আইএসের হাতে বন্দি আরও ১ বাংলাদেশি

এক নয়, দুই। লিবিয়ার আল গানি তেলের খনি থেকে যে ন’জন বিদেশিকে আইএস জঙ্গিরা বন্দি করেছিল, তাঁদের মধ্যে দু’জন বাংলাদেশের নাগরিক বলে মঙ্গলবার জানাল সে দেশের বিদেশ মন্ত্রক। গত কাল জানা গিয়েছিল, ওই বন্দিদের মধ্যে এক জন বাংলাদেশি। এ দিন জানা গিয়েছে, অপহৃত দ্বিতীয় বাসিন্দার নাম মহম্মদ আনওয়ার হোসেন।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

বাগদাদ শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০১৫ ০২:৪৬
Share:

এক নয়, দুই। লিবিয়ার আল গানি তেলের খনি থেকে যে ন’জন বিদেশিকে আইএস জঙ্গিরা বন্দি করেছিল, তাঁদের মধ্যে দু’জন বাংলাদেশের নাগরিক বলে মঙ্গলবার জানাল সে দেশের বিদেশ মন্ত্রক। গত কাল জানা গিয়েছিল, ওই বন্দিদের মধ্যে এক জন বাংলাদেশি। এ দিন জানা গিয়েছে, অপহৃত দ্বিতীয় বাসিন্দার নাম মহম্মদ আনওয়ার হোসেন। তাঁকে প্রথমে সুদানের বাসিন্দা ভাবা হলেও পরে জানা যায় আনওয়ার বাংলাদেশের নোয়াখালির বাসিন্দা। কর্মসূত্রে লিবিয়ায় ছিলেন তিনি।

Advertisement

আইএস জঙ্গিরা গত শুক্রবার লিবিয়ার সিরাত শহরের দক্ষিণে আল গানি তেলের খনিতে হামলা চালিয়ে ১১ জন নিরাপত্তারক্ষীকে মেরে ওই ন’জন বিদেশিকে অপহরণ করে। তবে পরে নিরাপত্তা বাহিনী খনির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। জানা যায়, অপহৃতদের মধ্যে বাংলাদেশ ছাড়াও চেক প্রজাতন্ত্র, অস্ট্রিয়া, ও ফিলিপিন্সের নাগরিকরা রয়েছেন। এর আগে বিদেশিদের অপহরণ করে তাঁদের প্রাণের বিনিময়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ দাবি করার ইতিহাস রয়েছে আইএসের। দাবিমতো পণ না মেলায় মুণ্ডচ্ছেদের নজিরও রয়েছে ভূরি ভূরি। এ বারের অপহরণও কি একই উদ্দেশ্যে? স্পষ্ট নয়।

তবে এটা স্পষ্ট যে কোনও পরিস্থিতিতেই তাণ্ডব থামাতে রাজি নয় আইএস। এ দিনও মুণ্ডচ্ছেদের কয়েকটি ছবি ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। তাতে দেখা যাচ্ছে, প্রকাশ্য রাস্তায় চোখ বাঁধা অবস্থায় তিন জনকে মাটিতে বসিয়ে মাথা কাটছে জঙ্গিরা। ছবির নীচে ওই তিন জনের ‘অপরাধে’র বর্ণনা দেওয়া। প্রথম দু’জন সমকামী সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ায় ও তৃতীয় জন ধর্মদ্রোহিতা করায় মৃত্যুদণ্ড পেয়েছে। তবে ছবিগুলির সত্যতা এখনও প্রমাণিত নয়। প্রাথমিক অনুমান, উত্তর ইরাকের নিনেভে প্রদেশে তোলা হয়েছে। কিন্তু ঠিক কোথায় ঘটনাটি ঘটেছে, তা জানা যায়নি।

Advertisement

সে তথ্যের থেকেও এখন বড় হয়ে দাঁড়িয়েছে অন্য একটি প্রশ্ন। তা হল ফেসবুক, টুইটারের মতো সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে ক্রমে ব্রাত্য হতে থাকা আইএস জঙ্গিরা কী ভাবে ওই নৃশংস ছবিগুলি ছড়িয়ে দিল? উত্তর নেই। তবে এই প্রশ্নের পাশাপাশি এ কথাও সত্যি যে প্রথম দিকে নিজেদের চরমপন্থী মতাদর্শ ছড়িয়ে দিতে আইএস জঙ্গিরা সোশ্যাল মিডিয়াকে যে ভাবে ব্যবহার করেছিল, তার তীব্রতা অনেকটাই কমে গিয়েছে। যার পিছনে অন্যতম ভূমিকা রয়েছে ওই সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট-কর্তৃপক্ষেরই। বহু আইএস জঙ্গির অ্যাকাউন্ট ইতিমধ্যেই বন্ধ করে দিয়েছে তারা। হিংসাত্মক ছবি ও বার্তা কোনও ভাবেই যাতে তাদের সাইটে না ছড়িয়ে পড়ে, সে দিকে নজর রাখছে টুইটার। এ সবের জেরে যে আইএস মতাদর্শ প্রচারে বাধা পড়ছে, তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে এ দিন। কারণ ফেসবুক ও টুইটারের উপর নির্ভরতা কমাতে এ বার নিজেদের সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট তৈরি করেছে আইএসপন্থীরা। রবিবারই সেটি চালু হয়। কিন্তু গত কাল তা বন্ধ ছিল। এখনও সঠিক ভাবে জানা যায়নি সেই সাইটের ঠিক ক’জন ‘ফলোয়ার’ রয়েছেন। শুধু এ টুকু জানা, যে নেট দুনিয়ায় প্রচারের কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব এ বার নিজেদের হাতেই পুরোপুরি তুলে নিয়েছে আইএস।

প্রচারের পাশাপাশি একই দ্রুততায় ঐতিহ্যবাহী জায়গা ধ্বংসের কাজও এগিয়ে চলেছে তারা। উত্তর ইরাকের খোরসাবাদ ধ্বংসের পর এ দিন লিবিয়ার একটি সুফি ধর্মস্থানও ধ্বংস করেছে তারা। সে ছবি প্রকাশিতও হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন