তছনছ: পুলিশের গুলিতে নিহত আত্মঘাতী জঙ্গি। শনিবার ঢাকার রাস্তায়। ছবি: শাহিন কাওসার
শুক্রবার দুপুরে র্যাব-এর সদর দফতরে আত্মঘাতী হামলার পরে শনিবার কাকভোরেই ফের আত্মঘাতী হামলার চেষ্টা ঢাকায়। এ বারও নিশানায় পুলিশ। তবে এ বার মোটরসাইকেলে বিস্ফোরক ভরে চেক পোস্ট ওড়ানোর ছক ছিল বলে পুলিশের দাবি। তার আগেই পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয়েছে হামলাকারীর। তার গায়ের জ্যাকেট ও মোটরসাইকেলটিতে বিস্ফোরক বাঁধা ছিল, যা ফাটলে বড় বিপদ হতে পারত।
বাংলাদেশের প্রশাসন পুরো ঘটনাটি একটি বড়সড় চক্রান্তের অঙ্গ বলে মনে করছে। কয়েক সপ্তাহ পরেই রাষ্ট্রীয় সফরে দিল্লি আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই সফরে দু’দেশের সম্পর্ক যে উচ্চতায় পৌঁছতে চলেছে, কিছু প্রতিবেশী দেশ তাতে প্রমাদ গণছে। লক্ষণীয় ভাবে হঠাৎই যেমন জঙ্গি তৎপরতা বেড়ে উঠেছে, হাসিনার রাজনৈতিক বিরোধীরাও কূটনৈতিক শিষ্টতা লঙ্ঘন করে ভারত-বিরোধী প্রচার তুঙ্গে নিয়ে গিয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের এক শীর্ষ নেতার কথায়— ‘‘শেখ হাসিনার দিল্লি সফরে বিঘ্ন ঘটানোই গোটা পরিকল্পনার উদ্দেশ্য। পিছনে পাকিস্তান দূতাবাস।’’
বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে ১৯ ঘণ্টার পুলিশি অভিযানের পরে চার জঙ্গি নিকেশ হয়। সেই ডেরা থেকে বিপুল পরিমাণ বোমা ও বিস্ফোরক উদ্ধার করে শনিবার পুলিশ জানিয়েছে, গুলশনের হোলি আর্টিজান বেকারির ধাঁচে বিদেশিদের ওপর ফের বড়সড় একটি হামলার চক্রান্ত ছিল জঙ্গিদের। এর পরে শুক্রবার ঢাকা বিমানবন্দর সংলগ্ন এলাকায় পুলিশের ‘এলিট ফোর্স’ র্যাব-এর ব্যারাকে আত্মঘাতী হামলা চালায় সন্দেহভাজন এক জঙ্গি। বাংলাদেশে সুইসাইড জ্যাকেট পরে হামলার ঘটনা এই প্রথম। তার পরে এ দিন ঢাকারই খিলগাঁও এলাকায় অস্থায়ী একটি চেক পোস্ট বসিয়ে যানবাহনে তল্লাশি করছিল র্যাব। ভোর পাঁচটা নাগাদ একটি মোটরসাইকেলকে প্রচণ্ড গতিতে ব্যারিকেড ভেঙে এগিয়ে আসতে দেখা যায়। আরোহী যুবকের গতিবিধি দেখে সন্দেহ হওয়ায় এক র্যাব সদস্য গুলি করে তাকে মাটিতে ফেলে দেয়। তার পরেই দেখা যায়, মোটরসাইকেল আরোহীর গায়ের জ্যাকেটের মধ্যে বেশ কয়েকটি তাজা গ্রেনেড বাঁধা রয়েছে। মোটরসাইকেলে বাঁধা ছিল কয়েকটি বিস্ফোরকে ঠাসা ব্যাগও। এর পরে বম্ব স্কোয়াড এসে বিস্ফোরকগুলি উদ্ধার করে পাশের একটি মাঠে নিয়ে গিয়ে নিষ্ক্রিয় করে।
শুক্রবার র্যাবের ব্যারাকে হামলার পরই বাংলাদেশের সব বিমানবন্দর, নৌবন্দর, বাস গুমটি ও বাজারে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছিল। রাস্তায় বিভিন্ন জায়গায় চেক পোস্ট বসিয়ে নজরদারি বাড়ানো হয়েছিল। তার মধ্যে শনিবার দ্বিতীয় হামলাটির পরে পুলিশের কপালে ভাঁজ পড়েছে। ঢাকা নগর পুলিশের কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়াঁ বলেন, ‘‘পুলিশ বাড়তি সতর্ক ছিল বলেই এ দিনের হামলাটি ঠেকানো গিয়েছে।’’ কমিশনার মন্তব্য করেন— সাম্প্রতিক এই জঙ্গি তৎপরতার পিছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy