রেস্তোরাঁয় বান্ধবীর সঙ্গে রাতের খাবার খেয়ে হাঁটতে বেরিয়েছিলেন। সেই সময়ই খুন হলেন রাশিয়ার প্রাক্তন উপ-প্রধানমন্ত্রী এবং বিরোধী দলনেতা বরিস নেমস্তভ।
প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের অন্যতম সমালোচক হিসেবে পরিচিত নেমস্তভের উপর কাল মাঝ রাতে মস্কোর রাস্তায় হামলা চালায় এক অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতী। পুলিশ জানিয়েছে, নেমস্তভের পিঠে চার থেকে পাঁচ বার ছুরি চালিয়েছে হত্যাকারী। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগেই মৃত্যু হয় তাঁর। নেমস্তভের বান্ধবী, ২৩ বছরের ইউক্রেনীয় মডেল আনা দুরিত্স্কায়া অবশ্য অক্ষতই আছেন। পুলিশ জানিয়েছে, বছর পঞ্চান্নর নেমস্তভের উপর যে ভাবে হামলা হয়েছে, তা দেখে বোঝাই যাচ্ছে, বেশ কয়েক দিন ধরে তাঁর গতিবিধি নজর রাখা হচ্ছিল। কাল সুনসান রাস্তায় সুযোগ বুঝে হামলা চালায় ওই দুষ্কৃতী। নেমস্তভ এবং আনা যখন মস্কভা নদীর সেতুর উপর দিয়ে হাঁটছিলেন, ঠিক তখনই একটি সাদা গাড়ি করে আসে হামলাকারী।
নব্বইয়ের দশকে, প্রেসিডেন্ট বরিস ইয়েলৎসিনের আমলে দেশের প্রথম উপ-প্রধানমন্ত্রী ছিলেন নেমস্তভ। রাশিয়ার অর্থনৈতিক সংস্কারেও তাঁর বড়সড় ভূমিকা ছিল। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এই হামলার সমালোচনা করলেও বিরোধীরা অবশ্য তাঁর দিকেই আঙুল তুলছেন। আসলে ইউক্রেনের গৃহযুদ্ধে রুশ সরকারের হাত আছে বলে সরব হয়েছিলেন নেমস্তভ। রবিবার সরকার-বিরোধী এক বিক্ষোভে সামিল হওয়ার জন্য রাশিয়ার মানুষকে আহ্বানও জানিয়েছিলেন তিনি। তিনি যে খুন হতে পারেন, কিছু দিন আগে এক সাক্ষাৎকারে সে কথা নিজেই জানিয়েছিলেন নেমস্তভ। ফলে গোটা ঘটনায় পুতিনের হাত রয়েছে বলে স্বভাবতই সরব হয়েছেন বিরোধীরা। রুশ প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র অবশ্য সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, খুনি যাতে দ্রুত ধরা পড়ে তার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রেসিডেন্ট নিজে গোটা তদন্ত প্রক্রিয়া খতিয়ে দেখছেন।
গোটা ঘটনার সমালোচনা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও। রুশ সরকার যাতে দ্রুত ও স্বচ্ছ তদন্ত চালায়, তার দাবিও জানিয়েছেন তিনি। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট পেত্রো পোরোশেঙ্কো তাঁর ফেসবুক পেজে লিখেছেন, “রাশিয়া আর ইউক্রেনের মাঝে সেতু ছিলেন নেমস্তভ। এই হত্যা সব শেষ করে দিল। আমার মনে হয় এটা নিছকই দুর্ঘটনা নয়।”