কট্টর ক্যাথলিক দুনিয়ার প্রধান তিনি। তবু নিজে গোঁড়া নন। সে কথাই সোমবার ফের বোঝালেন পোপ ফ্রান্সিস। তাঁর মতে, ক্যাথলিক যাজকদের জন্য কঠোর সংযমী জীবন অত্যাবশ্যক। কিন্তু এই নিয়মের পরিবর্তনও হতে পারে। ঠিক যেমন ভাবে অন্য ধরনের কিছু গির্জা তাঁদের যাজকদের বিয়ের অনুমতি দেয়, তেমন ভাবেই ভবিষ্যতে ক্যাথলিক যাজকদের কাছেও বিয়ের সুযোগ থাকতে পারে। অন্তত তেমনই মনে করেন পোপ ফ্রান্সিস।
তবে ক্যাথলিক নিয়মের সঙ্গে পোপের এই মন্তব্য মোটেও খাপ খায় না। কারণ সেই নীতি অনুযায়ী, কোনও অবস্থাতেই বিয়ে বা যৌন সম্পর্ক তৈরি করতে পারবেন না যাজকেরা। গির্জাই হবে তাঁদের ধ্যানজ্ঞান, আর ধর্মই হবে তাঁদের সঙ্গী। তথ্য বলছে, এ নিয়ম অন্তত হাজার বছর পুরনো। এবং তা পালনও করেন বেশিরভাগ যাজক।
কিন্তু এ কথাও সত্যি যে এই নিয়ম একাধিক বার ভাঙা হয়েছে। ভ্যাটিকান থেকে শুরু করে বিভিন্ন ক্যাথলিক গির্জায় যাজকদের হাতে শিশুদের যৌন হেনস্থার অভিযোগ উঠেছে একাধিক বার। অনেকের ব্যাখ্যা, যাজক হিসেবে কঠোর সংযমী জীবন পালন করতে হয়। আর তাই বিকৃত ভাবে প্রকাশিত হয় যৌন তাড়না। কোপে পড়ে শিশুরা। অতএব তুলে দেওয়া হোক এই নিয়ম। যাজকদের জীবনে থাকুক যৌনতারও সুযোগ।
তবে ভ্যাটিকান কখনওই এ তত্ত্ব মানতে চায়নি। তাদের বক্তব্য, শিশুদের যৌন নিপীড়ন আসলে মানসিক রোগের প্রতিফলন। তার সঙ্গে এই সংযমের কোনও সম্পর্ক নেই। ফ্রান্সিস নিজেও অবশ্য তাই মনে করেন। কথায় কথায় গত কাল তিনি এ-ও জানিয়েছেন যে ব্যক্তিগত ভাবে এই নিয়ম তিনি তীব্র সমর্থন করেন। তাঁর আরও দাবি, এ হেন অনুশাসন ক্যাথলিক গির্জার কাছে বড় আশীর্বাদ।
কিন্তু একই সঙ্গে তাঁর মত, এই নিয়ম অনমনীয় নয়। পোপের বয়ানে, এ নিয়মেরও ‘পরিবর্তনের সুযোগ’ রয়েছে। তবে সংযম প্রশ্নে এই প্রথম যে এমন কথা পোপ বললেন তা নয়। এর আগেও বুয়েনস আইরেসের আর্চবিশপ থাকাকালীন একই ধরনের মন্তব্য করেছিলেন তিনি।
ক্যাথলিক দুনিয়ার প্রধান হওয়ার পর এমন মন্তব্য এই প্রথম। এ বার সেই দুনিয়ার বাসিন্দাদের কী প্রতিক্রিয়া হয়, সেটাই দেখার।