অনুৎপাদক সম্পদের বিপুল বোঝায় নাজেহাল রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি। আর এ বার ওই সমস্যার ভূত পুরোদমে তাড়া করছে বেসরকারি ব্যাঙ্কগুলিকেও। গত তিন ত্রৈমাসিকে তাদের অনুৎপাদক সম্পদ শুধু বাড়েইনি, তা বৃদ্ধি পেয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের থেকেও বেশি হারে। পরিস্থিতি এতটাই ঘোরালো যে, অর্থনীতির চাকা দ্রুত না-ঘুরলে, বেসরকারি ব্যাঙ্কগুলি প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার ঋণ খাতা থেকে মুছে ফেলতে বাধ্য হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
রয়টার্সের এক সমীক্ষা অনুযায়ী, গত তিনটি ত্রৈমাসিকে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির অনুৎপাদক সম্পদ বেড়েছে ৬.২, ৩.২ এবং ৮.৮ শতাংশ হারে। সেখানে শেয়ার বাজারে নথিভুক্ত ১৫টি বেসরকারি ব্যাঙ্কে তা বেড়েছে ৭.৫, ৬.৯ এবং ১০.৪ শতাংশ।
বিশেষজ্ঞদের মতে, অনুৎপাদক সম্পদের চাপে বেশ কিছু দিন ধরেই নতুন করে ধার দেওয়ার ক্ষেত্রে বেশি সাবধানী হয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক। ফিরিয়ে দিয়েছে অনেক ঋণের আবেদনও। সেই সুযোগে বাজার দখল করতে ঝাঁপিয়েছে আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক, অ্যাক্সিস ব্যাঙ্কের মতো বেসরকারি সংস্থাগুলি। তা করতে গিয়ে অনেক ক্ষেত্রেই বিভিন্ন ইস্পাত সংস্থা, পরিকাঠামো নির্মাতা, বিদ্যুৎ উৎপাদনকারীকে মোটা অঙ্কের ধার দিয়েছে তারা। যা এখন সময়ে ফেরত পেতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে তাদের। ফলে দ্রুত বাড়ছে অনুৎপাদক সম্পদ।
এমনিতে ভারতের বহু শিল্প সংস্থাই ধারের গলাজলে ডুবে। উন্নয়নশীল দেশগুলির মধ্যে কর্পোরেট ঋণ এ দেশেই অন্যতম বেশি। ফলে সময়ে ধার শোধের ক্ষমতাও তাদের কম। এই পরিস্থিতিতে বিভিন্ন পরিকাঠামো, ইস্পাত, বিদ্যুৎ সংস্থাকে বিপুল অঙ্কের ঋণ দিয়ে বেকায়দায় পড়েছে বেসরকারি ব্যাঙ্কগুলি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জমি কিংবা জিএসটি বিল পাশের মতো সংস্কার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হলে, তবু আশার আলো দেখা যেত। কারণ, অর্থনীতির হাল ফিরলে, ঋণ শোধ করা সহজ হত সংস্থাগুলির পক্ষে। কিন্তু এখন রাজনৈতিক আকচা-আকচিতে তা-ও না হওয়ায় আরও সমস্যায় পড়েছে ব্যাঙ্কগুলি।
অনুৎপাদক সম্পদের সমস্যা অনেক দিনই কুরে খাচ্ছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিকে। তুলনায় পরিষ্কার ছিল বেসরকারি ব্যাঙ্কের খাতা। কিন্তু একই সমস্যা এখন সেখানেও ভিড় করায় সার্বিক ভাবেই ব্যাঙ্কিং শিল্পের পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে বলে বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy