—ফাইল চিত্র।
ঠিকমতো প্রস্তুতি নিয়ে তবেই জিএসটি চালু করুক কেন্দ্র। দরকারে একটু রয়েসয়ে। নতুন কর জমানায় পা-রাখার আগে মোদী সরকারের কাছে এই আর্জি বারবার জানিয়েছিল রাজ্য। এখন জিএসটি চালুর পরে প্রথম বার কর ও রিটার্ন জমায় ভোগান্তি হতেই তাই দিল্লির দিকে তোপ দাগল নবান্ন। সোমবার এ নিয়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিকে চিঠি পাঠালেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র।
চিঠিতে অমিতবাবুর দাবি, জিএসটির প্রস্তুতিতে কোথায় খামতি রয়েছে, অবিলম্বে তা নিয়ে শ্বেতপত্র পেশ করুক কেন্দ্র। জিএসটি পরিষদের জরুরি বৈঠক ডাকা হোক এ নিয়ে। যাতে পরিস্থিতি সামাল দিতে কী করা উচিত, তার দিশা বাতলাতে পারেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রীরা।
জুলাইয়ে জিএসটি চালুর পরে প্রথম কর ও রিটার্ন দিতে গিয়েই বিপাকে পড়েছে শিল্প ও ব্যবসায়ীমহল। রবিবার ছিল প্রথম মাসের রিটার্ন ও কর জমার শেষ দিন। কিন্তু অভিযোগ, শনিবার থেকেই তথ্যপ্রযুক্তি পরিকাঠামো জিএসটিএনের সার্ভার বসে যাওয়ায় করদাতারা সমস্যায় পড়েন। বাধ্য হয়ে শনিবারই জমার শেষ তারিখ ২০ থেকে পিছিয়ে ২৫ অগস্ট করে কেন্দ্র।
কিন্তু অমিতবাবুর হুঁশিয়ারি, এখন থেকে উপযুক্ত ব্যবস্থা না-নিলে, আগামী মাসে ফের সমস্যা হবে। কারণ, ২০ সেপ্টেম্বর নাগাদ অগস্টের রিটার্ন এবং জুলাইয়ের তিনটি রিটার্ন জমা হবে। একসঙ্গে দেড় কোটি মানুষ কাজ সারতে চাইবেন। শেষের তিন-চার দিনেই বেশি কাজ হবে। ফলে ব্যবসায়ীরা এবং ছোট-মাঝারি সংস্থাগুলি ফের যন্ত্রণার শিকার হবে।
নর্থ ব্লক সূত্রের খবর, অমিতবাবুর এই চিঠিতে অস্বস্তিতে অর্থ মন্ত্রক। প্রথমত, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার নীতিগত ভাবে বরাবর জিএসটি-কে সমর্থন করেছে। ফলে এখন এই চিঠিকে স্রেফ রাজনৈতিক বলে উড়িয়ে দেওয়া শক্ত। দ্বিতীয়ত, অমিতবাবু অন্য রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদেরও তাঁর যুক্তি বলেছেন। বিজেপি শাসিত অনেক রাজ্যের অর্থমন্ত্রীও তাঁকে সমর্থন জানিয়ে বার্তা পাঠিয়েছেন জেটলির কাছে।
চিঠিতে অমিতবাবুর যুক্তি, জিএসটি চালুর আগে প্রস্তুতির অভাব নিয়ে তিনি বারবার সরব হয়েছেন। কিন্তু লাভ হয়নি। প্রস্তুতির খামতি নিয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশের জন্য তিনি বারবার অনুরোধ করলেও, সাড়া মেলেনি। কিন্তু তিনি যে আশঙ্কা করেছিলেন, এখন তা সত্যি হচ্ছে। অমিতবাবু জেটলিকে জানান, ‘‘শনিবার করদাতারা অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেননি। জিএসটিএন ছাড়া ব্যাঙ্কেও কর মেটাতে সমস্যা হয়েছে। ‘গেটওয়ে’তে সমস্যা ছিল। ব্যাঙ্কগুলি হাতে-হাতে চালান নেয়নি।’’
৯ সেপ্টেম্বর হায়দরাবাদে এমনিতেই পরিষদের বৈঠক হওয়ার কথা। অমিতবাবু তার আগেই জরুরি বৈঠকের দাবি তুলেছেন। চিঠিতে তাঁর যুক্তি, ‘‘জিএসটি ব্যবস্থা তৈরি কি না, তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। কারণ, রেজিস্ট্রেশন ব্যবস্থা থিতু হতে ২০-২৫ দিন লেগেছে। তা-ও খামতি আছে। নানা রকম সমস্যায় পড়তে হচ্ছে জিএসটির আওতায় না-থাকা ছোট ব্যবসায়ীদেরও।’’ আগামী দিনে এ সব সমস্যা মাত্রাছাড়া হতে পারে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy