ট্রাম্প-নীতির বিরুদ্ধে সরব মেয়েরা

তাঁরা সকলেই প্রায় মহিলা। এবং বেশির ভাগই শ্বেতাঙ্গ। অনেকেই স্প্যানিশ বলতে পারেন না। তবু ভাঙা ভাঙা স্প্যানিশেই স্লোগান তুলছেন তাঁরা। প্রায় কেউই আগে কখনও গ্রেফতার হননি। কিন্তু জেনেই এসেছেন, গ্রেফতার হতে পারেন।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০১৮ ০৩:৪৪
Share:

দুই মুখ: বিক্ষোভে সদ্যোজাতকে কোলে নিয়ে ডেমোক্র্যাট সেনেটর ট্যামি ডাকওয়ার্থ।

দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসেছেন তাঁরা। বিমানে বা বাসে চেপে। কেউ রাত কাটিয়েছেন বন্ধুর বাড়িতে। কেউ বা কোনও গির্জায়। সকলের উদ্দেশ্য একটাই— বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনে বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেবেন।

Advertisement

তাঁরা সকলেই প্রায় মহিলা। এবং বেশির ভাগই শ্বেতাঙ্গ। অনেকেই স্প্যানিশ বলতে পারেন না। তবু ভাঙা ভাঙা স্প্যানিশেই স্লোগান তুলছেন তাঁরা। প্রায় কেউই আগে কখনও গ্রেফতার হননি। কিন্তু জেনেই এসেছেন, গ্রেফতার হতে পারেন।

বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনের ‘হার্ট বিল্ডিং’-এ জড়ো হয়েছিলেন কয়েক হাজার মহিলা। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসন নীতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাতে। বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ছিলেন একাধিক ডেমোক্র্যাট সেনেটর। ভারতীয় বংশোদ্ভূত ডেমোক্র্যাট সেনেটর প্রমিলা জয়পাল, অভিনেত্রী সুসান সারানডন-সহ সাড়ে পাঁচশোরও বেশি বিক্ষোভকারীকে ‘বেআইনি বিক্ষোভ’-এ সামিল হওয়ার অপরাধে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে অবশ্য তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

Advertisement

‘‘আমার দু’টি বাচ্চা,’’ বলছিলেন ভিক্টোরিয়া ফ্যারিস। ‘‘কিন্তু আমাদের গায়ের রং তো সাদা। বেশ কয়েক প্রজন্ম ধরে এ দেশেই রয়েছি। ফলে এ ধরনের শরণার্থী নীতির শিকার আমরা কখনওই হব না বলে মনে হয়। কিন্তু এক জন মায়ের কাছ থেকে যখন তার বাচ্চাদের কেড়ে নেওয়া হয়, তখন তার মনের কেমন অবস্থা হয়, সেটা তো বুঝতে পারি। তাই চুপ করে বাড়িতে বসে থাকতে পারিনি।’’

অভিনেত্রী সুসান সারানডন। ওয়াশিংটনে।

বৃহস্পতিবার সকালে ‘ফ্রিডম প্লাজ়া’র সামনে জড়ো হন বিক্ষোভকারীরা। হাতে ট্রাম্পের ‘জ়িরো টলারেন্স’ নীতির বিরোধিতা করে নানা পোস্টার। যাঁদের হাতে পোস্টার নেই তাঁরা হাতের তেলোতে লিখে রেখেছেন ‘উই কেয়ার’। কয়েক দিন আগেই ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প শরণার্থী শিশুদের শিবিরে গিয়েছিলেন ‘আই রিয়্যালি ডোন্ট কেয়ার, ডু ইউ’ লেখা এক জ্যাকেট পরে। তাঁকেই বিদ্রূপ করে বিক্ষোভকারীদের এই হাত-বার্তা। ‘ফ্রিডম প্লাজ়া’ থেকে হাঁটতে শুরু করেন বিক্ষোভকারী, মুখে স্প্যানিশ ভাষায় স্লোগান এবং গান। যে হেতু বেশির ভাগ শরণার্থী স্প্যানিশভাষী, তাই সচেতন ভাবেই প্রতিবাদের এই ভাষা বেছে নিয়েছিলেন তাঁরা। ‘হার্ট বিল্ডিং’-এ যাওয়ার পথে পড়ে ট্রাম্প ইন্টারন্যাশনাল হোটেল। সেখানে আরও জোরদার হয়ে বিক্ষোভের স্বর। ‘শিশুরা কোথায়’ ধ্বনি তোলেন বিক্ষোভকারীরা।

মাত্র কয়েক দিন বয়সি শিশুকে সঙ্গে নিয়ে বিক্ষোভে সামিল হয়েছিলেন ডেমোক্র্যাট সেনেটর ট্যামি ডাকওয়ার্থ। ছিলেন অভিনেত্রী, ৭১ বছর বয়সি সুসান সারানডনও। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিলারি ক্লিন্টনের বিরোধিতা করে তখন অনেকের সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন সারানডন। এ দিন বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে গ্রেফতার হওয়ার সময়ে তিনি টুইট করেন, ‘‘মেয়েদের এই বিক্ষোভে সামিল হতে পেরে অভিভূত। এরই নাম গণতন্ত্র।’’

ছবি: রয়টার্স।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন