খবর মিলতেই উধাও ক্ষোভ, প্রাণে বেঁচে স্বস্তিতে ১০ জন

ফোনটা এসেছিল বেশ ক’বার। কিন্তু ধরতে পারেননি ক্রিস্টিয়ানাওয়াটি। তাই জানতেও পারেননি তাঁর ও তাঁর পরিবারের ১০ সদস্যের জন্য নির্ধারিত উড়ান বদলে আরও ভোরের একটি উড়ান দিয়েছে এয়ার এশিয়া। ফলে পুরনো সময়সূচি অনুযায়ীই বাকিদের নিয়ে সুরাবায়ার বিমানবন্দরে পৌঁছেছিলেন তিনি। তত ক্ষণে অবশ্য তাঁদের ছাড়াই রওনা দিয়েছে কিউ জেড এইট ফাইভ জিরো ওয়ান। প্রথমে ক্ষোভে ফেটে পড়েছিলেন ক্রিস্টিয়ানাওয়াটি। এখন অবশ্য সে জন্যই ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিচ্ছেন। এই ‘ভুলের’ জন্যই তো প্রাণ বেঁচেছে তাঁর ও তাঁর পরিবারের প্রত্যেকের।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

জাকার্তা শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০১৪ ০৩:২৫
Share:

ফোনটা এসেছিল বেশ ক’বার। কিন্তু ধরতে পারেননি ক্রিস্টিয়ানাওয়াটি। তাই জানতেও পারেননি তাঁর ও তাঁর পরিবারের ১০ সদস্যের জন্য নির্ধারিত উড়ান বদলে আরও ভোরের একটি উড়ান দিয়েছে এয়ার এশিয়া। ফলে পুরনো সময়সূচি অনুযায়ীই বাকিদের নিয়ে সুরাবায়ার বিমানবন্দরে পৌঁছেছিলেন তিনি। তত ক্ষণে অবশ্য তাঁদের ছাড়াই রওনা দিয়েছে কিউ জেড এইট ফাইভ জিরো ওয়ান। প্রথমে ক্ষোভে ফেটে পড়েছিলেন ক্রিস্টিয়ানাওয়াটি। এখন অবশ্য সে জন্যই ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিচ্ছেন। এই ‘ভুলের’ জন্যই তো প্রাণ বেঁচেছে তাঁর ও তাঁর পরিবারের প্রত্যেকের।

Advertisement

বছর ছত্রিশের ক্রিস্টিয়ানাওয়াটি ফি-বছরের মতো এ বারও নববর্ষের আনন্দ-উৎসব সিঙ্গাপুরে করবেন বলে ঠিক করেছিলেন। এয়ার এশিয়ার বিমানের টিকিট কেটেছিলেন। রবিবার সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ সে বিমান ছাড়ার কথা ছিল। “সেই অনুযায়ীই বিমানবন্দরে পৌঁছই। কিন্তু জানতে পারি, নির্ধারিত সূচি বদলে সকাল সাড়ে পাঁচটার উড়ানে আমাদের যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল”, বললেন ক্রিস্টিয়ানাওয়াটি। শুনে প্রথমে ভীষণ রেগে গিয়েছিলেন তাঁরা। এ ধরনের গাফিলতি কী ভাবে হতে পারে তা নিয়েও প্রতিবাদ জানাতে শুরু করে গোটা পরিবার। বিমানবন্দরের তরফে জানানো হয়, পরিবর্তিত সময়সূচির কথা বলতেই ১৫-১৬ ডিসেম্বর তাঁদের একাধিক বার ফোন করা হয়েছিল। পাঠানো হয়েছিল ই-মেলও। কিন্তু কোনওটাই নজরে আসেনি ক্রিস্টিয়ানাওয়াটিদের।

বিমান ধরতে না পারায় নতুন উড়ানের টিকিটের বন্দোবস্ত করতে শুরু করেছিলেন এয়ার এশিয়ার কর্মীরা। ঠিক তখনই আসে খবরটা। ক্রিস্টিয়ানাওয়াটির বয়ানে, “শুনলাম আগের যে বিমানে আমাদের জন্য কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা করেছিলেন, সেটা ভেঙে পড়েছে। সঙ্গে সঙ্গে সব টিকিট বাতিল করে দিলাম।”

Advertisement

প্রায় তাঁদের মতোই বরাতজোরে বেঁচেছেন আর এক তরুণ। নাম গোপন রেখেই তিনি জানিয়েছেন, এয়ার এশিয়ার ওই অভিশপ্ত বিমানে দুই বন্ধুর সঙ্গে তাঁরও সিঙ্গাপুর যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কিছু কাজ পড়ে যাওয়ায় সপ্তাহ দুয়েক আগেই টিকিট বাতিল করে দিয়েছিলেন। ইন্দোনেশিয়ার চ্যানেলকে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় তিনি আরও জানান, কিউ জেড এইট ফাইভ জিরো ওয়ান ওড়ার আগে ওই দুই বন্ধুর এক জন তাঁকে ফোন করে বলেছিলেন, “তোর সঙ্গে আবার নতুন বছরে দেখা হবে। চিরবিদায়!” কথাগুলো এখন কানে বাজছে তরুণের। বিমান নিখোঁজের খবর মেলা ইস্তক সুরাবায়ার বিমানবন্দরে বসে তিনি। যেন অলৌকিক কিছু ঘটে আর ফিরে আসেন বন্ধুরা।

সুরাবায়া ও সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি বিমানবন্দরে এখন বহু মানুষ অপেক্ষা করছেন। পরিজন, কাছের মানুষ, বন্ধুদের অপেক্ষা। চব্বিশ ঘণ্টার বেশি পেরিয়ে গেলেও যাঁদের কোনও খোঁজ নেই। আশঙ্কার মেঘ সকলের মনে। উঁকি দিচ্ছে এমএইচ ৩৭০-র স্মৃতিও। এ ভাবেই এক দিন হারিয়ে গিয়েছিল মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের ওই বোয়িং ৭৭৭ বিমানটিও। মাস পেরিয়ে বছর হতে চলল। আজও সে নিখোঁজ। হদিস নেই ২৩৯ জন সফরকারীর। এখন শুধু ‘মিরাকলের’ অপেক্ষা, ফিরে আসার আশা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন