বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। —ফাইল চিত্র।
বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সোমবার রায় ঘোষণা করবে সে দেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। রায়ের সরাসরি সম্প্রচার হওয়ার কথাও রয়েছে। মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের তরফে হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের আবেদন জানানো হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জানিয়েছেন, ট্রাইব্যুনাল যা রায় দেবে, তা-ই মেনে নিতে হবে। হাসিনা তার বিরুদ্ধে কোনও আবেদন জানাতে পারবেন না। এই সংক্রান্ত নিয়মও ব্যাখ্যা করেছেন তিনি।
হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ মোট পাঁচটি। অভিযুক্তের তালিকায় হাসিনা ছাড়াও রয়েছেন দু’জন। এক, বাংলাদেশের প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এবং দুই, বাংলাদেশ পুলিশের প্রাক্তন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লা আল-মামুন। এঁদের মধ্যে হাসিনা এবং আসাদুজ্জামান প্রথম থেকেই পলাতক। সূত্রের খবর, হাসিনার মতো আসাদুজ্জামানও ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। তবে তৃতীয় অভিযুক্ত আল-মামুনকে গ্রেফতার করেছিল সে দেশের পুলিশ। তিনি রাজসাক্ষী হয়েছেন এবং ট্রাইব্যুনালে জবানবন্দি দিয়েছেন। হাসিনা মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন বলে রাষ্ট্রপক্ষ যে অভিযোগ তুলেছে, তাতে সায় দিয়েছেন আল-মামুন।
কী কী অভিযোগ
কেন আবেদন করা যাবে না
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী গাজি মোনাওয়ার জানিয়েছেন, হাসিনা পলাতক থাকায় তিনি ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে কোনও আবেদন জানাতে পারবেন না। সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী, ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা যায়। কিন্তু হাসিনা দেশে নেই। বাংলাদেশ পুলিশ এখনও তাঁকে হেফাজতে পায়নি। আইন বলছে, রায় ঘোষণার ৩০ দিনের মধ্যে তার বিরুদ্ধে আপিল করা যায়। কিন্তু আপিল করতে হলে অভিযুক্তকে আত্মসমর্পণ করতে হবে অথবা পুলিশকে তাঁকে গ্রেফতার করতে হবে। এ ক্ষেত্রে হাসিনা তাই আপিলের সুযোগ পাবেন না।
হাসিনা দেশের বাইরে থেকেই বেশ কয়েকটি সাক্ষাৎকারে দাবি করেছেন, জুলাই আন্দোলনে তিনি কাউকে সরাসরি হত্যার নির্দেশ দেননি। কিন্তু তাঁর এই বক্তব্য ট্রাইব্যুনালে গ্রহণযোগ্য নয়। আইনজীবী জানিয়েছেন, হাসিনা যদি সশরীরে আদালতে উপস্থিত হয়ে নিজের বক্তব্য জানাতেন, তা গ্রহণযোগ্য হত। কিন্তু পলাতক অবস্থায় গণমাধ্যমে তাঁর বক্তব্য আদালত গ্রাহ্য করতে পারে না। তা ছাড়া, হাসিনার কণ্ঠস্বরের রেকর্ড উন্মুক্ত আদালতে বাজিয়ে শোনানো হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।