হাত পিছমোড়া করে বাঁধা। হাঁটু মুড়ে মোসুলের রাস্তায় বসে রয়েছেন এক কুর্দ সেনা। পিছনে দাঁড়িয়ে ইসলামিক স্টেটের এক জঙ্গি। আপাদমস্তক কালো কাপড়ে ঢাকা। মুখোশের আড়াল থেকে শুধু চোখদু’টোর দেখা মেলে। সে বাঁ হাতে চেপে ধরে বন্দির মাথা। আর ডান হাতে তর্জনী উঁচিয়ে হুমকি “ওহ্ ওবামা, এটা জেনে রাখুন..., এ বার আমরা আমেরিকায় পৌঁছে যাব। আপনার মুণ্ডচ্ছেদ করব হোয়াইট হাউসের মধ্যেই। আর তার পর গোটা দেশটাকে ধর্মান্তরিত করে ছাড়ব।”
ইউটিউবে ছাড়া আইএস-এর সর্বশেষ ভিডিও। পশ্চিমের উদ্দেশে এ হেন হুমকি বার্তা ঘোষণার পর ভিডিও-র শেষ দৃশ্যে সটান ছোরা চালিয়ে দিল ওই জঙ্গি। মাটিতে গড়িয়ে পড়ল বন্দির কাটা মাথা। চারপাশে তখন উল্লাসের কানফাটা আওয়াজ।
শুধু আমেরিকাই নয়, ফ্রান্স, বেলজিয়াম, কুর্দিস্তানের বিরুদ্ধেও তোপ দেগেছে আইএস। তাদের হুমকি, এ বার মার্কিন ও কুর্দ প্রেসিডেন্টকে হত্যা করবে তারা। আর সে সঙ্গে বিশ্বজুড়ে চলবে নিধন-যজ্ঞ।
ভিডিওয় অসংখ্য বাড়ির ধ্বংসস্তূপ, মোসুলবাসীর দেহ, জখম শিশুদের দেখিয়ে আইএস জঙ্গিরা দাবি করে, আমেরিকার মদতেই কুর্দ-পেশমেরগা বাহিনী এ ভাবে একের পর এক রকেট হামলা চালাচ্ছে মোসুলে। বিষগ্যাস ছড়িয়ে হত্যা করছে শ’য়ে শ’য়ে মানুষকে। হামলার জবাব দিতেই এই পথ বেছে নিয়েছে তারা।
জঙ্গিরা বলে, “ফ্রান্স আর তার বন্ধু দেশ বেলজিয়ামের জন্যেও এই একই বার্তা। আমরা একের পর এক গাড়িবোমা বিস্ফোরণ ঘটাব তোমাদের দেশে। একই ভাবে মাথা কেটে হত্যা করব তোমাদেরও।”
এর পরই ওই মুখোশধারী আইএস জঙ্গি এক কোপে মাথা কেটে ফেলে বন্দির। উল্লাসে ফেটে পড়ে আশপাশের জটলা। পরের দৃশ্যে ফের হুমকি কুর্দ প্রেসিডেন্ট মাসুদ বারজানির উদ্দেশে, “কুর্দ-পেশমেরগা বাহিনী যত বার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাবে মোসুলে, তত বারই একটা করে কাটা মাথা পৌঁছবে ওঁর কাছে।”
আইএস-এর এ হেন হুমকি বা ইন্টারনেটে ভিডিও প্রকাশ কোনওটাই নতুন নয়। গত একটা বছরে এমন একাধিক ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়েছে তারা। মাথা কেটে হত্যা করেছে মার্কিন সাংবাদিক জেমস ফোলি, ডেভিড হেনস, অ্যালান হেনিংকে। সম্প্রতি খবরের শিরোনামে রয়েছে আইএস-এর হাতে বন্দি জাপানের স্বেচ্ছাসেবী কর্মী হারুনা ইউকায়া। মাথার উপর রয়েছে সর্বসমক্ষে শিরোচ্ছেদের খাড়া। এই অবস্থায় ইসলামিক স্টেটের নয়া ভিডিও কপালে ভাঁজ ফেলেছে পশ্চিমের।