পুরু বরফের চাদরে ঢেকে গিয়েছে উত্তর ইংল্যান্ডের মার্সদেন। শনিবার। ছবি: এএফপি
প্রবল তুষার-ঝড় আর কনকনে ঠান্ডার জেরে বড়দিনের পর থেকেই বিপর্যস্ত গোটা ব্রিটেন। একের পর এক উড়ান, ট্রেন আর ফেরি বাতিলের খবরে জেরবার যাত্রীরাও। বিভিন্ন সড়কে জমে প্রচুর পরিমাণ বরফ। ফলে উৎসবের মরসুমে গাড়ি নিয়েও আপাতত বেরোতে পারছেন না ব্রিটেনবাসী। আবহাওয়া দফতর সতর্ক করে জানিয়েছে, আগামী দু’দিন তুষারপাত আরও বাড়বে।
স্কটল্যান্ড, উত্তর আয়ার্ল্যান্ড, ওয়েলস আর ইংল্যান্ডের উত্তর ভাগের অবস্থা সবচেয়ে শোচনীয়। ইংল্যান্ডের ইয়র্কশায়ারের লিড্স ব্র্যাডফোর্ড আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর আর লিভারপুলের জন লেনন বিমানবন্দর বহু ক্ষণের জন্য বন্ধ ছিল। ম্যানচেস্টার বিমানবন্দরেও প্রত্যেকটি উড়ান দেরিতে চলছে। ফলে বিমানবন্দরগুলিতে যাত্রীদের ভিড় সামলাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে কর্তৃপক্ষকে। লরা থর্নহিল নামে এক বিমানযাত্রী টুইট করেছেন, “ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিমানে বসে আসি। কেউ কোনও খবর দিচ্ছে না।”
ঝড়ের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে ফেরি চলাচলও। কেন্টের ডোভার বন্দর কর্তৃপক্ষ জানান, ইংলিশ চ্যানেলে ফেরি পরিবহণ ব্যবস্থা পুরোপুরি বন্ধ রাখা হয়েছে। খুব প্রয়োজন ছাড়া সাধারণ মানুষকে গাড়ি নিয়েও বেরোতে বারণ করছে প্রশাসন। শেফিল্ড থেকে লন্ডনগামী একটি বাসের সমস্ত যাত্রীকে কাল রাতে একটি গির্জায় আশ্রয় নিতে হয়েছে। এক যাত্রী জানান, দক্ষিণ ইয়র্কশায়ারের রাস্তায় এতটাই বরফ জমেছে যে বাস আর এগোতে পারেনি। কোনও উপায় না থাকায় প্রবল ঠান্ডায় গোটা রাতটা তাঁরা গির্জাতেই কাটিয়েছেন। স্ট্যাফোর্ডশায়ারের ট্র্যাফিক পুলিশ টুইটারে জানিয়েছে, “বরফের জন্য রাস্তার অবস্থা ভয়াবহ। যদি কেউ বেরোতেই চান, আজ রাতেই শুধু বেরোন। কারণ কাল থেকে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে চলেছে।”
গোদের উপর বিষ ফোঁড়ার মতো রেল চলাচল ব্যাহত হচ্ছে লন্ডন শহরে। কিঙ্গস ক্রস স্টেশনে মেরামতির কাজ চলছে বলে লন্ডন থেকে দেশের উত্তর ভাগে ট্রেন চলাচল পুরোপুরি বন্ধ। উড়ান বাতিল হচ্ছে, ফেরি বন্ধ। বন্ধ সড়কও। তার উপরে লন্ডন থেকে ট্রেনগুলিও ছাড়তে না পারায় প্রবল যাত্রী বিক্ষোভের মুখে পড়তে হচ্ছে রেল কর্তৃপক্ষকে। ছুটির মরসুমে প্রিয়জনের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়া বা পরিবার নিয়ে বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনাও বাতিল করছেন অনেকে আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, বর্ষশেষের রাতেই সব চেয়ে বেশি তুষারপাত হতে পারে ইংল্যান্ডে। কনকনে ঠান্ডা হাওয়া ও বরফের মধ্যেই লন্ডনবাসী নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে চলেছেন।