চাবকে ধর্মের পাঠ, মুক্তি মেলার পরেও সিঁটিয়ে কুর্দ শিশুরা

দিনে অন্তত পাঁচ বার নমাজ পড়তেই হবে। ইচ্ছে না করলেও বার বার দেখতে হবে মুণ্ডচ্ছেদের ভিডিও। আর এর অন্যথা হলেই বেধড়ক মার। কথায় কথায় পিঠে পড়ত চাবুক। এমনকী জুতোপেটাও হয়েছে ঢের। ইসলামিক স্টেট অব ইরাক অ্যান্ড সিরিয়া (আইএসআইএস)-র ডেরায় গত ছ’মাস ধরে ঠিক এ রকমই অত্যাচারের শিকার প্রায় ১৫০ স্কুলপড়ুয়া। কারওরই বয়স ১৪-র বেশি নয়। পণবন্দি অবস্থা থেকে সম্প্রতি রেহাই মিললেও, দুঃস্বপ্ন এখনও তাড়া করে বেড়াচ্ছে এদের প্রত্যেককেই।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

বেইরুট শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০১৪ ০২:৩২
Share:

যুদ্ধ পরিস্থিতি কোবানে। সে দিকেই চোখ কুর্দ তরুণীর। ছবি: এপি

দিনে অন্তত পাঁচ বার নমাজ পড়তেই হবে। ইচ্ছে না করলেও বার বার দেখতে হবে মুণ্ডচ্ছেদের ভিডিও। আর এর অন্যথা হলেই বেধড়ক মার। কথায় কথায় পিঠে পড়ত চাবুক। এমনকী জুতোপেটাও হয়েছে ঢের। ইসলামিক স্টেট অব ইরাক অ্যান্ড সিরিয়া (আইএসআইএস)-র ডেরায় গত ছ’মাস ধরে ঠিক এ রকমই অত্যাচারের শিকার প্রায় ১৫০ স্কুলপড়ুয়া। কারওরই বয়স ১৪-র বেশি নয়। পণবন্দি অবস্থা থেকে সম্প্রতি রেহাই মিললেও, দুঃস্বপ্ন এখনও তাড়া করে বেড়াচ্ছে এদের প্রত্যেককেই। এক মানবাধিকার সংগঠনের সৌজন্যে মঙ্গলবার এমনই সব চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। এ দিনই জঙ্গিডেরা থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে ৯৩ কুর্দ নাগরিককে।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রের পাশাপাশি সংগঠনটিরও দাবি, গত ২৯ মে পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে আলেপ্পো থেকে এদের অপহরণ করে আইএস। টানা ছ’মাস নিজেদের ডেরায় রাখার পর ধাপে ধাপে ছেড়েও দেওয়া হয় এদের। সূত্রের দাবি, দেড়শো জনের মধ্যে শেষ পঁচিশ জনকে মুক্তি দেওয়া হয় ২৯ অক্টোবর। যদিও কোন শর্তে এদের ছাড়া হল, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। সদুত্তর মেলেনি সদ্য রেহাই পাওয়া বাচ্চাদের মধ্যে থেকেও। কেউ কেউ অবশ্য বলেছে, ‘ধর্মশিক্ষা’ শেষ হয়েছে বলেই তাদের ছেড়ে দেওয়া হল বলে জানিয়েছে জঙ্গিরা।

ব্রিটেনের অন্য একটি মানবাধিকার সংগঠন সূত্রে খবর, আজই সিরিয়া থেকে পণবন্দি ৯৩ জন কুর্দকে মুক্তি দিয়েছে আইএস। এঁদেরও মুক্তির শর্ত নিয়ে জল্পনা রয়েছে। সিরিয়া প্রশাসনের সঙ্গে জঙ্গিদের বন্দি হস্তান্তর সংক্রান্ত কোনও চুক্তি হয়েছে কি না, তা-ও জানা যায়নি। স্থানীয় সূত্রের দাবি, জঙ্গিদের হাত থেকে বাঁচতে গত ফেব্রুয়ারিতে উত্তর সিরিয়া থেকে ইরাকে পালানোর সময়ই পণবন্দি করা হয় ১৬০ জনকে। সিরিয়ার অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল ডেমোক্র্যাটিক ইউনিয়ন পার্টি প্রথম থেকেই আইএস বিরোধিতায় সরব। সেই দলেরই কর্মী-সমর্থক সন্দেহে এদের সে সময় পণবন্দি করা হয় বলে দাবি মানবাধিকার সংগঠনটির। পণবন্দি আরও ৭০ অবশ্য এখনও জঙ্গিডেরাতেই। এ দিকে, মানবাধিকার সংগঠনটির দাবি, উত্তর সিরিয়ার গুরুত্বপূর্ণ শহর কোবানের দখল নিতে আগের চেয়েও বেশি মরিয়া আইএস। হাজার হাজার কুর্দ প্রায় রোজই প্রাণে বাঁচতে তুরস্কে পাড়ি দিচ্ছেন বলে স্থানীয় প্রশাসন সূত্রের খবর।

Advertisement

অন্য দিকে ইরাকেরও বিস্তীর্ণ অংশের দখল নিতেও একই রকম একবগ্গা আইএস। সম্প্রতি এই জঙ্গিগোষ্ঠীর হাতে ৩০০-রও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন বলে দাবি ইরাক প্রশাসনের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন