ভূমিকম্পে ধসে পড়েছে বাড়ি। বুধবার চিলিতে। ছবি: এএফপি।
রাতের অন্ধকারে মঙ্গলবার তীব্র ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল চিলির উত্তর উপকূল। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৮.২। ভূকম্পের পরই প্রশান্ত মহাসাগরে সুনামি সতর্কতা জারি হয়। তবে ১০ ঘণ্টা পর অবশ্য তা তুলে নেওয়া হয়েছে। চিলির অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী জানিয়েছেন, এক মহিলা-সহ ছ’জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে দু’জন হৃদ্রোগের শিকার।
২০১০ সালের ফেব্রুয়ারিতে ৮.৮ মাত্রার এক ভূমিকম্পে চিলিতে মারা গিয়েছিলেন পাঁচশোরও বেশি মানুষ। তাই সেই আতঙ্ক ফিরে আসতে বেশি দেরি হয়নি। এ বার কিছু বাড়িঘর ধসে পড়লেও তেমন বড় বিপর্যয়ের খবর এখনও পাওয়া যায়নি। আজ সকালে প্রেসিডেন্ট মিশেল বাসেলেট জানান, প্রাথমিক ধাক্কাটা সামলানো গিয়েছে। তাঁর আশা, দিনের আলোয় উদ্ধারকাজ শুরু হলে বাকি ছবিটা স্পষ্ট হবে।
ঘড়িতে তখন রাত পৌনে ন’টা। টানা দু’মিনিট ধরে তীব্র কম্পনে বাড়ি ছেড়ে রাস্তায় নেমে আসেন উত্তর চিলির বন্দর শহর ইকিকের বাসিন্দারা। কোথাও উল্টে পড়েছে রাস্তার আলো, ভেঙে গিয়েছে পথঘাট, কোথাও আবার গোটা এলাকা ডুবে গিয়েছে অন্ধকারে। ভূমিকম্প পরবর্তী কম্পনের ঠেলায় মাঝেমধ্যেই কেঁপে উঠছে পায়ের তলার মাটি। ঘরে ফেরা উচিত হবে কি না বুঝতে না পেরে তাই রাতটা রাস্তাতেই কোনও রকমে কাটিয়ে দিয়েছেন অনেক।
চিলির উত্তরাংশের এলাকাগুলি এমনিতেই ভূমিকম্পপ্রবণ। তাই ছোটখাটো কম্পনে এত দিনে গা-সওয়া হয়ে গিয়েছে এলাকাবাসীর। কিন্তু গত কালের কম্পনের মাত্রা ছিল অনেকটাই বেশি। তা ছাড়া সুনামি সতর্কতা জারি এবং উপকূলে দু’মিটার উঁচু ঢেউ আছড়ে পড়ায় অপেক্ষাকৃত উঁচু জায়গার খোঁজে রাস্তা দিয়ে উদ্ভ্রান্তের মতো দৌড়তে শুরু করেন লোকজন।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক সর্বেক্ষণ জানিয়েছে, কালকের কম্পনের উৎস ছিল ইকিক শহর থেকে ১০০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে, সমুদ্রতলের প্রায় কুড়ি কিলোমিটার নীচে। তাই শুধু চিলিই নয়, প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূল বরাবর দক্ষিণ আমেরিকার অন্য কয়েকটি দেশেও সুনামির আশঙ্কা করা হয়েছিল। তবে সেখানেও এর কোনও প্রভাব পড়েনি।