বাংলাদেশের ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদি। —ফাইল চিত্র।
বাংলাদেশের ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদির হত্যায় অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত ফয়সাল মাসুদ করিম এখনও পলাতক। তাঁকে তন্ন তন্ন করে খুঁজছে সে দেশের পুলিশ। খোঁজ চলছে ফয়সালের সহকারী তথা খুনে অন্যতম অভিযুক্ত আলমগীর শেখেরও। অভিযোগ, উভয়েই দেশের পূর্বতন শাসকদল আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাঁরা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছেন কি না, ভারতে চলে এসেছেন কি না, এখনও জানে না বাংলাদেশের পুলিশ। ধৃতদের জেরা চলছে।
বাংলাদেশের গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান মহম্মদ শফিকুল ইসলাম বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, তদন্ত চলছে। তাঁরা ভারতে পালিয়ে এসেছেন কি না, সে বিষয়ে পুলিশ এখনও নিশ্চিত নয়। তবে অভিযুক্ত দু’জনের পাসপোর্টই ব্লক করে দেওয়া হয়েছে। অভিবাসন সংক্রান্ত নথিতে ফয়সাল বা আলমগীরের দেশ ছা়ড়ার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। অবৈধ ভাবে সীমানা পেরিয়ে তাঁরা অন্য দেশে চলে গিয়েছেন কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ফয়সালের স্ত্রী, মা-বাবা এবং বান্ধবীকে জেরা করা হচ্ছে।
গত ১২ ডিসেম্বর ঢাকায় গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন হাদি। তাঁকে সরকারি উদ্যোগে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছিল সিঙ্গাপুরে। ছ’দিন টানা লড়াইয়ের পর সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। এর পরেই বাংলাদেশ জুড়ে নতুন করে অশান্তি শুরু হয়েছে। হাদির স্মৃতির উদ্দেশে শনিবার রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছিল ঢাকা। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের পাশেই হাদিকে সমাধিস্থ করা হয়েছে। সেখান থেকে ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যেরা পুলিশকে ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেন। আট দিনেও কেন হাদির হত্যাকারীদের ধরা গেল না, প্রশ্ন তোলেন তাঁরা। রবিবার সন্ধ্যার মধ্যে এই সংক্রান্ত খবর না পেলে দেশের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগও দাবি করে ইনকিলাব মঞ্চ।
হাদির হত্যাকাণ্ডে এখনও পর্যন্ত ১২ জনকে গ্রেফতার করেছে বাংলাদেশের পুলিশ। তাঁদের মধ্যে মূল অভিযুক্ত ফয়সালের পরিবারের সদস্যেরাও রয়েছেন। তাঁর স্ত্রী, শ্যালক, মা, বাবা এবং এক বান্ধবীকে জেরা চলছে। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, হাদিকে গুলি করার আগে স্ত্রী এবং বান্ধবীর সঙ্গে ফয়সাল একাধিক বার ফোনে কথা বলেছিলেন। সে বিষয়েও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। সূত্রের দাবি, ময়মনসিংহ-হালুয়াঘাট সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশ ছেড়েছেন ফয়সালেরা। ভারতে আসার সম্ভাবনা পুলিশ একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছে না। তদন্ত চলছে। যে মোটরবাইকে করে অভিযুক্তেরা হাদিকে মারতে গিয়েছিলেন, সেটি পুলিশ উদ্ধার করেছে। উদ্ধার করা হয়েছে খুনে ব্যবহৃত অস্ত্রও।