অবশেষে নগদ টাকায় সোনা কেনায় উৎসে কর কাটার নিয়ম সংশোধন করল কেন্দ্রীয় সরকার। এখন থেকে ৫ লক্ষ বা তার বেশি টাকার সোনার গয়না অথবা ২ লক্ষ বা তার বেশি টাকার কাঁচা সোনা (বুলিয়ন) নগদে কিনলে তবেই ১ শতাংশ হারে ‘ট্যাক্স কালেকটেড অ্যাট সোর্স’ (টিসিএস) দিতে হবে। আগে উভয় ক্ষেত্রেই ২ লক্ষ বা তার বেশি টাকার লেনদেনের ক্ষেত্রে ক্রেতার উপর ওই কর বসিয়েছিল কেন্দ্র।
কেন্দ্রীয় সরকার ২০১২ সালে নগদ টাকায় কাঁচা সোনা বা সোনার গয়না কেনা নিয়ন্ত্রণ করতে লেনদেনের উপর কর আদায় ব্যবস্থা চালু করে। সেই সময় থেকেই চালু নিয়ম অনুযায়ী ২ লক্ষ বা তার বেশি টাকার কাঁচা সোনা বা সোনার গয়না কিনলে ক্রেতাদের তার উপর ১ শতাংশ হারে টিসিএস দিতে হত। এ বার আইন সংশোধন করে গয়নার ক্ষেত্রে ওই ঊর্ধ্বসীমা ৫ লক্ষ টাকা করা হল। স্বর্ণশিল্প মহল কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তে খুশি। তারা জানিয়েছে, এই সীমা ৫ লক্ষ টাকা করার দাবিই তারা করেছিল, যাতে এ বার সিলমোহর দিল কেন্দ্র।
এ দিকে এ বারের বাজেটে সোনার গয়নার উপর ১ শতাংশ হারে যে-উৎপাদন শুল্ক কেন্দ্র বসিয়েছে, তার বিরুদ্ধে ফের অভিযোগ জানাতে আগামী ৪ জুন স্বর্ণশিল্পের বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা দিল্লি যাচ্ছেন। উৎপাদন শুল্কের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে একটি বিশেষ কমিটিও গঠন করেছে কেন্দ্র। গয়না শিল্প মহল সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি গয়না ব্যবসায়ীদের আশ্বাস দিয়েছেন যে, ওই কমিটির সুপারিশ তিনি মানবেন। প্রসঙ্গত বাজেটে এই উৎপাদন শুল্ক চাপানোর প্রতিবাদে গত ২ মার্চ থেকে কার্যত ১০ এপ্রিল পর্যন্ত ঝাঁপ বন্ধ ছিল সব গয়নার দোকানের।
স্বর্ণশিল্প বাঁচাও কমিটির কার্যকরী সভাপতি বাবলু দে বলেন যে, গয়নার ক্ষেত্রে উৎপাদন শুল্ক কেন্দ্র বাজেটে চালু করলেও বিষয়টি অতীতে কেন্দ্রেরই নেওয়া একাধিক সিদ্ধান্তের পরিপন্থী। যেমন, ২০১৪ সালে কেন্দ্রীয় সরকারই হাতে তৈরি গয়নাকে হস্তশিল্পের মর্যাদা দিয়েছে। হস্তশিল্প কিন্তু উৎপাদন শুল্কের আওতায় নেই। তাই এখন হাতে তৈরি গয়নার উপর কী ভাবে উৎপাদন শুল্ক চালু করা হল, সেই প্রশ্নই বিশেষ কমিটির কাছে তুলবেন বাবলুবাবুরা।
এ ছাড়া উৎপাদন শুল্কের ব্যাপারে আরও একটি বিষয় নিয়ে আপত্তি তুলেছেন গয়না ব্যবসায়ীরা। বাবলুবাবু বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারই বিজ্ঞপ্তি দিয়ে উৎপাদন শুল্কের ব্যাপারে ডিলারদের নথিভুক্তির শেষ তারিখ ঠিক করেছে ৩০ জুন। অথচ বলা হয়েছে, উৎপাদন শুল্ক দিতে হবে ১ মে থেকে। বাবলুবাবুদের জিজ্ঞাসা, ‘‘উৎপাদন শুল্ক তো ক্রেতাদের কাছ থেকে আদায় করে তবেই সরকারের ঘরে জমা দিতে হবে। নথিভুক্তির আগে কী ভাবে ডিলাররা তা আদায় করবে?’’ বাবলুবাবু জানান, এই ধরনের আরও বেশ কিছু পরস্পরবিরোধী বিষয় তাঁরা বিশেষ কমিটির কাছে তুলে ধরবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy