Advertisement
Back to
Lok Sabha Election 2024

জোট এ বার গতিশীল, এক সুর ইয়েচুরি-অধীর

অধীর প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি থাকাকালীনই ২০১৬ সালে বিধানসভা ভোটে প্রথম বার বাম ও কংগ্রেসের সমঝোতা হয়েছিল। তবে সে বার সিপিএমের সমর্থন কংগ্রেসের পক্ষে গেলেও কংগ্রেসের সব ভোট সিপিএমের দিকে যায়নি বলে অভিযোগ উঠেছিল।

ব্যারাকপুরের সিপিএম প্রার্থী দেবদূত ঘোষের সমর্থনে প্রচারে দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি।

ব্যারাকপুরের সিপিএম প্রার্থী দেবদূত ঘোষের সমর্থনে প্রচারে দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। — নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০২৪ ০৭:৩৮
Share: Save:

বাম ও কংগ্রেসের জোট এ বার আগের চেয়ে অনেক মসৃণ। মানুষের কাছে সাড়াও মিলছে ভাল। রাজ্যে লোকসভা নির্বাচনের ফলে তার প্রভাব পড়বে। জোট-প্রসঙ্গে একই সুরে দাবি করলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি ও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী।

কলকাতা প্রেস ক্লাবের আয়োজনে ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে এসে বৃহস্পতিবার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর বলেছেন, সিপিএমের সঙ্গে এ বারের জোট সময়ের দাবি এবং ‘কঠোর বাস্তবতা’র উপরে দাঁড়িয়েই এই জোট হয়েছে। অতীতে তাঁকেও সিপিএমের বিরুদ্ধে প্রবল লড়াই করতে হয়েছে বলে উল্লেখ করে অধীর ব্যাখ্যা দিয়েছেন, এখন পরিস্থিতি বদলেছে অনেক। বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেসের ‘অত্যাচারে’র বিরুদ্ধে ‘অত্যাচারিত’দের জোট হয়েছে।

অধীর প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি থাকাকালীনই ২০১৬ সালে বিধানসভা ভোটে প্রথম বার বাম ও কংগ্রেসের সমঝোতা হয়েছিল। তবে সে বার সিপিএমের সমর্থন কংগ্রেসের পক্ষে গেলেও কংগ্রেসের সব ভোট সিপিএমের দিকে যায়নি বলে অভিযোগ উঠেছিল। সেই অভিযোগ এ দিন কার্যত মেনেই নিয়েছেন অধীর। তাঁর যুক্তি, ‘‘সিপিএম ৩৪ বছর ছিল শাসকের ভূমিকায়, আমরা বিরোধী। ফলে, ভুক্তভোগী কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকদের অনেকের পক্ষে সিপিএমকে সমর্থনের ক্ষেত্রে মানসিক বাধা ছিল। সিপিএমের সেই সমস্যা ছিল না।’’ প্রদেশ সভাপতির সংযোজন, ‘‘গত ৮ বছরে ভাগীরথী ও হুগলি দিয়ে অনেক জল বয়ে গিয়েছে। এখন আমরা দু’পক্ষই অত্যাচারিত সম্প্রদায়। আমাদের জোট হয়েছে অত্যাচারীর বিরুদ্ধে।’’

ব্যারাকপুরের সিপিএম প্রার্থী দেবদূত ঘোষের সমর্থনে প্রচারে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী।

ব্যারাকপুরের সিপিএম প্রার্থী দেবদূত ঘোষের সমর্থনে প্রচারে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। — নিজস্ব চিত্র।

অধীরের সুরেই ইয়েচুরি এ দিন বলেছেন, দেশ, সংবিধান, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা রক্ষায় অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েই কংগ্রেসের সঙ্গে জোট হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘কংগ্রেস ও সিপিএম মিলে একজোট হয়ে বিজেপি ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। প্রচারে গতি এসেছে, মানুষের সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। এ বার আর বিজেপি-তৃণমূলের দ্বিমেরু রাজনীতি থাকবে না। এ বারের লড়াই ত্রিপাক্ষিক।’’ অধীরও দাবি করেছেন, ‘‘আমি ভোটের ফল-বিশারদ নই। তবে দেশে ও রাজ্যের ফলে বেশ কিছু চমক অপেক্ষা করছে।’’

ভোট যত পরবর্তী পর্বের দিকে এগোচ্ছে, প্রচারে জোটের ছবিও তত স্পষ্ট হচ্ছে। প্রদেশ সভাপতি অধীর এ দিনই বনগাঁ কেন্দ্রের কল্যাণীতে কংগ্রেস প্রার্থী প্রদীপ বিশ্বাস এবং ব্যারাকপুর কেন্দ্রের কাঁচরাপাড়ায় সিপিএম প্রার্থী দেবদূত ঘোষের সমর্থনে সভা করেছেন। হাওড়ার পরে ব্যারাকপুরে প্রচারে ছিলেন ইয়েচুরিও। হুগলিতে সিপিএম প্রার্থী মনোদীপ ঘোষের সমর্থনে পলিটব্যুরো সদস্য বৃন্দা কারাটের সঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেসের সম্পাদক সুমন রায়চৌধুরী, দমদমে সিপিএম প্রার্থী সুজন চক্রবর্তীর সমর্থনে প্রদেশ কংগ্রেসের অমিতাভ চক্রবর্তী, সন্তোষ পাঠক, উত্তর ২৪ পরগনা জেলা (শহরাঞ্চল) কংগ্রেসের তাপস মজুমদার, শ্রীরামপুরের সিপিএম প্রার্থী দীপ্সিতা ধরের সমর্থনে পলিটব্যুরো সদস্য সূর্যকান্ত মিশ্রের সঙ্গে কংগ্রেসের আব্দুল মান্নান— বিভিন্ন কেন্দ্রেই দেখা গিয়েছে যৌথ প্রচার। বলাগড়ে বৃন্দা এ দিন বিজেপি ও তৃণমূলকে বিঁধে বলেছেন, ‘‘গব্বর সিংহের রাজনীতি দেশে চলবে না! দেশে এ বার বাম আসবে। বাম আমলে সমবায়গুলিতে নির্বাচন হত। কৃষকেরা ঋণ পেতেন। এ সব এখন তৃণমূলের হাতে। বিজেপির একই নীতি। পেঁয়াজ ও আলুর দাম নেই। তা নিয়ে এখানকার সাংসদ দিল্লিতে বলেছেন?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE