Advertisement
০৯ মে ২০২৪
Bangladesh News

কেয়ার করি না! ঢাকা-কলকাতা মৈত্রী এক্সপ্রেসে উপচে পড়া ভিড়

ভয় দেখিয়ে ঘরে আটকে রাখা যায়নি। অন্তর্ঘাতের গুজব ছড়িয়েও লাভ হয়নি। ১ জুলাই ঢাকার গুলশনে নাশকতার পরেও ইতস্তত না করে যাত্রীরা পা রেখেছে মৈত্রী এক্সপ্রেসে। ঢাকা-কলকাতার মধ্যে ছোটাছুটি অব্যাহত।

ঢাকা-কলকাতা মৈত্রী এক্সপ্রেস।

ঢাকা-কলকাতা মৈত্রী এক্সপ্রেস।

অমিত বসু
শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০১৬ ১৩:২০
Share: Save:

ভয় দেখিয়ে ঘরে আটকে রাখা যায়নি। অন্তর্ঘাতের গুজব ছড়িয়েও লাভ হয়নি। ১ জুলাই ঢাকার গুলশনে নাশকতার পরেও ইতস্তত না করে যাত্রীরা পা রেখেছে মৈত্রী এক্সপ্রেসে। ঢাকা-কলকাতার মধ্যে ছোটাছুটি অব্যাহত। বাংলাদেশ-ভারত সরকারও ট্রেন বন্ধের কথা ভাবতেই পারেনি। নিরাপত্তা নিশ্ছিদ্র রেখে ট্রেন ছুটছে পুরোদমে। ভিড় এতটাই, যাত্রীরা টিকিট পেতে হিমশিম। ভারত সীমান্তের গেদে আর বাংলাদেশ সীমান্তে দর্শনায় ইমিগ্রেশন-কাস্টমস কর্মীরা তৎপর। চেকিং-এর সময় কমানোর চেষ্টা। আগে লাগত আড়াই ঘন্টা, সেটা কমিয়ে দেড় ঘন্টা। কলকাতা স্টেশন থেকে ট্রেন ছাড়ছে শনি, সোম, মঙ্গল সকাল সাতটা দশ মিনিটে। ঢাকায় পৌঁছচ্ছে সন্ধে সাড়ে ছ’টায়। ঢাকা থেকে রওনা শুক্র, রবি, বুধ সকালে একই সময়ে। কলকাতা স্পর্শ করছে সেই সন্ধেয়। তার মানে সপ্তাহে যাতায়াত ছ’দিন। যাত্রীদের দাবি, ট্রেন আরও বাড়াতে হবে। এতে হচ্ছে না। দর্শনার স্টেশন মাস্টার লিয়াকত আলিকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, যাত্রীরা এত নির্ভীক হলেন কী করে। তাঁর সহাস্য জবাব, মুক্তি যুদ্ধে পাকিস্তানকে হটিয়ে বাংলাদেশ উদ্ধার করেছি, জঙ্গিদের উটকো ঝামেলায় আমরা ভয় পাব কেন! সন্ত্রাস তো শুধু বাংলাদেশের নয় গোটা বিশ্বের ইস্যু। যাত্রীরা সগর্বে বলছে, কোনও কিছুতেই আমরা ডরাই না। ঘর বন্দি হব কীসের জন্য।

আফসোস একটাই, ট্রেনে ভারতের যাত্রী কম। সিংহভাগ জুড়ে বাংলাদেশি। ভারতীয় যাত্রী অবশ্য আগের চেয়ে বেড়েছে। আরও বৃদ্ধির আশা। আর কিছু না হোক বর্ষায় পদ্মার ইলিশ খেতে তো যেতে পারে। এক পক্ষ আসবে যাবে, অন্য পক্ষ ঘরকুনো হয়ে বসে থাকবে সেটা কীকরে হয়। পুজোর ছুটিতে কলকাতার বাঙালি ছুটোছুটি তো কম করে না। দেশ চষে বেড়ায়। তালিকায় বাংলাদেশ যুক্ত হলে ক্ষতি কী। এক তরফা যাতায়াতে বন্ধুত্ব গাঢ় হয় না। দু’পক্ষকেই উদ্যোগী হতে হয়। জঙ্গিরা বুঝুক, দু’দেশের মৈত্রীর জোর কতটা। ঢাকা সফরের খরচও বেশি নয়। ট্রেনে তিনটি ভাগ। অর্ডিনারি, এসি চেয়ার কার, কেবিন। অর্ডিনারিতে যাতায়াত মাত্র ৮০০ টাকায়। চেয়ার কার দেড় হাজার, কেবিনে আড়াই হাজার। এত কমে ভারতের কোথাও বেড়ানো যায় না। সাধ্যের মধ্যে হোটেলও আছে। মাত্র দেড় হাজার টাকায় এসি ডাবল বেডের রুম পাওয়া যায়। ঢাকা থেকে রবীন্দ্রনাথের শিলাইদহ যাওয়ার বাস আছে। যেতে ঘণ্টে চারেক। বাসে করে গিয়ে চাঁদিপুরে আশ মিটিয়ে ইলিশ খাওয়া যেতে পারে। বরিশালের প্রকৃতির তুলনা নেই। এত সবুজ আর কোথায়। নদীর তরঙ্গ সমুদ্রকে হার মানায়। কবি জীবনানন্দ দাশের জন্মভূমি বলে কথা। ঢাকা থেকে রাতে লঞ্চে উঠলে সূর্য ওঠা ভোরে বরিশাল। চট্টগ্রাম, সিলেট, কক্সবাজার অত্যন্ত মনোরম স্থান।

মৈত্রী এক্সপ্রেস দু’টি। একটি বাংলাদেশের, অন্যটি ভারতের। বাংলাদেশের ট্রেনটার সাজসজ্জা বেশি। ভারতেরটা আর পাঁচটা ট্রেনের মতই সাধারণ। বাংলাদেশের ট্রেন দু’বার আসে, দু’বার যায়। ভারতেরটার যাতায়াত একবার করে। আগে বাংলাদেশের ট্রেন কর্মীদের ক্ষোভ ছিল। তাঁদের বেতন ভারতের রেল কর্মীদের থেকে অনেক কম হওয়ায়। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই ফাঁক পূরণ করেছেন। ৪৫০ যাত্রীর জায়গা ট্রেনে। আগে টিকিট না কাটলে অসুবিধা। ট্রেন যদি আরও বাড়ে যাত্রীরা খুশি হবে। জঙ্গিরা হাত কামড়াবে।

আরও পড়ুন

বাউলদের মার বাংলাদেশে, আখড়ায় আগুন

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Train Dhaka-Kolkata Maitree Express
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE