Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

উন্নয়নের সড়কে হাসিনার ভরসা সড়কমন্ত্রীই

দ্বিতীয় দফায় সরকারে এসে সড়ক, সেতু ও পরিবহণের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রক তাঁর হাতে তুলে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রবিবার সেই ওবায়েদুল কাদেরের কাঁধে দলের সাধারণ সম্পাদকের গুরুদায়িত্বও অর্পণ করল হাসিনার দল আওয়ামি লিগ।

সম্মেলন মঞ্চে দলের নতুন সাধারণ সম্পাদক ওবায়েদুল কাদেরের সঙ্গে আওয়ামি লিগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা। রবিবার। — নিজস্ব চিত্র

সম্মেলন মঞ্চে দলের নতুন সাধারণ সম্পাদক ওবায়েদুল কাদেরের সঙ্গে আওয়ামি লিগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা। রবিবার। — নিজস্ব চিত্র

কুদ্দুস আফ্রাদ
ঢাকা শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০১৬ ০৩:০০
Share: Save:

দ্বিতীয় দফায় সরকারে এসে সড়ক, সেতু ও পরিবহণের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রক তাঁর হাতে তুলে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রবিবার সেই ওবায়েদুল কাদেরের কাঁধে দলের সাধারণ সম্পাদকের গুরুদায়িত্বও অর্পণ করল হাসিনার দল আওয়ামি লিগ। রবিবার দলের ২০তম সম্মেলনের শেষ দিনে বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম তাঁর নাম প্রস্তাব করার পরে দ্বিতীয় কোনও নাম উঠে আসেনি। সর্বসম্মতিতে নির্বাচিত হয়ে ৬৪ বছরের কাদের পা ছুঁয়ে সালাম করেন অষ্টম বারের জন্য দলের সভানেত্রী নির্বাচিত হওয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে।

শনিবার সম্মেলনে নিজের বক্তৃতায় দারিদ্র-অপুষ্টির চ্যালেঞ্জকে মোকাবিলা করে এক উন্নত ও আধুনিক বাংলাদেশ গড়ে তোলার ঘোষণা করেছিলেন শেখ হাসিনা। রবিবার সকালে দলের কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বার্তা দেন— জোট বাঁধো তৈরি হও। ২০১৯-এর ভোটের কথা মাথায় রেখে মানুষের কাছে যাও। সাত বছরের সরকারের সাফল্যের কথা প্রচার করো।

সেই সাফল্যের তালিকায় কঠোর হাতে সন্ত্রাস মোকাবিলা, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও শাস্তি কার্যকরের বিষয়গুলি যেমন রয়েছে, তেমনই রয়েছে পদ্মা ও মেঘনা সেতু, ঢাকায় মেট্রো রেল, উড়াল পুল, দেশজুড়ে একাধিক বহু লেনের সড়ক ও নতুন নতুন উপনগরী গড়ে তোলার পরিকল্পনা— যেগুলির কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। মন্ত্রী হিসেবে এগুলি দেখভালের দায়িত্বও ওবায়েদুল কাদেরের। ১৯৭৫-এ সেনা অভ্যুত্থানে শেখ মুজিবুর রহমান নিহত হওয়ার পরে কঠিন সময়ে দলের ছাত্র সংগঠন ছাত্র লিগের দায়িত্ব সামলেছেন কাদের। তার পরে ধাপে ধাপে দলের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য হিসেবে উঠে এসেছিলেন মাঠে নেমে কাজে অভ্যস্ত এই নেতা।

দলের নেতারা আশা করছেন, সংগঠনের দায়িত্ব নেওয়ার পরে বিভিন্ন শাখায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মোকাবিলায় কার্যকরী ব্যবস্থা নেবেন ওবায়েদুল কাদের। ছাত্র লিগের একাধিক গোষ্ঠীর সংঘর্ষে মাঝে মধ্যেই কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় উত্তাল হয়ে ওঠে। লাঠি-ছুরির পাশাপাশি আগ্নেয়াস্ত্রও উঠে আসে ছাত্রকর্মীদের হাতে। বর্ষীয়ান এক নেতা বলেন, ‘‘এক শ্রেণির কর্মীদের চাঁদাবাজি ও তোলাবাজিতে কাদের যদি কিছুটা লাগাম দিতে পারেন, সাধারণ ভোটারদের মধ্যে দলের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হতে পারে।’’

এ দিন নির্বাচনের আগে শেখ হাসিনা বলেন— ‘‘সত্তরে পা দিলাম। প্রধানমন্ত্রী ও দলের সভাপতির দায়িত্ব এক সঙ্গে সামলানো কঠিন হয়ে পড়ছে। আমাকে এ বার অব্যাহতি দিন।’’ কিন্তু প্রতিনিধিরা তা শোনেননি। সভাপতি হিসাবে তাঁর নাম প্রস্তাব করা হলে সর্বসম্মতিতে পাশ হয়। ১৯৮১ সালে প্রথম আওয়ামি লিগের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন শেখ হাসিনা। এর পরে সাতটি মেয়াদে ৩৫ বছর টানা সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।

এ বারের সম্মেলনে কাউন্সিলর হিসেবে হাজির ছিলেন শেখ পরিবারের তৃতীয় প্রজন্ম হাসিনা-পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়। তাঁকে এ বার দলের নেতৃত্বে আনা হতে পারে বলে কানাঘুষো ছিল। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা প্রতিনিধিদের একটা অংশও জয়ের হাতে দলের কিছু দায়িত্ব তুলে দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করেছিলেন। সূত্রের খবর, জয় নিজেই সে প্রস্তাব খারিজ করে নেতৃত্বকে জানিয়েছেন— বিদেশে থেকে তিনি দেশে রাজনীতি করতে চান না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Obaidul Quader Sheikh Hasina Awami league
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE