কম্যান্ডার উইলিয়াম ম্যাকর্যাভেন। —ফাইল চিত্র।
হোয়াইট হাউসে বসে অ্যাবটাবাদের পুরো অপারেশনটাই ‘লাইভ’ দেখেছিলেন বারাক ওবামা। মার্কিন প্রেসি়ডেন্টের নির্দেশে সে দিন ওসামা বিন লাদেনকে ‘খতম’ করেই পাকিস্তানের জঙ্গি ডেরা ছে়ড়ে বেরিয়েছিল বিতর্কিত মার্কিন নেভি সিল। সেই অভিযানের কম্যান্ডার উইলিয়াম ম্যাকর্যাভেনকে এ বার সুর চড়াতে শোনা গেল বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে। সিআইএ-র প্রাক্তন প্রধান জন ব্রেননের নিরাপত্তা সংক্রান্ত ছাড়পত্র কেন বাতিল করা হল, সেই প্রশ্ন তুলে তিনি কাঠগড়ায় দাঁড় করালেন ট্রাম্পের ‘প্রতিহিংসাপরায়ণ পাগলামি’কেও।
২০১৩ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত সিআইএ প্রধান ছিলেন ব্রেনন। মার্কিন আইন মোতাবেক, গণতন্ত্রের স্বার্থে অবসরের পরেও গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানেরা সরকারের থেকে গোপন তথ্য সংগ্রহ করতে পারেন এবং প্রয়োজনে যে কোনও জায়গায় যেতে পারেন। এটাই ‘সিকিউরিটি ক্লিয়ারেন্স’ বা নিরাপত্তা সংক্রান্ত ছাড়পত্র। ব্রেনন যে হেতু গোড়া থেকেই ট্রাম্পের কট্টর সমালোচক হিসেবে পরিচিত, বুধবার সেই কারণেই তাঁর এই ছাড়পত্র কে়ড়ে নেওয়া হয় বলে মনে করছেন অনেকে। ব্রেনন নিজেও এর শেষ দেখে ছা়ড়বেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন হোয়াইট হাউসকে। গত কাল তাঁর পাশে দাঁড়ালেন ম্যাকরাভেনও।
ব্রেননের সততা এবং কর্মদক্ষতার ভূয়সী প্রশংসা করে অবিলম্বে সেই ছা়ড়পত্র ফিরিয়ে দেওয়ার আর্জি জানান প্রাক্তন সিল-কম্যান্ডার। কাল এক মার্কিন সংবাদপত্রে প্রকাশিত খোলা চিঠিতে ম্যাকর্যাভেন বলেন, ‘‘ব্রেননের সততা, চারিত্রিক দৃঢ়তা প্রশ্নাতীত। তবু কিনা, ব্রেননেরই উপরেই কোপ পড়ল! প্রেসিডেন্টের সমালোচনার করার পরিণাম যদি এই হয়, তা হলে আমিও বাতিলের তালিকায় থাকলে ধন্য হতাম।’’
তবে যে ভাবে এই চিঠিতে তিনি প্রেসিডেন্টকে ‘নেতৃত্বের পাঠ’ দিয়েছেন, তাতে নড়ে বসেছে মার্কিন কূটনীতিকদের একটা বড় অংশ। অনেকেই বলছেন, এ বার এর খেসারত দিতে হবে ম্যাকর্যাভেনকেও। ট্রাম্পকে কার্যত কোণঠাসা করেই তিনি বলেন, ‘‘ভেবেছিলাম, দেশের প্রয়োজনে আপনি একদিন ঠিক যোগ্য নেতা হয়ে উঠবেন। দেশবাসীর কাছে নিজেই উদাহরণ তৈরি করবেন। যোগ্যকে মর্যাদা দেবেন। কিন্তু এর কোনওটাই আপনার মধ্যে দেখছি না। বরং এমন সব কাজ করছেন, যাতে গোটা বিশ্বের কাছে আমাদের দেশ ক্রমশ ছোট হয়ে যাচ্ছে। পরবর্তী প্রজন্মের কাছে লজ্জিত হচ্ছি আমরা নিজেরাও।’’
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে দেশে ভাঙন ধরানোর অভিযোগও তুলেছেন তিনি। সঙ্গে সতর্কবার্তাও— ‘‘ম্যাকার্থি-আমলের পাগলামি ঠেকাতে আমরাও তৈরি। যত দিন না আপনি যোগ্য হয়ে উঠছেন, আমরা সমালোচনা করবই।’’