Advertisement
০৪ মে ২০২৪
বৈঠক তরাই ডুয়ার্স বাগান নিয়ে

পুজোয় ২০ শতাংশ হারেই বোনাস চা শ্রমিকদের

মজুরির ২০ শতাংশ হারেই পুজোর বোনাস পাবেন তরাই ও ডুয়ার্সের চা বাগান শ্রমিকেরা। ১৬ সেপ্টেম্বর সমস্ত বাগানের শ্রমিকদের বোনাস মিটিয়ে দেওয়া হবে। মালিক পক্ষ ও শ্রমিক ইউনিয়নের মধ্যে দু’দিনের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পরে রবিবার বিকেলে ওই হারে বোনাস দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০২:৫০
Share: Save:

মজুরির ২০ শতাংশ হারেই পুজোর বোনাস পাবেন তরাই ও ডুয়ার্সের চা বাগান শ্রমিকেরা। ১৬ সেপ্টেম্বর সমস্ত বাগানের শ্রমিকদের বোনাস মিটিয়ে দেওয়া হবে। মালিক পক্ষ ও শ্রমিক ইউনিয়নের মধ্যে দু’দিনের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পরে রবিবার বিকেলে ওই হারে বোনাস দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

২০১০ সাল থেকে একই হারে বোনাস পেয়ে চলেছেন শ্রমিকেরা। এ বারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। এটাই সর্বোচ্চ বোনাস বলে বাগান মালিকদের দাবি। তবে ডুয়ার্স ও তরাইয়ের ১৭৭টি চা বাগানের মধ্যে ২৮টি বাগানের আর্থিক অবস্থা ভাল নয় বলে সেই সমস্ত বাগানের শ্রমিকেরা ১১ থেকে ১৯ শতাংশ হারে বোনাস পাবেন বলে ঠিক হয়েছে। মালিকপক্ষ বোনাসের হার আরও কমাতে চাওয়ায় মালবাজারের দুটি চা বাগান মারাবাড়ি এবং কুমলাইয়ের শ্রমিকদের বোনাসের বিষয়টি এ দিনও ঠিক হয়নি। স্থানীয় স্তরে আলোচনা করে তা ঠিক করা হবে বলে জানানো হয়।

আর্থিক পরিস্থিতির সাপেক্ষে বাগানগুলিকে এ, বি, সি এবং ডি এই চারটি পর্যায়ে ভাগ করা হয়। এ দিনের বৈঠক শেষে মালিকপক্ষের সংগঠনের এক মুখপাত্র জানান, সব ধরনের বাগানেই ২০% হারে বোনাস দেওয়া হবে। তবে কয়েকটির আর্থিক পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ায় সেগুলির বোনাস হার দু’পক্ষ আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করবে।

শ্রমিকদের পাশাপাশি বাগানের কর্মীদের বোনাস কাঠামোও এ দিন ঠিক হয় বলে দাবি ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশনের। যে-সমস্ত কর্মী দশ হাজার টাকার উপরে বেতন পান, তাঁদের ক্ষেত্রেও দশ হাজার টাকার কুড়ি শতাংশ বোনাস স্থির হয়েছে বলে জানান ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশনের ডুয়ার্স শাখার ডেপুটি সেক্রেটারি সঞ্জয় বাগচি।

প্রসঙ্গত, ২০০৩ সাল থেকে বহু চা বাগানের আর্থিক অবস্থা মুখ থুবড়ে পড়ে। তার পরে বেশ কয়েক বছর বোনাস স্থির করা নিয়ে মালিক ও শ্রমিক পক্ষের মধ্যে কয়েক দফা বৈঠক হয়। চা বাগানগুলিকে ওই চারটি শ্রেণিতে ভাগ করে বোনাস কাঠামো স্থির হত। তবে ২০০৯ সালে ফের চা শিল্প ঘুরে দাঁড়াতে থাকে। সে কারণে বোনাস দেওয়ার জন্য চা বাগানের শ্রেণি বিভাজন না-দেখে ২০ শতাংশ হারে সমস্ত ক্ষেত্রে বোনাস দেওয়া শুরু হয়।

চা বাগান মালিকদের সংগঠন ইন্ডিয়ান টি প্ল্যান্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের মুখ্য উপদেষ্টা অমিতাংশু চক্রবর্তী বলেন, “এই বছর প্রথম দিকে বৃষ্টির ঘাটতি থাকায় সে ভাবে চা উৎপাদন করা সম্ভব হয়নি। পরে পাতা পেলেও দাম কমে যাওয়ায় আর্থিক ক্ষতির শিকার হতে হয়েছে মালিকদের। তবুও আমরা শ্রমিকপক্ষের দাবি মতো বোনাস দিচ্ছি।”

কুড়ি শতাংশ হারে বোনাস দেওয়ায় খুশি ডান-বাম সব শ্রমিক ইউনিয়ন। আরএসপি দলের চা শ্রমিক ইউনিয়ন ডুয়ার্স চা বাগান ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা গোপাল প্রধানের দাবি, এ বছর চা বিক্রি করে ভালই লাভ হয়েছে। সেই কারণে মালিকপক্ষও কুড়ি শতাংশ বোনাস দিতেই রাজি হয়েছেন।” এ আই সি সি টি ইউ-এর সাধারণ সম্পাদক বাসুদেব বসু জানান, সার্বিক ভাবে এই ২০% হারে বোনাসের সিদ্ধান্তে তাঁরা খুশি।

তৃণমূল চা শ্রমিক সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক অনিরুদ্ধ গোস্বামী বলেন, “১৭৭টি চা বাগান নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ১৭৫টি বাগানের ক্ষেত্রে বোনাসের বিষয়টির নিষ্পত্তি হয়েছে। তবে কিছু চা বাগান রুগ্ণ থাকায় মালিকপক্ষ ছাড় দেওয়ার দাবি তুলেছিলেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

tea estate torai dooars tea garden
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE