Advertisement
০৩ মে ২০২৪
Bangladesh News

ভাবীকালের নেতারা তৈরি, অনেকটা নিশ্চিন্ত হাসিনা

পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের আবদার ফেলতে পারেননি মা শেখ হাসিনা। তাঁর কথা রাখতেই ঢাকায় আওয়ামি লিগের সদর দফতরে কম্পিউটার বসিয়েছিলেন ১৯৯১তে। ম্যানুয়ালের বিলম্ব কাটিয়ে তখনই ডিজিটালের দুর্বার গতি।

সজীব ওয়াজেদ, শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদের।

সজীব ওয়াজেদ, শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদের।

অমিত বসু
শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০১৬ ১৩:৩৪
Share: Save:

পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের আবদার ফেলতে পারেননি মা শেখ হাসিনা। তাঁর কথা রাখতেই ঢাকায় আওয়ামি লিগের সদর দফতরে কম্পিউটার বসিয়েছিলেন ১৯৯১তে। ম্যানুয়ালের বিলম্ব কাটিয়ে তখনই ডিজিটালের দুর্বার গতি। ২০০৮-এর নির্বাচনী ইশতেহারে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রতিশ্রুতি আজ সত্যি। স্বপ্নপূরণের নায়ক জয়। তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা হিসেবে তাঁর দক্ষতা তুলনাহীন। এক দিকে উদ্ভাবনী শক্তি, অন্য দিকে কর্মনিষ্ঠা। সরকারি কাজ এগোচ্ছে তরতরিয়ে। অক্টোবরে দু’সপ্তাহ দেশের বাইরে ছিলেন হাসিনা। বিঘ্ন ঘটেনি প্রধানন্তীর দায়িত্ব পালনে। বিদেশে বসেই ই-ফাইলিংয়ে ৫১টি ফাইলের নিষ্পত্তি। জরুরি নির্দেশও। তথ্যপ্রযুক্তিতে অভাবনীয় অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ‘আইসিটি ফর ডেভেলপমেন্ট’ পুরস্কার পেয়েছেন জয়। গর্বিত মা হাসিনা। এক মাত্র ছেলের জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন। বলেছেন, ‘১৯৭১-এ মুক্তিযুদ্ধের মতো দুঃসময়ে আল্লাহ্ আমায় এমন সুসন্তান দেওয়াতে আমি শুকরিয়া জানাই।’

জয় কিন্তু লাজুক। সামনে আসতে চায় না। নেপথ্যে থেকে আরব্ধ কাজ করাটাই পছন্দ। ২২-২৩ অক্টোবর ঢাকায় আওয়ামি লিগের বিশতম জাতীয় সম্মেলনে চুপচাপ বসেছিলেন দর্শকাসনে। দেখছিলেন, শুনছিলেন, বলছিলেন না কিছুই। এটাই তাঁর স্বভাব। হাত-মাথা কাজ করে, মুখ বন্ধ থাকে। তিনি না চাইলেও দলের নেতা-কর্মীরা তাঁকে ছাড়েননি। টেনেটুনে মঞ্চে তুলেছেন। চেষ্টা করেও নীচে পড়ে থাকতে পারেননি। উঁচুতে উঠতে হয়েছে। তিনি যে এক দিন আকাশ ছোঁবেন সে বিষয়ে নিশ্চিত না হওয়ার কারণ নেই। জয় শুধু হাসিনার নয়, দেশবাসীর অহঙ্কার। তাঁর হাত ধরে দেশটা ডিজিটাল না হলে, এ ভাবে উন্নয়নের স্রোত কি বইতে পারত!

উদ্বেগমুক্ত হাসিনা। এমন উত্তরসূরী ক’জন পান। আওয়ামি লিগের প্রতীক নৌকা। ৩৫ বছর ধরে তার কাণ্ডারি তিনি। এবার ছুটি চাইছেন। চাইলেই বা দিচ্ছে কে। দুরন্ত দৌড়ের মাঝে থাকলে চলবে কেন। ক্লান্তি তাঁকে ক্ষমা করতে বাধ্য। তাঁর বয়স এমন কিছু নয়। সবে মাত্র সত্তরের কোঠায়। আশিতে প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি হয়ে অনেকে দিব্যি চালিয়েছেন ভারত, আমেরিকা ছাড়াও অন্য অনেক দেশে। জয় যত সময় পান তত ভাল। আরও পরিণত হতে পারবেন। মনটা সবুজ সজীব থাকলেই হল।

হাসিনার চিন্তা নেই। পাশে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে যাঁকে পেয়েছেন তিনি যোগ্যতম ব্যক্তি। সরেছেন সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। এসেছেন ওবায়দুল কা্দের। ছাত্র রাজনীতিতে তাঁর হাতেখড়ি। ছাত্র লিগের সভাপতি ছিলেন। নোয়াখালি থেকে সাংসদ নির্বাচিত। বর্তমানে পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী। তাঁর কাজের সাফল্য নজরে পড়ার মতো। পদ্মা সেতু, ঢাকা উড়ালপুল, ঢাকা-চট্টগ্রাম বা ঢাকা-মিলেট সড়ক নির্মাণ তাঁরই তত্ত্বাবধানে। সরকারি প্রশাসনে কৃতিত্ব দেখিয়েছেন। দল পরিচালনাতেও যে ছাপ ফেলবেন এমন আশা করাই যায়।

সভাপতিমণ্ডলীতে নতুন মুখ অনেক। সত্যিই যাঁদের শান আছে, তারাই স্থান পেয়েছেন। স্বজন পোষণ নেই। নবীণ সদস্য নুরুল ইসলাম নাহিদ, আবদুর রজ্জাক, ফারুক খান, আবদুল মান্নান খান, রমেশচন্দ্র সেন, পীযূষকান্তি ভট্টাচার্য। পুরোনদের মধ্যে থাকছেন সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মহম্মদ নাসিম, কাজি জাফর উল্লাহ, সাহারা খাতুন, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। নতুন-পুরোন মেশানো সভাপতিমণ্ডলী যথেষ্ট শক্তিশালী। সাংগঠনিক শিকড় গভীরে ছড়ানোর বন্দোবস্ত।

পীযূষকান্তির সভাপতিমণ্ডলীতে জায়গা হওয়াটা সবচেয়ে আশ্চর্যের। তিনি নতুন শুধু নন। দলের ওপর মহলে একবারেই অপরিচিত। তাঁকে চেনার উপায় কোথায়। তিনি যে থাকেন ঢাকা থেকে অনেক দূরে যশোহরে। তাও জেলার সভাপতি নন, সহ-সভাপতি মাত্র। এমন একজনকে ঢাকায় তুলে এনে শীর্ষ ক্ষমতার অলিন্দে জায়গা করে দেওয়ায় বিস্ময়। পীযূষকান্তি আওয়ামি লিগের সেরা আবিষ্কার। দলের শীর্ষ নেতৃত্ব প্রমাণ করল, সবখানে তাঁদের চোখ। দেশ উজাড় করে ঠিক মানুষকে বাছতে কোনও অসুবিধে নেই।

আরও পড়ুন

বাংলাদেশের মুক্তমনা প্রকাশক দীপন খুনের এক বছর

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Sheikh Hasina Sajib Wajed Kader
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE