ওপ্রা উইনফ্রে, বিল গেটস, বারাক ওবামা, কিংবা লিওনেল মেসি।
বিনোদন জগৎ থেকে রাজনীতি কিংবা খেলার দুনিয়ার এই তাবড় নামেদের সাফল্য নিয়ে কোনও প্রশ্ন নেই। যেমন বলতে দ্বিধা নেই, সবটাই এঁদের কাছে ‘বাঁ হাতের খেলা’!
পৃথিবীর জনসংখ্যার মাত্র ১০ থেকে ১৩ শতাংশ মানুষ বাঁ-হাতি। তাঁদের জন্য একটি বিশেষ দিনও রয়েছে ক্যালেন্ডারে। ১৩ অগস্ট ‘আন্তর্জাতিক বাঁ-হাতি দিবস’। ইতিহাসের এমন উল্লেখযোগ্য বাঁ-হাতি নাম অনেক— অ্যারিস্টটল, মোৎজ়ার্ট, লিওনার্দো দা ভিঞ্চি, মেরি কুরি, মার্ক টোয়েন। আর এখনের মধ্যে জুলিয়া রবার্টস, অ্যাঞ্জেলিনা জোলি থেকে মার্ক জ়াকারবার্গ তো রয়েইছেন।
বাঁ-হাতি হওয়া নিয়ে আগেকার দিনে ভালই ছুতমার্গ ছিল। এমনও মনে করা হত, মস্তিষ্কের সমস্যা থেকে হয়তো বাঁ-হাতি হয়েছে। ডানপন্থী দুনিয়ায় ভাল চোখে দেখা হত না বিষয়টিকে। শোনা যায়, ‘লেফট’ ও ‘সিনিস্টার’ (অশুভ)— দু’টি শব্দের ল্যাটিন উৎপত্তি একই। ইদানীং কালে অবশ্য সে-সব সংস্কার অনেকটাই কমেছে। বরং উল্টো কথাও প্রায়শই শোনা যায়— বাঁ-হাতিদের বুদ্ধি, প্রতিভা নাকি বাকিদের থেকে একটু বেশি। যদিও সমীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রতি দশ জনের মধ্যে এক জনেরই বুদ্ধিমত্তা, বিশেষ করে গণিতের দক্ষতা বেশি হয়। লোকে যাকে ‘জিনিয়াস’ বলে আর কী। এখন এর সঙ্গে হাতের যোগ বলতে আসলে মস্তিষ্কের কারসাজি। মানুষের শরীরের বাঁ দিকে কাজকর্ম পরিচালনা করে মস্তিষ্কের ডান দিক। আর দেহের ডান দিকের কাজ করে মস্তিষ্কের বাঁ দিক। স্বাভাবিক ভাবেই তাই বাঁ-হাতিদের মস্তিষ্কের ডান হেমিস্ফিয়ার বেশি সচল। যা সৃষ্টিশীলতা, গাণিতিক হিসেবনিকেশ, বিচারবুদ্ধির সঙ্গে সম্পর্কিত বলে মনে করেন গবেষকেরা।
সম্প্রতি এই নিয়ে একটি সমীক্ষা করেছিল ‘আইএফএল সায়েন্স’ নামে একটি সংস্থা। ২৩০০-রও বেশি পড়ুয়াদের অঙ্ক-পরীক্ষায় বসায় তারা। দেখা যায়, সাধারণ গণিতে সকলেই কমবেশি এক। কিন্তু কঠিন অঙ্কে বাঁ-হাতিদের পারফরম্যান্স অসাধারণ। যাকে সত্যিই বলে— বাঁ হাতের খেলা!