পর্যটন শিল্পে লগ্নি টানতে উৎসাহ ভাতা দেওয়ার কথা আগেই জানিয়েছে রাজ্য। এ বার পশ্চিমবঙ্গের পর্যটন সম্ভার বিজ্ঞাপনে তুলে ধরতে শাহরুখ খানকে তার মুখ করতে চায় তারা। কিন্তু সংশ্লিষ্ট শিল্পমহলের প্রশ্ন, শুধু এই ঘোষণা আর বাহ্যিক আড়ম্বরে চিঁড়ে ভিজবে? যেখানে পর্যটন-পরিকাঠামোয় খামতির কথা কার্যত মেনে নিতে বাধ্য হচ্ছে রাজ্য? বারবার অভিযোগ উঠছে রাস্তা, হোটেল, প্রশিক্ষিত গাইড কোনওটাই না থাকার?
অবশ্য পরিকাঠামো না-থাকার এই সমস্যা মেনে নিয়েই পাঁচ বছরের ‘ভিশন ডকুমেন্ট’ বা পর্যটন নীতি তৈরি করতে আন্তর্জাতিক উপদেষ্টা সংস্থা এইচভিএস কনসালট্যান্ট-কে নিয়োগ করেছে রাজ্য। যেখানে পরিকাঠামো গড়ায় জোর দেওয়া হবে।
রাজ্যে পর্যটক টানতে প্রতি বছর ‘ডেস্টিনেশন ইস্ট’ নামে সম্মেলন আয়োজন করে সিআইআই। আগামী ৫-৬ ফেব্রুয়ারি তা পঞ্চমবার বসবে। সেই উপলক্ষে মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের পর্যটন সচিব অজিত বর্ধন এবং সিআইআইয়ের পর্যটন কমিটির বিজয় ধাওয়ান। সেখানে ধাওয়ানের বক্তব্য, কলকাতা থেকে দু’ঘণ্টায় সুন্দরবন পৌঁছনোর উপযোগী পরিকাঠামো থাকা জরুরি। আর বর্ধন মেনে নেন যে, অনেক জায়গাতেই ‘লাস্ট মাইল কানেক্টিভিটি’ বা একেবারে শেষ পর্যন্ত পৌঁছনোর রাস্তা তৈরি জরুরি।
পর্যটন শিল্পের অভিযোগ, দীর্ঘ সড়ক যাত্রায় মাঝেমধ্যে বিশ্রাম নেওয়ার উপযুক্ত পরিকাঠামোও কার্যত এখানে নেই। বর্ধনও বলছেন, প্রতি ৩০ কিলোমিটার অন্তর রাস্তার ধারে এমন ব্যবস্থা (যেমন, মোটেল) থাকা দরকার। আগামী ছ’মাসে বেশ কয়েকটি জাতীয় সড়কের ধারে তা গড়ে উঠবে বলেও তাঁর দাবি।
শিল্পমহল চায়, কলকাতায় একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রও তৈরি হোক। ধাওয়ানের দাবি, কলকাতা বিমানবন্দরে আসা সব উড়ানের জন্যই কমানো হোক জ্বালানি কর।
এই সমস্ত বিষয়ে নজর না-দিয়ে শুধু বলিউড তারকাকে টিভি বিজ্ঞাপনের মুখ করলে কতটা লাভ হবে, তা নিয়ে সন্দিগ্ধ শিল্পমহল। তাদের মতে, বিপণন দূত হিসেবে অমিতাভ বচ্চন গুজরাত-পর্যটনের ছবি দেশের ঘরে-ঘরে পৌঁছে দিয়েছেন। একই ভাবে শাহরুখকে বাংলার মুখ করলে, হয়তো এ রাজ্যের পর্যটন প্রচার পাবে। কিন্তু তার পর এখানে পা রাখা পর্যটক যদি দেখেন হোটেল বা রাস্তা নেই, তবে তা কি আদৌ লাভজনক হবে? আর সেই কারণেই প্রচারের পাশাপাশি পরিকাঠামোয় জোর দেওয়ার কথা এত বার বলছে তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy