মহালয়া এ বছর আগামী ১৪ অক্টোবর। অমাবস্যা তিথিতে মহালয়া পালিত হয়। হিন্দু শাস্ত্রে মহালয়ার গুরুত্ব বিরাট। কিন্তু এ বছর দিনটার গুরুত্ব যেন আরও বেড়ে গিয়েছে!
মহালয়ায় তার আগের এক পক্ষকালের পিতৃপক্ষ সমাপ্ত হয়ে পরের এক পক্ষকালের দেবীপক্ষের সূচনা হয়। তিথিটা নির্দিষ্টই, অমাবস্যা। কিন্তু এবার দিনটাও পড়েছে শনিবার। শনিবারের অমাবস্যা এমনিতেই বাড়তি তাৎপর্যের। তার ওপর সেদিন এ বছরের শেষ সূর্যগ্রহণ।
মহালয়ার অমাবস্যাকে এমনিতে শাস্ত্র অনুযায়ী বলা হয়, পিতৃ অমাবস্যা। কারণ, এ দিন পিতৃপক্ষের শেষ দিন। দেবীপক্ষের আবাহন। কথিত আছে, পিতৃপক্ষের শেষ দিন বলে মহালয়ায় আমাদের পূর্বপুরুষেরা তাঁদের নিজেদের বংশধরদের কাছ থেকে অন্ন-জল গ্রহণ করতে মর্ত্যলোকে নেমে আসেন। বংশধরেরা তর্পণ অথবা পিন্ডদানের মাধ্যমে সেই কাজ সম্পন্ন করে। এমনকি যে কোনও কারণেই হোক, যে পূর্বপুরুষদের শ্রাদ্ধানুষ্ঠান হতে পারেনি, মহালয়ায় তাঁদের শ্রাদ্ধকর্মও সম্পন্ন করে অনেক বংশধর।
এ হেন মহালয়ায় এবার বিরল যোগ সৃষ্টি হয়েছে। মহালয়ার অমাবস্যা এ বার শনিবার পড়েছে, সঙ্গে সে দিন সূর্যগ্রহণ। এ সবের কারণে, এ বারের মহালয়া সর্বপিতৃ অমাবস্যা হতে চলেছে। দিনটা শনিবার পড়ায় অনেক শাস্ত্রজ্ঞ একে শনিশ্চরী অমাবস্যা বলছেন। আবার এ বারের মহালয়ার দিনটিকে পিতৃ অমাবস্যা, পিতৃ মোক্ষ অমাবস্যাও বলছেন কোনও কোনও শাস্ত্রীয় পন্ডিত।
এমন বিরল যোগের এবারের মহালয়ায় অমাবস্যা তিথিও সাধারণের তুলনায় দীর্ঘ। সর্বপিতৃ অমাবস্যা তিথি পড়বে ১৩ অক্টোবর শুক্রবার রাত ৯টা ৫১ মিনিটে। আর ছাড়বে শনিবার ১৪ অক্টোবর রাত ১১টা ২৫ মিনিটে।
সেজন্য তিথি অনুসারে ১৪ অক্টোবর দিনভর গঙ্গাঘাটে তর্পণ করা যাবে। পুরোহিত দিয়ে এক দল মানুষ গঙ্গায় তর্পণ করেন। আবার অনেকে বাড়িতে নিজেই তর্পণ করে পূর্বপুরুষদের উদ্দেশ্যে জল দেয়।
তার জন্য সকালে স্নান করে কাচা সাদা পোশাক পরে তর্পণ করতে হয়।
তারপর পূর্বপুরুষদের উদ্দেশ্যে পুরী, ক্ষীর, সবজি নিবেদন করতে হয়। এরপর ব্রাহ্মণদের সেই খাবার দিয়ে নিজে খেতে হয়। দুপুরের খাবারও বাড়ির সবাই মিলে খেতে হয় এদিন। খেতে বসার আগে ওই সব খাবার পূর্বপুরুষদের উদ্দেশ্যে নিবেদন করে তারপর নিজেদের খেতে হয়।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy