Kasba Death

দেওয়ালে লেখা সুইসাইড নোটে নাম, ঋণ পাইয়ে ‘কমিশন’ নেন! কসবায় গ্রেফতার আরও এক ‘দালাল’

কসবাকাণ্ডে প্রথমে সোমনাথের মামা এবং মামিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁদের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। দু’দিন আগে আরও এক ‘দালাল’কে গ্রেফতার করা হয়েছে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০২৫ ১৩:০০
Another accused arrested for helping man get loan in Haltu incident

তিন বছরের শিশুপুত্রের সঙ্গে কসবার সোমনাথ রায়। —ফাইল চিত্র।

কসবায় বাবা-মা এবং শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় আরও এক জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতের নাম ছিল ঘরের দেওয়ালে লেখা সুইসাইড নোটে। অভিযোগ, অটোচালক সোমনাথ রায়কে ঋণ পাইয়ে দিতে সাহায্য করেছিলেন ধৃত সোমশুভ্র মণ্ডল। তার পরিবর্তে নিজে ‘কমিশন’ নিয়েছিলেন। টাকার বিনিময়ে ১০ লক্ষ টাকার ঋণ তিনি পাইয়ে দিয়েছিলেন সোমনাথকে। কিছু দিন আগে সোমনাথ, তাঁর স্ত্রী সুজাতা গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেন। তাঁদের তিন বছরের সন্তান রুদ্রনীলের মৃতদেহ বাবার দেহের সঙ্গে কাপড় দিয়ে বাঁধা ছিল। ওই ঘরের দেওয়ালেই পেন্সিল দিয়ে লেখা সুইসাইড নোট মিলেছে।

Advertisement

কসবাকাণ্ডে প্রথমে সোমনাথের মামা এবং মামিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁদের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ সূত্রে খবর, সম্পত্তি নিয়ে মামা-মামির সঙ্গে বিবাদ ছিল সোমনাথদের। সুইসাইড নোটেও সেই বিবাদের কথা তাঁরা লিখে গিয়েছেন। এর পর দু’দিন আগে কসবার ঘটনায় তৃতীয় গ্রেফতারটি হয়। চঞ্চল মুখোপাধ্যায় নামের আরও এক ‘দালাল’কে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধেও সোমনাথদের ১০ লক্ষ টাকা ঋণ পাইয়ে দেওয়া এবং তা থেকে ‘কমিশন’ নেওয়ার অভিযোগ ছিল। একই অভিযোগে গ্রেফতার হলেন ২৪ বছরের সোমশুভ্র।

পুলিশ জানিয়েছে, শুক্রবার রাত ১২টার পর সোমশুভ্রকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুরের বাসিন্দা। শনিবার তাঁকে আলিপুরের আদালতে হাজির করানো হবে। সোমনাথকে একাধিক ঋণ পেতে সাহায্য করেছিলেন এই সোমশুভ্র। একটি ব্যাঙ্ক থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা, একটি সংস্থা থেকে ১ লক্ষ ৬২ হাজার টাকা, মোবাইলের একটি অ্যাপের মাধ্যমে দু’লক্ষ টাকা এবং আরও একটি সংস্থার কাছ থেকে দু’লক্ষ টাকা ঋণ পাওয়ার বন্দোবস্ত করে দিয়েছিলেন। বিনিময়ে প্রতিটি ঋণ থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ নিয়েছিলেন ‘কমিশন’ হিসাবে।

পুলিশ জানতে পেরেছে, পাহাড়প্রমাণ ঋণের বোঝা চেপে বসেছিল সোমনাথের মাথায়। তাঁর সন্তান শারীরিক সমস্যায় ভুগছিল। ফলে তার চিকিৎসার জন্যেও অনেক টাকা খরচ হত। অটো চালিয়ে এত খরচ জোগাড় করতে পারছিলেন না তিনি। সেই সঙ্গে ছিল সম্পত্তি নিয়ে বিবাদ। সংসার টানতে না-পেরে সোমনাথ সপরিবার আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন, অনুমান পুলিশের। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, তিন বছরের শিশুকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে। তার নাক, ঠোঁট নীল হয়ে গিয়েছিল। সোমনাথ এবং সুজাতার মৃত্যু হয়েছে গলায় দড়ি দেওয়ার কারণে। সোমনাথের মামা-মামি পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন।

Advertisement
আরও পড়ুন