কাইতেকি সাজ, ছবি সৌজন্যে রাতুল দত্ত
পুজো মানেই জমিয়ে সাজগোজ। কখনও শাড়ি, কখনও কুর্তি, কখনও বা প্যান্ট-শার্ট, কখনও বা পাঞ্জাবি। দুর্গাপুজোর দিনগুলোয় গোটা কলকাতা যেন নিজের মতো করে সেজে ওঠে। ঝলমলিয়ে ওঠেন নারী-পুরুষ নির্বিশেষে। কিন্তু সত্যিই কি ফ্যাশন আলাদা করে চিনিয়ে দেয় নারী ও পুরুষকে? নাকি সবটাই প্রথার ফের! সেই উত্তর দিতে পুজোর ফ্যাশন দুনিয়ায় নতুন ট্রেন্ড নিয়ে হাজির তারকা পোশাক শিল্পী রাতুল দত্ত। তাঁর ভাবনায় এক হয়ে গিয়েছে নারী-পুরুষের সাজ।
প্রথাগত নারী-পুরুষের সাজ থেকে বেরিয়ে এসে প্রান্তিক যৌন সম্প্রদায়ের সাজ-সজ্জার উপরে দীর্ঘ দিন ধরেই কাজ করছেন রাতুল। তাঁর হাত ধরেই নতুন রূপে সেজে উঠেছেন তারা। কিন্তু এ বার সাজসজ্জার সেই বাদ-বিবাদকে একেবারে ঘুচিয়ে ফেলতে চাইছেন শিল্পী। এই পুজোয় রাতুল
আমজনতার জন্য নিয়ে আসতে চলেছেন এমন পোশাক, যাতে ভেদাভেদ ঘুচবে নারী-পুরুষের। যে পোশাকে পুজোর দিনগুলোয় আলাদা হয়ে উঠবে শুধু ব্যক্তিসত্ত্বা।
রাতুলের কথায়, “ফ্যাশনের পরিভাষায় বিভিন্ন লিঙ্গের মানুষের জন্য বিভিন্ন ধরনের সাজসজ্জার প্রথা তৈরি করেছি আমরাই। অথচ এর কোনও প্রয়োজন ছিল না। যে কোনও সাজেই সেজে ওঠা যায় নতুন করে।”
শেষ কয়েক বছরে, প্রথাগত সাজ থেকে বেরিয়ে, নতুন নতুন সাজে সেজে উঠেছেন প্রান্তিক যৌন সম্প্রদায়ের মানুষ। তাঁদের ফ্যাশন রীতিমতো নজর কেড়েছে। যার নেপথ্যে রয়েছেন রাতুল। তিনি মূলত কাজ করেন জামদানি নিয়ে। আনন্দবাজার অনলাইনকে রাতুল বলেন, “সব সময়েই আমরা ফ্যাশনে কিছু নতুনত্ব আনার চেষ্টা করি — একটু অন্য ধরনের নকশা, মোটিফ, বা রং। গতে বাঁধা ছক থেকে বেরিয়ে পোশাকের সাজ বা নকশায় কিছু আলাদা করার চেষ্টা করি। আমার মূল লক্ষ্য থাকে, যাঁরা পোশাকটি পরছেন, তাঁরা যেন নিজেদেরকে ভাল ভাবে মেলে ধরতে পারেন।”
এই পুজোয় নতুনত্ব কী? রাতুলের দাবি, “এই বছর পুজোয় তাঁর মূল আকর্ষণ ‘কাইতেকি’। পোশাকগুলির নকশা এমন ভাবে বানানো, যা সব রকম ব্যক্তিত্বের সঙ্গেই মানানসই। জাপানের নান্দনিকতার কথা মাথায় রেখেই এই ভাবনা।” শিল্পীর বিশ্বাস, মহিলা হোক বা পুরুষ কিংবা তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ– এই পোশাক প্রত্যেকের পুজোর সাজেই অন্য মাত্রা যোগ করবে।
পুজোর সাজে সকলেই চান নিজেকে অন্যদের ভিড়ে আলাদা করে চিনিয়ে দিতে। সেই মতো প্রত্যেকের পছন্দও আলাদা। রাতুল মনে করেন, পোশাক এমন হওয়া উচিত, যা ব্যক্তিত্বের সঙ্গে মানানসই তো হবেই, সঙ্গে হবে আরামদায়ক। সেই কারণেই এমন অভিনব ভাবনা নিয়ে পুজোয় হাজির হয়েছেন তিনি।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy