মঁ ব্লাঁ-তে উদ্ধার হওয়া সেই হাত।
পাহাড়-পর্বতের দুর্গম অঞ্চলে দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানের খোঁজ চালানোই তাঁর নেশা। সেই নেশাই তাঁকে টেনে নিয়ে গিয়েছিল ফ্রেঞ্চ আল্পস-এর মঁ ব্লাঁ-তে। হারিয়ে যাওয়া বিমানের ধ্বংসাবশেষের খোঁজে বছরের পর বছর ধরে সেখানে অনুসন্ধান চালাচ্ছেন তিনি, ড্যানিয়েল রশে। আর এ ভাবেই তিনি খুঁজে পেলেন অর্ধ শতক আগে হারিয়ে যাওয়া এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিমানের ধ্বংসাবশেষের। অন্তত তেমনটাই দাবি রশের।
আরও পড়ুন: পানামা-পাঁকে পদচ্যুত পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ
গত বৃহস্পতিবারে মঁ ব্লাঁ-র বসম হিমবাহে খোঁজ চালাচ্ছিলেন রশে। হঠাত্ই তাঁর চোখে পড়ে একটি কাটা হাত এবং পায়ের উপরের অংশের। সংবাদ সংস্থা এএফপি-কে তিনি জানান, মঁ ব্লাঁ-তে তিনি দীর্ঘ দিন ধরেই অনুসন্ধান চালাচ্ছেন, কিন্তু এই প্রথম কোনও মানুষের দেহাবশেষ খুঁজে পেলেন। প্রাথমিক ভাবে সেই দেহাবশেষ দেখে তাঁর মনে হয়েছে, সেগুলো কোনও মহিলার হতে পারে। রশে সঙ্গে সঙ্গে চামোনিক্স উপত্যকার জরুরি পরিষেবায় ফোন করে বিষয়টি জানান। তাঁরা সেই দেহাবশেষ উদ্ধার করে নিয়ে যান। পরে সেগুলো পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। স্টিফেন বোজন নামে স্থানীয় এক প্রশাসনিক আধিকারিক জানিয়েছেন, প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে এই দেহাবশেষ একই ব্যক্তির নয়।
উদ্ধার হওয়া পায়ের উপরের অংশ।
১৯৫০ সালে এই মঁ ব্লাঁ-তে ৪৮ জন যাত্রী নিয়ে ভেঙে পড়েছিল এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিমান। ঠিক তার ১৬ বছর পর অর্থাত্ ১৯৬৬-তেও এয়ার ইন্ডিয়ার আরও একটি বোয়িং ১১৭ জন যাত্রী নিয়ে হারিয়ে যায় এই অঞ্চলেই। এই দু’টি দুর্ঘটনার পর ৫০ বছরেরও বেশি সময় কেটে গিয়েছে। এত দিন কোনও হদিশই পাওয়া যায়নি ওই দুই বিমানের নিখোঁজ যাত্রীদের। রশের মতে, ১৯৬৬-র দুর্ঘটনায় নিখোঁজ যাত্রীদের দেহাবশেষ হতে পারে এগুলি। উদ্ধারস্থলের অদূরে বোয়িং-এর একটি ভাঙা ইঞ্জিনও খুঁজে পেয়েছেন তিনি।
বিমানের ধ্বংসাবশেষ।
গত কয়েক দিন আগেই সুইস আল্পসের ডায়াবলার্তিস ম্যাসিফে এক দম্পতির দেহ খুঁজে পাওয়া যায়। হিমবাহের কিছু অংশ গলে যাওয়াতেই ওই দেহ দুটো বেরিয়ে আসে। ডিএনএ পরীক্ষা করে দেখা যায়, দেহ দু’টি হল বছর চল্লিশের মার্সেলিন ডুমোলিন এবং তাঁর স্ত্রী ফ্র্যান্সিনের। যাঁরা ৭৫ বছর আগে আল্পসে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন।
ছবি: এএফপি।