—প্রতীকী চিত্র।
প্রতিদিনই দামে নজির গড়ছে সোনা। তাতেই প্রমাদ গুনছেন স্বর্ণকারেরা। আকাশ ছোঁয়া দাম শুনে দোকানমুখো হচ্ছেন না মধ্যবিত্ত বাঙালি। খরিদ্দারের অভাবে স্বর্ণ বিপণি বন্ধ হয়ে যাওয়ার নজিরও রয়েছে জেলায়। ব্যবসায়ীদের কেউ কেউ জানান, পরিস্থিতি এমনই করুণ যে, জীবিকা হারিয়ে কারিগর, দোকানদারদের কেউ কেউ আনাজের দোকান খুলেছেন। কেউ এখন টোটোচালক। তাঁদের দুর্দশা নিয়ে সরব হয়ে দেখা যায়নি কোনও রাজনৈতিক দলকে। তাঁদের জন্য নির্বাচনের মুখে নেই কোনও প্রতিশ্রুতি। স্বর্ণকারদের আর্জি, স্বর্ণশিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে সক্রিয় হোক সরকার। নির্বাচনী ইস্তাহারে গুরুত্ব দেওয়া হোক স্বর্ণশিল্পকে।
স্বর্ণশিল্পীদের একাংশ জানান, এই পেশার সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে প্রচুর মানুষ যুক্ত। কেউ স্বর্ণ ব্যবসায়ী, কেউ কারিগর, কেউ আবার দোকানের কর্মী। আর তাঁদের উপর নির্ভর করে রয়েছেন হাজার হাজার পরিবার। নদিয়া জেলাতেই প্রায় ১৬ হাজারের মতো ছোট ও মাঝারি সোনার দোকান রয়েছে। কারিগর আছেন ছয় থেকে সাত হাজার। এখনও কিছু কিছু দোকানে ‘ম্যানেজার’ রয়েছেন। জেলার স্বর্ণ ব্যবসায়ী সংগঠনগুলির দাবি, এই জেলায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে এক লক্ষেরও বেশি মানুষ এই শিল্পের উপরে নির্ভরশীল। সোনার দাম আকাশ ছোঁয়া হওয়ায় হুমকির মুখে পড়েছেন সেই সব মানুষেরা।
অথচ সরকারি ভাবে কয়েকটি পদক্ষেপ করলে কিছুটা হলেও অক্সিজেন পেত এই শিল্প। অখিল ভারতীয় স্বর্ণকার সঙ্ঘের রাজ্য কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক অক্ষয় ভট্টাচার্য বলছেন, “সোনার দাম যত বাড়ছে ততই মাধ্যবিত্তের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। এই মধ্যবিত্তই আমাদের প্রধান খরিদ্দার। ফলে আমাদের খরিদ্দারও ক্রমে কমছে। বর্তমানে নেই বললেই চলে। যারা এখনও সোনার গয়না কেনার কথা ভাবেন তারা বিভিন্ন বড় বড় কোম্পানির শো-রুমে চলে যাচ্ছেন। ওদের মূলধন বেশি। ফলে ওরা নানা ধরনের ছাড় দিতে পারছে। আমরা ক্রমশ পিছিয়ে পড়ছি।” তিনি আরও বলেন, “অনের স্বর্ণ ব্যবসায়ী দোকান বন্ধ করে দিয়ে টোটো চালাচ্ছেন। কেউ বা আনাজ বিক্রি করছেন। অথচ সরকার চাইলেই আমাদের এই কঠিন অবস্থা থেকে অনেকটাই মুক্ত
করতে পারত।” স্বর্ণকারদের একাংশের দাবি, সোনার উপরে আমদানি শুল্ক অনেকটাই বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। তাঁরা শুল্ক কমানোর দাবি জানিয়ে আসছেন দীর্ঘ দিন ধরে। শুধু তাই নয়, অতিরিক্ত জিএসটির চাপও তাঁরা নিতে পারছেন না। বর্তমানে বছরে ৪০ লক্ষ টাকার বেশি লেনদেন হলেই জিএসটি দিতে হয়। ব্যবসায়ীদের দাবি, এই নিয়ম যে সময় করা হয়েছিল তখন সোনার দাম কম ছিল। এখন দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। ফলে লেনদেনের পরিমাণ অন্তত এক কোটি টাকা করার দাবি জানাচ্ছেন তাঁরা। বঙ্গীয় স্বর্ণ শিল্পী সমিতির রাজ্য কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক দীপঙ্কর সরকার বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকার আমদানি শুল্ক কমালে ও জিএসটিতে কিছুটা ছাড় দিলে আমাদের সুবিধা হত। টিকে থাকার সুযোগ পেতাম।’’ শুধু কেন্দ্রীয় সরকার নয়, রাজ্য সরকারের কাছেও একাধিক দাবি জানাচ্ছেন
স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা। (চলবে)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy