বাংলাদেশ সফররত ভারতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পর্রীকরের সঙ্গে সে দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। —নিজস্ব চিত্র।
নিজের দেশের মাটিকে বিদেশি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের কিছুতেই ব্যবহার করতে দেবেন না তিনি। বাংলাদেশ সফররত ভারতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পর্রীকরকে এ কথা জানালেন সে দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর সরকার যে কড়া হাতে সন্ত্রাসের মোকাবিলা করবে, সেই প্রতিশ্রুতির কথাও জানিয়েছেন তিনি। সন্ত্রাস মোকাবিলায় ভারতের পাশে বাংলাদেশ থাকবে বলেও আশ্বাস দেন হাসিনা। দারিদ্র মোকাবিলা ও মহিলাদের ক্ষমতায়নে ঢাকার সাফল্যের উল্লেখ করে হাসিনা সরকারের প্রশংসা করেন মনোহর পর্রীকর।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরে এই প্রথম কোনও ভারতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী সে দেশে গিয়েছেন। বুধবার ঢাকা পৌঁছন মনোহর পর্রীকর। বৃহস্পতিবার বিকেলে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাড়িতে যান। প্রায় ৩০ মিনিট কথা হয় দু’জনের। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর তরফে হাসিনাকে শুভেচ্ছা জানান পর্রীকর। তিনি বলেন, ‘‘শেখ হাসিনার ভারত সফরের জন্য নরেন্দ্র মোদী অপেক্ষায় আছেন।’’ ১৯৭১-এর যুদ্ধে ব্যবহৃত একটি ভারতীয় হেলিকপ্টারের স্মারক ও ছত্রী বাহিনীর তোলা বাংলাদেশের কিছু দুর্লভ ছবি হাসিনার হাতে তুলে দেন পর্রীকর। ভারতীয় বিমান বাহিনীর সহায়তায় যে তিনটি আকাশযান নিয়ে ‘কিলো ফ্লাইট’ গঠিত হয়েছিল, ওই হেলিকপ্টার ছিল তার অন্যতম। ১৯৭১-এ ডিমাপুরে ব্যবহৃত হয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় সদ্যগঠিত বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রথম ফাইটার হেলিকপ্টার ছিল সেটি। ভারতীয় বিমান বাহিনীর আইএল ৭৬ এয়ারক্রাফ্টে দু’দিন আগে স্মারকটি ঢাকায় নিয়ে আসা হয়। আগারগাঁও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ওই স্মারক হেলিকপ্টারটি রাখা হবে।
বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকও হাসিনার হাতে। তিনি বলেন, ‘‘ভারতীয় সেনার সঙ্গে বাংলাদেশের রক্তের সম্পর্ক। বাংলাদেশের স্বাধীনতার লড়াইয়ে তাদের ভূমিকা ভোলার নয়।’’ পর্রীকর বলেন, ‘‘নৈতিক দায় থেকেই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে স্বাধীনতার যুদ্ধে বাংলাদেশের মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিল ভারত।’’ সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষরের পর দু’দেশের সেনাদের বোঝাপড়া আরও বাড়বে বলে জানান তিনি। আগামী মাসে শেখ হাসিনার দিল্লি সফরে এই চুক্তিটি হওয়ার কথা। তার খুঁটিনাটি চূড়ান্ত করতেই তিন বাহিনীর উপপ্রধান, উপকূলরক্ষী বাহিনীর প্রধান ও কর্মকর্তাদের নিয়ে ঢাকা এসেছেন পর্রীকর। নতুন প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চুক্তিতে সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ, প্রযুক্তি হস্তান্তর, প্রশিক্ষণ এবং যৌথ মহড়ার বিষয়টি থাকবে। সন্ত্রাসবাদ-বিরোধী তৎপরতা রোধে দু’দেশের সেনা গোয়েন্দাদের মধ্যে তথ্য আদানপ্রদানের বিষয়টিও চুক্তিতে বিশেষ গুরুত্ব পাবে।
এ দিন সকালে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে শহিদ সেনাদের স্মারক ‘অনির্বাণ শিখা’য় শ্রদ্ধা জানিয়ে হেলিকপ্টারে চট্টগ্রামে যান পর্রীকর। সেখানে বাংলাদেশ মিলিটারি অ্যাকাডেমি পরিদর্শন করেন তিনি। বুধবার রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের সঙ্গেও সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকির সঙ্গেও কথা বলেন ভারতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী।
আরও পড়ুন
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy