস এলাকার এক বাসিন্দা!

সমুদ্র সৈকতে দৌড়চ্ছিলেন পোষ্য কুকুরটিকে নিয়ে। এটা অবশ্য তাঁর রোজকার রুটিন। দৌড়ের সময় অবিশ্বাস্য কিছু ঘটে না কোনও দিনই। এ দিনও ঘটবে বলে তিনি আশা করেননি। কিন্তু, বাতাসে ভেসে এল ‘অমূল্য রতনে’র আঘ্রাণ। এক ধাক্কায় প্রায় ১৭ হাজার ডলার বেড়ে গেল সেই ভাগ্যবান ওয়েলসবাসীর সম্পত্তির পরিমাণ।

Advertisement

তিনি যত সামনে এগচ্ছিলেন, ততই যেন সুগন্ধি হয়ে উঠছিল বাতাস। কিছু দূর এগিয়েই সৈকতের বালিতে রাগবি বলের মতো কিছু পড়ে থাকতে দেখেন ওই ওয়েলসবাসী। তাঁর পোষ্য ততক্ষণে মহা উৎসাহে শুঁকতে শুরু করেছে কালো-হলদে ছোপ ছোপ ‘বল’টিকে। অচিরেই বোঝা যায় বস্তুটি রাগবি বল নয়। বেশ ভারীও। ১ কিলোগ্রামের বেশি ওজন। সুগন্ধি বস্তুটিকে চিনতে ভুল হয়নি সৌভাগ্যবানের। কুড়িয়ে নিয়েই সোজা হাজির হন এক নিলামের আখড়ায়। নিলামদার পরীক্ষা করে জানান, বস্তুটি খাঁটি অ্যাম্বারগ্রিজ। তিমি মাছের বমি। সমুদ্র সৈকতে সচরাচর এ ভাবে খুঁজে পাওয়া খুব সৌভাগ্যের বিষয়।

তিমি মাছের অন্ত্রে অ্যাম্বারগ্রিজ তৈরি হয়। জীববিজ্ঞানীরা মনে করেন, তিমির অন্ত্রের ভিতরে জ্বলন কমানোর জন্য এক ধরনের ক্ষরণ হয়। সেই ক্ষরণ থেকেই অ্যাম্বারগ্রিজের উৎপত্তি। কিছু দিন অন্তর অন্তর বমি বা মলের সঙ্গে তা তিমির শরীর থেকে বেরিয়ে আসে। অ্যাম্বারগ্রিজ হল পারফিউম তৈরির অপরিহার্য উপকরণ। পারফিউমে সুগন্ধের মাত্রা বাড়াতে এবং তাকে দীর্ঘক্ষণ স্থায়ী করতে অ্যাম্বারগ্রিজ ব্যবহার করা হয়। তাই বস্তুটির মূল্যও আকাশছোঁয়া। ওয়েলসের সৈকতে যেটি খুঁজে পাওয়া গিয়েছে, সেটি আবার অন্তত ৫০ বছর সমুদ্রের নীচে ছিল বলে পরীক্ষায় প্রকাশ।

ন্যূনতম দরটা বেশ চড়াই রেখেছিলেন নিলামদার। তাতেও নিলামে ৫০ জন অংশ নেন। শেষ পর্যন্ত অবশ্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা দাঁড়ায় দু’জনের মধ্যে। ফোনে দর হাঁকতে থাকা এক ব্যক্তি অবশেষে ১৬ হাজার ৭০০ ডলার দিয়ে তিমির বমির পিণ্ডটি নিজের জিম্মায় নিয়ে নেন। ভারতীয় মুদ্রায় যা ১১ লক্ষ টাকারও বেশি। নিলাম সংস্থা ক্রেতার নাম প্রকাশ করেনি। শুধু জানিয়েছে, ক্রেতা ব্যক্তিগত সংগ্রহে রাখার জন্যই ওই অ্যাম্বারগ্রিজ কিনেছেন।

কে অ্যাম্বারগ্রিজ কিনলেন, তা নিয়ে অবশ্য খুব মাথা ব্যাথা নেই সেই সৌভাগ্যবান ওয়েলসবাসীর, যিনি সৈকতে খুঁজে পেয়েছিলেন তিমির বমি। একেবারে পড়ে পাওয়া ১৪ আনার মতো ব্যাঙ্ক ব্যালান্সে যোগ হয়েছে ১৭ হাজার ডলারের কাছাকাছি। জীবন এখন সুগন্ধে ম ম! তাই বেশি ভেবে লাভ কী?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন