লোকসভা নির্বাচন কড়া নাড়ছে। বিদেশনীতির দিকে তাকানোর সময় আর কয়েক সপ্তাহ মাত্র। এই সময়ে বিদেশনীতিতে যতটা সম্ভব নিরপেক্ষ থেকে, বিশ্বের বড় শক্তিগুলির সঙ্গে ভারসাম্য রাখতে চাইছে মোদী সরকার। একইসঙ্গে ঘরোয়া রাজনীতিতে কাজে আসে এমন বার্তাও কূটনীতির বৃত্তে দেওয়া হচ্ছে।
গতকালই প্রধানমন্ত্রীর দূত বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর রাইসিনা-সংলাপে জানিয়েছিলেন, রাশিয়া এখন পশ্চিমের দিক থেকে মুখ ফিরিয়েছে এশিয়ার দিকে। এশিয়ার দেশগুলির উচিত আরও বেশি করে মস্কোর সঙ্গে সংযুক্ত হওয়া। আজ ওই একই মঞ্চে আমেরিকার নেতৃত্বাধীন ‘কোয়াড’ বা চতুর্দেশীয় অক্ষের তাৎপর্য ব্যাখ্যা করে তিনি বলেছেন, এই অক্ষের প্রভাব ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ক্রমশ বাড়বে। প্রসঙ্গত, ভূকৌশলগত ক্ষেত্রে আমেরিকা তথা পশ্চিমের সঙ্গে যুযুধান রাশিয়া প্রকাশ্যেই এই ‘কোয়াড’ গোষ্ঠীর সমালোচনায় মুখর হয়েছে বারবার। তবে মোদী সরকার এক দিকে যেমন কোয়াড প্রশ্নে মস্কোর সমালোচনা গ্রাহ্য করছে না, তেমনই রাশিয়া থেকে তেল আমদানির প্রশ্নে আমেরিকার নিষেধাজ্ঞাকেও এখনও পর্যন্ত গ্রাহ্য করেনি— ঘরোয়া ভাবে এমনই জানাচ্ছে সাউথ ব্লক।
আজ কোয়াড সংক্রান্ত আলোচনায় জয়শঙ্কর বলেন, ‘‘গত পাঁচ বছরে কোয়াড চারটি উজ্জ্বল গণতন্ত্রের (ভারত আমেরিকা, জাপান, অস্ট্রেলিয়া) গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চ হয়ে উঠেছে। উন্মুক্ত, উদার এবং সবাইকে নিয়ে চলা ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় নীতিকে সুনিশ্চিত করতে চাইছে এই মঞ্চ। কোয়াড অন্য কোনও দাদাগিরি বরদাস্ত করবে না।’’ কূটনৈতিক মহলের মতে, নাম না করে তিনি চিনকে খোঁচা দিয়েছেন। পাশাপাশি তিনটি স্পষ্ট বার্তা জয়শঙ্কর দিয়েছেন ‘কোয়াড’ নিয়ে। বলেছেন, ‘‘প্রথমত কোয়াড থাকার জন্য এসেছে। দুই, কোয়াড-এর প্রভাব ক্রমশ বাড়বে। তিন, কোয়াড কূটনীতিতে অবদান রাখবে। গোটা বিশ্বের কাছে সহজগম্য হবে এই অঞ্চলের সমুদ্রপথ।’’
এই গোষ্ঠীর অন্যান্য সদস্যভুক্ত রাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের ব্যাখ্যা করে বিদেশমন্ত্রীর দাবি, ‘‘আমেরিকার সঙ্গে আদর্শগত মতপার্থক্যের ইতিহাস আমরা পিছনে ফেলে এগিয়ে এসেছি। জাপানের সঙ্গে দীর্ঘ দিনের সুসম্পর্ককে বাস্তব চেহারা দিয়েছি। অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক আদানপ্রদান আমাদের শুরু হয়েছে।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)