বাংলাদেশে এ দিন যেন সব ফুল ফুটেছিল শহিদের প্রতি শ্রদ্ধায়। লাখো শহিদের প্রতি রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শ্রদ্ধা জানান ঢাকার অদূরে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে। ফুলে ফুলে ভরে উঠেছিল সৌধ। ভরে উঠেছিল বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, সশস্ত্র বাহিনী-সহ আপামর সাধারণ মানুষের ভালবাসায়।
৪৬তম বিজয় দিবসে প্রথম প্রহরের এ শ্রদ্ধার মিছিলে সামিল হয়েছিলেন মুক্তিযোদ্ধারা, আওয়ামি লিগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী, সরকারের মন্ত্রী ও মেয়ররা। যোগ দেন স্বাধীনতা যুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করা মিত্র বাহিনীর ভারতীয় সেনারাও।
স্মৃতির মিনার এর পরই ভরে উঠেছিল হাজারো মানুষের বাঁধভাঙ্গা স্রোতে। যাঁরা বলেছেন, অর্জনের পথে হাঁটছে বাংলাদেশ। বিজয় দিবসে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাতে আসা হাজারো মানুষের মনের কথা, মুখের কথা ছিল- গত ৪৫ বছরে বারবার হোঁচট খেলেও, শহিদের স্বপ্নের বাংলাদেশ এখন রূপ পেতে শুরু করে দিয়েছে, চলতে শুরু করেছে দৃঢ় পায়ে।
জাতীয় স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
আওয়ামি লিগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, “স্বাধীনতা পাওয়ার পরও, পাকিস্তানি ধারায় দেশ চলেছিল ২১ বছর। এখন সময় এসেছে বিজয় সংহত করার।” বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী জানান, যুদ্ধাপরাধীদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার রূপরেখা চূড়ান্ত করেছে সরকার।
সকাল গড়িয়ে দুপুর, শ্রদ্ধার স্রোত ক্রমশ বেড়েছে। শ্রদ্ধা জানিয়েছে প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি, বিএনপি-সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। বেলা ১১টার পরে আসেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। এ সময় বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের নেতারা অভিযোগ করেন, ভিন্নমত পোষণ করার কারণেই সরকার অনেক খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাকে দমন করার চেষ্টা করছে। আর মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে সব দলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির নেতারা। শ্রদ্ধা জানায় বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের শরিক এলডিপি-সহ অন্যান্য দলও।
স্মৃতিসৌধের পর, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আরও পড়ুন, অনেক রক্তের দামে কেনা স্বাধীনতা, লাল-সবুজ আবেগে ভাসছে বাংলাদেশ
বিজয় কুচকাওয়াজে ভারত ও রাশিয়ার সেনারা
সকাল ১০ টায় বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজে অভিবাদন গ্রহণ করেন রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ আব্দুল হামিদ। প্যারেড অনুষ্ঠান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা-সহ ভারত ও রাশিয়ার যোদ্ধারা উপস্থিত ছিলেন। জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে স্বশস্ত্র বাহিনীর তত্ত্বাবধানে এই প্যারেড অনুষ্ঠিত হয়।
প্রতি বছরের মতো মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় আয়োজিত এই অনুষ্ঠানের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিল সেনাবাহিনীর নবম পদাতিক ডিভিশন। যার নেতৃত্ব দেন নবম পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল ওয়াকার উজ জামান।
বিমান ও নৌ বাহিনীর পাশাপাশি কুচকাওয়াজে অংশ নেয় পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও কোস্টগার্ডের সদস্যরা। জাতীয় পতাকা-সহ বিভিন্ন পতাকা নিয়ে দক্ষ নিয়ন্ত্রণে আকাশ থেকে নেমে আসেন প্যারাট্রুপাররা।
সাধারণ মানুষের ফুলের ভালোবাসা
এই প্রর্দশনীর সময় ভারতীয় বিমান বাহিনীর প্রাক্তন গ্রুপ ক্যাপ্টেন এইচএস দেশাই আনন্দবাজারের সঙ্গে আলাপে ফিরে যান ১৯৭১ সালে। যিনি নিজে বোমা মেরে এয়ারবেস তছনছ করে ভেঙ্গে দিয়েছিলেন পাকিস্তান বিমান বাহিনীর মেরুদণ্ড।
অনুষ্ঠানের সবচেয়ে আকর্ষণীয় অংশ ছিল বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ফ্লাইপাস্ট ও এরোবেটিক ডিসপ্লে। এতে দর্শকদের নজর কাড়ে চতুর্থ প্রজন্মের প্রশিক্ষণ বিমান ও বিমান বাহিনীর গর্ব মিগ ২৯।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy