দুই মেয়ের সঙ্গে ক্যাফেতে খোশমেজাজে। — গেটি ইমেজেস।
মার্কিন সাম্রাজ্য-পাট সামলে মেয়েদের সে ভাবে সময় দেওয়াই হয় না। শনিবার তাই সুযোগ হতেই সাশা-মালিয়াকে নিয়ে বেরিয়ে পড়েছিলেন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। সারা দিন প্রচুর ঘুরলেন। কখনও ঢুঁ মারলেন ক্যাফেতে তো কখনও বইয়ের দোকানে। শেষে বাড়ি ফিরলেন সলমন রুশদির লেখা-সহ একগুচ্ছ বই কিনে।
আসলে থ্যাঙ্কসগিভিং ডে উপলক্ষে ওবামা-পরিবারে বই কেনার একটা রেওয়াজ রয়েছে। প্রতি বারের মতো এ বছরও তাই বই কিনতে তিন জনে চলে যান উত্তর-পশ্চিম ওয়াশিংটনের একটা বইয়ের দোকানে। মোটেই তেমন ঝাঁ চকচকে বিশাল কোনও শো-রুম নয়। একেবারেই সাদামাটা ছোট্ট দোকান। খোদ প্রেসিডেন্ট এসেছেন, তা-ও দুই মেয়েকে নিয়ে! তড়িঘড়ি এগিয়ে যান ম্যানেজার অ্যানা থর্ন। ঘুরে ঘুরে দেখান তাঁদের বইয়ের সংগ্রহ।
সামনেই বড়দিন। মার্কিন মুলুকে এখন তাই ভরপুর উৎসবের আমেজ। সেই উপলক্ষে সাজানো হয়েছে বইয়ের দোকানটিকেও। হালকা আলো, ক্রিসমাস ট্রি, রঙচঙে কাপকেক...। সেই সঙ্গে দোকানের কর্মীদের বাড়তি পাওনা ছিল ওবামার আগমন। তাঁরা দারুণ উৎসাহী, খোদ প্রেসিডেন্ট এসেছেন বলে কথা। ওবামাও ঘুরে ফিরে সকলের সঙ্গে কথা বললেন... হাসিমুখে উৎসবের শুভেচ্ছা জানালেন সকলকে। বইও কিনলেন একটা-দু’টো নয়, একেবারে ন’টা। তার মধ্যে রয়েছে জোনাথন ফ্রানজেনের ‘পিওরিটি: এ নভেল’, সিন্থিয়া ভয়েটের ‘এলস্কে: এ নভেল অব দ্য কিংডম’ আবার ভারতীয় বংশোদ্ভূত লেখক সলমন রুশদির বই ‘টু ইয়ারস এইট মান্থস অ্যান্ড টোয়েন্টি-এইট নাইটস’। বেশ খানিক ক্ষণ বইপত্র নাড়াঘাঁটার পর তিন জনে বেরিয়ে পড়েন সেখান থেকে। ওবামার হাতে তখন একটা বড়সড় ছাইরঙা কাগজের ব্যাগ। দোকানের বাইরে ক্যামেরা তাক করেই ছিলেন চিত্রসাংবাদিকরা। ছুটির মেজাজে ক্যামেরা, সাংবাদিক... এ সব দেখে মোটেই বিরক্ত হলেন না প্রেসিডেন্ট। বরং হাসিমুখেই হাত নাড়লেন তাঁদের উদ্দেশে।
পরের গন্তব্য ছিল ‘প্লেস্যান্ট পপস ক্যাফে’। ওবামা সটান প্রশ্ন ছুড়ে দেন ক্যাফেটেরিয়ার কর্মীদের, ‘কোনটা খাওয়া যায় বলুন তো’? বছর সতেরোর মালিয়া কুকিজ আর একটা ক্রিম পপ নেয়। ১৪ বছরের সাশা নিয়েছিল ক্যানবেরি অ্যাপল। আর ওবামা নিজে নিয়েছিলেন ‘স্ট্রবেরি জিনজার লেমোনেড’। ক্যাফেটেরিয়া থেকে এটাই চেখে দেখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। পরে মানিব্যাগ থেকে ৯ ডলার বের করে কাউন্টারে দিতে দিতে বললেন, ‘‘বাহ্, বেশ সস্তাতেই ভাল খাওয়া হল! এটাই ছিল আমার ‘স্মল বিজনেস।’’ ২০১০ সালে একটি বেসরকারি ক্রেডিট কার্ড সংস্থা মার্কিন মুলুকে ‘স্মল বিজনেস’ শুরু করেছিল। যাতে উৎসবের মরসুমে অল্প খরচে বাসিন্দারা অনেক বিকিকিনি সারতে পারে। তার পর থেকে এটাই প্রথা হয়ে দাঁড়িয়েছে আমেরিকায়।
ওবামা যখন মেয়েদের নিয়ে বেরিয়েছিলেন, ফার্স্ট লেডি তখন ব্যস্ত ছিলেন ঘর সাজাতে। তাঁর দুই ভাই গ্লেন ও জে বাস্টার্ড বড়দিনে ১৮ ফুট লম্বা ক্রিসমাস ট্রি উপহার পাঠিয়েছেন দিদি মিশেলকে। তিনি বললেন, ‘‘দারুণ দেখতে তাই না! এটাই সাজানো হবে... এ বছর ক্রিসমাস ট্রি সেনাদের সম্মান জানাবে।’’