ভারতের এস-৩০০ ভিএম এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম নিয়ে ঘোর চিন্তায় পাকিস্তান। আকাশপথে যে কোনও হামলা প্রতিরোধ করার জন্য রাশিয়ার কাছ থেকে এস-৩০০ ভিএম আগেই কিনেছে ভারত। ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর অন্তর্ভুক্তও হয়ে গিয়েছে এই ক্ষেপণাস্ত্র নির্ভর আকাশসীমা সুরক্ষা ব্যবস্থা। কিন্তু কোন কোন কম্যান্ডে ভারত এই এস-৩০০ ভিএম মোতায়েন করেছে, তা জানতে পারেনি ইসলামাবাদ। পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সংক্রান্ত সুপরিচিত ওয়েবসাইট ‘পাকিস্তান ডিফেন্স’-এ তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সদ্যসমাপ্ত রাশিয়া সফরে এস-৪০০ ট্রায়াম্ফ কেনার ব্যাপারে কথা হবে বলে শোনা গিয়েছিল। মোদী-পুতিনের মধ্যে সে বিষয়ে কথা হয়েছে কি না, তা নিয়ে রহস্য রয়ে গিয়েছে। কিন্তু যে এস-৩০০ ভিএম এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ভারত আগেই কিনে রেখেছে রাশিয়ার কাছ থেকে, তা নিয়ে পাকিস্তানের দুশ্চিন্তা কিছুতেই যাচ্ছে না।
এস-৩০০ ভিএম এমন এক আকাশসীমা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, যা এক সঙ্গে ২৪টি টার্গেটে আঘাত হানতে সক্ষম। এস-৪০০ ট্রায়াম্ফের মতোই এস-৩০০ ভিএম-ও যুদ্ধবিমান, ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলা প্রতিরোধ করতে সক্ষম। প্রতিপক্ষের সেনা বা যুদ্ধবিমান অনেক সময় ইলেকট্রনিক কাউন্টারমেজার বা ইসিএম পদ্ধতি ব্যবহার করে রেডারকে ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু এস-৩০০ ভিএম এয়ার ডিফেন্স ব্যাটারির রেডার এতই শক্তিশালী যে ইসিএম ব্যবহার করেও তাকে ধোঁকা দেওয়া যায় না। প্রতিপক্ষের ক্ষেপণাস্ত্র বা যুদ্ধবিমান ঠিক কোথায় হামলা চালাতে চলেছে বা কোন পথে ধেয়ে আসছে, এস-৩০০ ভিএম তা নিখুঁতভাবে ধরে ফেলে। এই এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমের পাল্লা প্রায় ২৫০ কিলোমিটার। অর্থাৎ প্রতিপক্ষের ক্ষেপণাস্ত্র ভারতীয় আকাশসীমায় ঢোকার ২৫০ কিলোমিটার আগে শূন্যেই তাকে ধ্বংস করতে সক্ষম এস-৩০০ ভিএম।
আরও পড়ুন:
এস-৪০০ ট্রায়াম্ফ পেলে কী লাভ হবে ভারতের?
ভারত রাশিয়ার কাছ থেকে এস-৩০০ ভিএম-এর মোট ৬টি ইউনিট কিনেছে বলে বিশেষ সূত্রের খবর। ২০১৪-র নভেম্বরে তা সশস্ত্র বাহিনীর হাতে তুলেও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এত গোপনে তা করা হয়েছে যে প্রতিবেশীরা জানতে পারেনি সেনা বা বিমানবাহিনীর কোন কোন কম্যান্ডের হাতে তা তুলে দেওয়া হয়েছে। পাকিস্তান চিন্তিত ভারতের ওয়েস্টার্ন কম্যান্ডকে নিয়ে। ‘পাকিস্তান ডিফেন্স’ নামের ওয়েবসাইটের ‘ইন্ডিয়া ফোরাম’ বিভাগে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, ‘‘ভারতীয় বায়ুসেনা কি পশ্চিম সীমান্তে এস-৩০০ মোতায়েন করেছে?’’
ভারত নিজের দেশের পশ্চিম সীমান্তে যদি এস-৩০০ ভিএম মোতায়েন করে থাকে, তা হলে পাকিস্তানের বড় বিমানঘাঁটিগুলির অধিকাংশের জন্যই তা অশনি সঙ্কেত। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি কখনও যদি তৈরি হয়, তা হলে পাক বিমানঘাঁটি থেকে যুদ্ধবিমান ওড়ার অল্পক্ষণের মধ্যেই তা এস-৩০০ ভিএম-এর কালান্তক আঘাতের শিকার হয়ে যাবে। সে কথা বুঝেই ভারতের এস-৩০০ ভিএম-এর অবস্থান জানার মরিয়া চেষ্টা করছে পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী। ‘পাকিস্তান ডিফেন্স’ ওয়েবসাইটে এস-৩০০ ভিএম নিয়ে তুমুল আলোচনাতেই প্রকাশ পেয়েছে ইসলামাবাদের উদ্বেগ। পাক ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লায় থাকা দিল্লি মুম্বইকে হামলা থেকে সুরক্ষিত রাখার জন্য ভারতের সশস্ত্র বাহিনী যে প্রস্তুত, তাও বুঝে গিয়েছে ইসলামাবাদ।