Advertisement
E-Paper

জঙ্গিদের অবৈধ বিদেশি মুদ্রা আমদানিতেও চওড়া বাঁধ দিচ্ছে ঢাকা

টাকায় আটকেছে বাংলাদেশের জঙ্গিরা। সংগঠন চালাতে হিমশিম। এমন দুর্দিন আসবে ভাবেনি। যারা দিত, হাত গুটিয়েছে। আকালের সন্ধানে নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা ব্যর্থ। রক্ত ঝরছে না। ভয়ে মানুষ কাঁপছে না। নতুন প্রকল্পের কাজ থামাতে হচ্ছে না। দুর্বার গতিতে এগোচ্ছে উন্নয়ন।

অমিত বসু

শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০১৬ ১৩:২৫
অবৈধ বিদেশি মুদ্রা আমদানিতে কড়া নজর

অবৈধ বিদেশি মুদ্রা আমদানিতে কড়া নজর

টাকায় আটকেছে বাংলাদেশের জঙ্গিরা। সংগঠন চালাতে হিমশিম। এমন দুর্দিন আসবে ভাবেনি। যারা দিত, হাত গুটিয়েছে।

আকালের সন্ধানে নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা ব্যর্থ। রক্ত ঝরছে না। ভয়ে মানুষ কাঁপছে না। নতুন প্রকল্পের কাজ থামাতে হচ্ছে না। দুর্বার গতিতে এগোচ্ছে উন্নয়ন। আতঙ্কিত জঙ্গিরা পালানোর পথ খুঁজছে। গোপন ডেরায় আস্তানা গেড়েও নিস্তার নেই। বিদেশ থেকে টাকা আনতে দেদার এনজিও খুলেছিল। সমাজ কল্যাণের নামে টাকা তুলত। তাও বন্ধ। কাজের মিথ্যে ফিরিস্তি দিতে গিয়ে ধরা পড়েছে। বেনামি এনজিও-তেও অর্থ আমদানি নেই। এখন এদেশ সেদেশ থেকে কুড়িয়ে বাড়িয়ে যা পারছে এনে জড়ো করছে। সেখানেও বাধা। বিদেশি মুদ্রা বাংলাদেশি টাকায় বদলাতে পারছে না। বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের নিয়মে একমাত্র ডলারের রূপান্তর সম্ভব। জঙ্গিদের হাতে মার্কিন ডলার কম। বেশি পশ্চিম এশিয়ার বিভিন্ন দেশের মুদ্রা। সৌদি আরবের রিয়াল, সিরিয়ার সিরীয় পাউন্ড পকেট ভর্তি করে এনেও ভাঙাতে পারছে না। মুশকিল আসানে এগিয়ে এসেছিল অবৈধ মানিচেঞ্জাররা। তাদের কাছে যে কোনও দেশের মুদ্রা বাংলাদেশি টাকায় ভাঙিয়ে দেওয়াটা জলভাত। লাইসেন্সের পরোয়া না করেই দিব্যি ব্যবসা। এমন ভাবে দোকান সাজিয়ে বসে, বোঝার উপায় নেই বৈধ না অবৈধ।

ঢাকার মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট সন্ধান পেলেই ধরছে অবৈধ মানিচেঞ্জারদের। উদ্ধার করছে অবৈধ মুদ্রা। তদন্তে জানা গেছে, ঢাকার ৯০টি অবৈধ মানিচেঞ্জার জঙ্গিদের দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়েছে। বিদেশি মুদ্রার বদলে তুলে দিচ্ছে বাংলাদেশি টাকা। যাতে জঙ্গিদের অচল টাকা ফের চলতে পারে। সড়কে বা বিমানে দেশে ফেরার সময় চেকিং হয় না। দেশ ত্যাগের আগে কাস্টমস দেখে, কী নিয়ে যাচ্ছে। দেশে পা দিলে যাত্রীরা নিশ্চিন্ত। কাস্টমস তল্লাশি চালায় না। মনে করে, ঘরের ছেলে ঘরে ফিরছে। যা আনে আনুক। এই উদাসীনতাই বিপদ ডেকে আনে। অবৈধ বিদেশি মুদ্রা নিয়ে ঢুকে পড়ে জঙ্গিরা। তাদের চেহারা দেখে জঙ্গি ভাবার উপায় নেই। এবার কিন্তু যাতায়াতে দু’দিকেই কড়া চেকিংয়ের মুখোমুখি হতে হবে।

বেআইনি মানিচেঞ্জাররাও পার পাবে না। পুলিশ আর বাংলাদেশ ব্যাঙ্ক মিলে ব্যবস্থা নিচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের বৈদেশিক মুদ্রানীতি, বৈদেশিক মুদ্রা পরিদর্শন আর ফরেন এক্সচেঞ্জ অপারেশন বিভাগ বৈঠকে বসে সিদ্ধান্ত নিয়েছে- বৈধ মানিচেঞ্জারদের নাম ঠিকানা পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হবে। তার বাইরে কারও সঙ্গে যেন লেনদেন করা না হয়। অবৈধ মানিচেঞ্জারদের যারা ঘর ভাড়া দিয়েছে, ঘর দখলমুক্ত করাটা তাদের কাজ। ঘর ছাড়তে না চাইলে তখন পুলিশ ব্যবস্থা নেবে। নতুন কাউকে ভাড়া দিতে হলে লাইসেন্স দেখে নেওয়াটা জরুরি।

অনিয়মের অভিযোগে ৩৬৮টি মানিচেঞ্জারের লাইসেন্স বাতিল হয়েছে। এখন বৈধ মানিচেঞ্জার ২৩৪। তার মধ্যে ঢাকায় ১৬৮, চট্টগ্রামে ২২, সিলেটে ১৫, খুলনায় ১৩, রাজশাহীতে ৬, রংপুরে ৪, বগুড়ায় ৪, বরিশালে ২। অবৈধ মানিচেঞ্জারদের অন্যতম ঠিকানা ঢাকার গুলশন। এত জায়গা থাকতে গুলশনকে কেন বাছল। ১ জুলাই গুলশন হামলায় অবৈধ মানিচেঞ্জারদের কি কোনও ভূমিকা ছিল। জঙ্গিরা কি ওদের কাছ থেকে টাকা পেয়েই অপারেশন চালিয়েছিল। তদন্তে তা জানার চেষ্টা হচ্ছে। মতিঝিল, উত্তরা, ধানমান্ডি, শ্যামলীতেও ভুয়ো সাইনবোর্ড টাঙিয়ে অবৈধ মানিচেঞ্জররা ব্যবসা করছে। তাদের পাততাড়ি গুটনোর সময় এসেছে। মানিচেঞ্জারদের অফিসে ক্লোজ সার্কিট টিভি বসেছে। লেনদেন লেজারে রেকর্ড রাখতে হবে। অনলাইন রিপোটিং চলবে। মার্কিন ডলার ছাড়া অন্য কোনও বিদেশি মুদ্রা ভাঙালেই গ্রেফতার। পুলিশ আর বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের যৌথ তদারকিতে জঙ্গিদের অর্থ আমদানিতে নিশ্ছিদ্র বাঁধের ব্যবস্থা।

আরও পড়ুন- সন্ত্রাস মোকাবিলায় ভারতের পাশে থাকার আশ্বাস হাসিনার

Bangladesh Illegal Foreign Currency Import Foreign Currency
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy