অভিজিৎ ব্লগার।
নিজেরা দেশ ছেড়ে যেতে বাধ্য হলেও কোনও ঘৃণার বার্তা না-ছড়াতে বদ্ধপরিকর তাঁরা। বাংলাদেশে মৌলবাদী হামলার আশঙ্কায় দেশত্যাগী ব্লগার-লেখকদের যোগাযোগের সেতু নতুন ওয়েবসাইটটি অন্তত তা-ই বলছে।
ওয়েবসাইটের প্রচ্ছদে তিন বছর আগে নিহত ব্লগার-লেখক অভিজিৎ রায়ের লেখার উদ্ধৃতি— ‘আমি নাস্তিক। কিন্তু আমার আশপাশের বহু কাছের মানুষই মুসলিম। তাঁদের উপরে রাগ নেই, নেই কোনও ঘৃণা। প্যালেস্তাইন বা কাশ্মীরে মুসলিম জনগোষ্ঠীর উপরে আঘাত কখনও সমর্থন করি না। এটাই আমার মানবতার শিক্ষা।’ বাংলাদেশে স্বাধীন মনন ও মৌলবাদ-বিরোধী চর্চার অন্যতম মুখ অভিজিৎকে সামনে রেখেই দেশহারা ‘নাস্তিক’দের নিজেকে মেলে ধরার এ এক নতুন পদক্ষেপ। দেড় যুগ আগে অভিজিৎ প্রতিষ্ঠিত ‘মুক্তমনা’ ব্লগসাইটটির সংগঠকেরা খানিকটা সে-ভাবেই বিষয়টি দেখছেন।
ধর্ম-বিরোধী তকমার জেরে ভারতের মতো বাংলাদেশেও সম্প্রতি বহু লেখক-সমাজকর্মী খুন হয়েছেন। ২০১৫-র ২৬ ফেব্রুয়ারি অভিজিতের খুনের কয়েক মাস বাদে তাঁর বইয়ের এক প্রকাশক ফয়সাল আরেফিন দীপনকেও খুন করা হয়। আর এক প্রকাশক আহমেদুর রশিদ চৌধুরি টুটুলও হামলায় জখম হয়ে বিদেশে আশ্রয় নিয়েছেন।
এই পটভূমিতেই ‘মুক্তমনা’র সম্পাদকদের চেষ্টায় সদ্য ডানা মেলেছে ‘অভিজিৎ ডট মুক্তমনা ডট কম’। সাইটটিতে অভিজিতের সব লেখা জড়ো করার চেষ্টা করেছেন বাংলাদেশের বাইরে থাকা সংগঠকেরাই। রায়হান আবিরের মতো অভিজিতের বইয়ের কোনও সহলেখক বা ইব্রাহিম খলিল সবাক প্রমুখ অনেকেই এই কাজ করছেন।
বিজ্ঞান-সমাজচেতনা বিষয়ক ব্লগার-লেখক তথা অভিজিতের স্ত্রী বন্যা আহমেদ ‘মুক্তমনা’র অন্যতম সম্পাদক। ঢাকার বইমেলায় অভিজিতের উপরে হামলার সময়ে তিনি মারাত্মক ভাবে জখম হয়েও প্রাণে বাঁচেন।
আমেরিকাবাসী বন্যা ফোনে বলছিলেন, ‘‘অভিজিতের জনপ্রিয়তা বোধ হয় এখন আরও বেড়েছে।
তাই ওঁর ভাবনাগুলো একত্র করে মেলে ধরাটা খুব জরুরি ছিল।’’
বন্যার কথায়, খুব সাধারণ ঘরোয়া জীবনের মধ্য থেকেই অভিজিৎ বৌদ্ধিক চর্চা করতেন। ওঁর জীবন নানা ভুল ধারণা ভাঙতেও সাহায্য করবে। বাংলাদেশে
ধার্মিকদের একাংশের স্পর্শকাতর বিবর্তনবাদের তত্ত্ব নিয়েও একটি ওয়েবসাইট খোলার পরিকল্পনা রয়েছে ‘মুক্তমনা’দের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy