Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪
Terrorism

সন্ত্রস্ত সন্ত্রাসীরাই, তিন মাসে কোমর ভেঙে দিয়েছে বাংলাদেশ

বর্ষণ অবিশ্রান্ত নয়। থেমে থেমে মেঘের মর্জিতে। উল্লাস নদীতে। কূল ভেঙে ঘরে ঢুকে ফেরার সময়, ফেলে যাওয়া পলিতে জমিতে উর্বরতা। চাষিরা খুশি। অন্যরাও সন্তুষ্ট প্রাকৃতিক স্নিগ্ধতায়। আশ্বিনে নন্দিত বাংলাদেশ। ১ জুলাই ঢাকার গুলশনে জঙ্গি হামলা শান্তি কেড়েছিল। অস্থিরতা তখন সর্ব স্তরে। সেটা কেটেছে।

অমিত বসু
শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০১৬ ১৬:৩৯
Share: Save:

বর্ষণ অবিশ্রান্ত নয়। থেমে থেমে মেঘের মর্জিতে। উল্লাস নদীতে। কূল ভেঙে ঘরে ঢুকে ফেরার সময়, ফেলে যাওয়া পলিতে জমিতে উর্বরতা। চাষিরা খুশি। অন্যরাও সন্তুষ্ট প্রাকৃতিক স্নিগ্ধতায়। আশ্বিনে নন্দিত বাংলাদেশ। ১ জুলাই ঢাকার গুলশনে জঙ্গি হামলা শান্তি কেড়েছিল। অস্থিরতা তখন সর্ব স্তরে। সেটা কেটেছে। আস্থা ফিরেছে, কর্মচাঞ্চল্য নতুন প্রকল্পে। ভয়ের ভূত উধাও। তবুও শঙ্কায় ম্রিয়মান ইংল্যান্ড ক্রিকেট টিমের অধিনায়ক ইয়ন মরগ্যান। কিছুতেই বাংলাদেশে যাবেন না। অনেক বুঝিয়েও রাজি করানো যায় নি। নিরাপত্তার প্রশ্ন তুলেছেন। নিজেকে গোটাচ্ছেন। শিশুসুলভ শঙ্কা। আন্তর্জাতিক ক্রীড়াবিদের এমন আচরণ মানায় না। বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে নিশ্চিন্ত দুনিয়া, মরগ্যান নন। নিরাপত্তা বাহিনী সন্ত্রাসের ডানা ভেঙেছে। জঙ্গিরা পালানোর পথ খুঁজছে। সন্ত্রাস নিকেশ অভিযানে নিহত একের পর এক জঙ্গি। সন্ত্রাসী আস্তানায় অভিযানে সাফল্য। জামাতের জঙ্গিপনায় ছেদ। দেওয়ালে পিঠ। নড়াচড়া বন্ধ। এ সময় তাদের সমীহ করলে তারাই লজ্জা পাবে। মরগ্যান তাই করছেন।

সন্ত্রাসীদের অর্থ-অস্ত্রের উৎসটা এত দিন অস্পষ্ট ছিল। জল্পনা কল্পনায় কুয়াশা। এ বার পরিষ্কার। তারা অর্থ পেয়েছে অনাবাসী বাংলাদেশি আর পাকিস্তানের কাছ থেকে। দুবাইয়ে বাংলাদেশের ধনী ব্যবসায়ীরা সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে জামাতের দিকে। যাতে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক সরকারের পতন ঘটে। যাতে তারাও বহাল তবিয়তে দেশে ফিরতে পারে। আয়ের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করার যেন কেউ না থাকে। কালো টাকায় যদি দেশটাকে লন্ডভন্ড করা যায় ক্ষতি কী! দু’বছর আগেও জামাতের ওপর ভরসা ছিল না। টাকা পাঠালেও, পাঠাত সামান্য। যা সরকারের সমান্তরাল শক্তি তৈরি করার পক্ষে যথেষ্ট নয়। নিহত জঙ্গি তামিম আহমেদ চৌধুরী তাদের বোঝানোর দায়িত্বটা নেয়। মনে গাঁথার চেষ্টা করে হাসিনা সরকারের পতন শুধু সময়ের অপেক্ষা। তাতেও বরফ গলেনি। শেষে তরুণ জঙ্গিদের প্রশিক্ষণের ভিডিও পাঠান হয়। সেনাবাহিনীর কম্যান্ডোরাও যে তাদের কাছে কিছু নয় সেটাও প্রমাণ করার চেষ্টা চলে। তামিম বছরের বেশির ভাগ সময়টা কানাডায় থাকত। সেখানে বিত্তবানদের সঙ্গে সংযোগ বাড়িয়েও তেমন লাভ হয়নি। জামাতের জঙ্গিদের শক্তির প্রমাণ দিতে ১ জুলাই গুলশান অ্যাকশন প্ল্যান নেওয়া হয়। সন্ত্রাসীরা ভেবেছিল, তার ধাক্কাতেই হেলে যাবে দেশটা। উন্নয়ন শিকেয় উঠবে। ভয়ে কাঁপবে মানুষ। বিশ্ব মুখ ফেরাবে। তা হয়নি। বিশ্ব আঁকড়ে ধরেছে বাংলাদেশকে। বিপদে পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সব প্রকল্পেই কর্মচাঞ্চল্যের উল্লাস। নির্ভীকতায় সংহত হয়ে মানুষ সন্ত্রাস রোখার অঙ্গীকার নিয়েছে।

আরও পড়ুন...
উরি থেকে সার্ক, কী বলছেন বাংলাদেশের বিশিষ্টজনেরা

সন্ত্রাসীরা রটিয়েছিল তারা সিরিয়ার আইএস জঙ্গিগোষ্ঠীর সঙ্গে সংযুক্ত। যাতে তাদের সম্পর্কে শঙ্কা আরও বাড়ে। তাও হয়নি। মিথ্যেটা দিনের আলোয় এসেছে। নাশকতার কাজ বাংলাদেশের নব্য জেএমবি’র। মৌলবাদ লোপাট হওয়ার ভয়ে তারা অস্ত্র ধরেছে। বিদেশ থেকে অস্ত্র আমদানির চেষ্টা করেছে। যা চেয়েছে, পেয়েছে তার থেকে অনেক কম। অস্ত্র ভান্ডারে এসেছে হাতে গোনা একে ২২ রাইফেলস। তা চালাতে পারে এমন লোকও কম। অস্ত্র আমদানি নেপাল থেকে। বিহার হয়ে চাঁপাই নবাবগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকেছে। অস্ত্রের লোগো বদল করা হয়েছে। যাতে কোন দেশে তৈরি বোঝা না যায়। এবার অস্ত্র-অর্থ আমদানির র‍্যাকেট ভাঙা শুরু। তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ছে একের পর এক সন্ত্রাসী আস্তানা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bangladesh Terrorism
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE