অভিবাসনবিরোধী বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে উত্তাল ব্রিটেন। শনিবার লন্ডনের রাস্তায় এক লক্ষাধিক মানুষ মিছিল করেন। কর্মসূচির নাম দেওয়া হয়েছিল ‘ইউনাইট দ্য কিংডম’ (রাজত্ব আবার সংগঠিত করো)। বিক্ষোভকারীদের একাংশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয় পুলিশের। অভিবাসন-বিরোধী মিছিলের বিরুদ্ধে পাল্টা মিছিলের আয়োজন করা হয়েছিল। এই কর্মসূচির নাম দেওয়া হয় ‘মার্চ এগেনস্ট ফ্যাসিজ়ম’ (ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে মিছিল)। এই মিছিলে অবশ্য হাজার পাঁচেক মানুষ অংশ নিয়েছিলেন।
অভিবাসন-বিরোধী মিছিলের উদ্যোক্তা কে
মিছিলটির উদ্যোক্তা ছিলেন ব্রিটেনের অতি দক্ষিণপন্থী নেতা টমি রবিনসন। ‘ইংলিশ ডিফেন্স লিগ’ বলে একটি সংগঠন পরিচালনা করেন তিনি। সংগঠনটি ব্রিটেনে উগ্র জাতীয়বাদী এবং ইসলামবিরোধী বলেই পরিচিত। এর আগে বিভিন্ন বক্তৃতায় অভিবাসন সমস্যা নিয়ে ব্রিটিশদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করেছিলেন রবিনসন। দাবি করেছিলেন, এক সময় যে সমস্ত দেশ ইংরেজদের উপনিবেশ ছিল, এখন সে সব দেশের লোকজন অবলীলায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন লন্ডনের রাস্তায়! মিছিল থেকেও একই অভিযোগে সরব হন বিক্ষোভকারীরা।
বিক্ষোভকারীদের নিশানায় কোন কোন দেশ
রবিনসনরা নির্দিষ্ট কোনও দেশের নাম করেননি। তবে তাঁদের নিশানায় যে ব্রিটেনের উপনিবেশগুলিই, তা স্পষ্ট। মূলত দক্ষিণ এশিয়া এবং ইসলামপ্রধান দেশগুলির দিকেই ইঙ্গিত করতে চেয়েছেন রবিনসনরা।
বিতর্কের সূত্রপাত কিছু দিন আগের একটি গ্রেফতারিকে ঘিরে। ইথিওপিয়ার এক বাসিন্দার বিরুদ্ধে লন্ডনবাসী নাবালিকাকে যৌন হেনস্থার অভিযোগ উঠেছিল। বাইরে থেকে যাঁরা লন্ডনে যান, আইনি ছাড়পত্র না-পাওয়া পর্যন্ত তাঁরা যে সমস্ত হোটেলে থাকেন, সেগুলিকে ঘিরে তুমুল বিক্ষোভ দেখানো হয়েছিল ওই ঘটনার পর। শনিবারের বিক্ষোভের সঙ্গে তার মিল রয়েছে। বিক্ষোভকারীরা ইংল্যান্ডের লাল-সাদা পতাকা নিয়ে হেঁটেছেন দীর্ঘ পথ। স্লোগান তুলেছেন, ‘আমাদের দেশ ফিরিয়ে দাও’, ‘আমরা আমাদের দেশ ফিরে পেতে চাই’, ‘ওদের বাড়ি পাঠাও’, ‘আমাদের সন্তানদের বাঁচাও’। বিপক্ষের মিছিল থেকে আবার স্লোগান ওঠে, ‘শরণার্থীরা স্বাগত, অতি দক্ষিণপন্থা নিপাত যাক’, ‘রুখে দাঁড়াও, লড়াই করো’।