কলকাতায় পড়ে ৩৯ হাজারেরও বেশি ফ্ল্যাট। গত বছরের তুলনায় প্রায় ৫% বেশি। যেগুলি বেচতে সময় লাগবে প্রায় তিন বছর। আবাসন শিল্পের পক্ষে উদ্বেগজনক এই ছবি তুলে ধরেছে বিশেষজ্ঞ সংস্থা নাইট ফ্র্যাঙ্কের গত ছ’মাসের এক সমীক্ষা। যেখানে এত ফ্ল্যাট অবিক্রিত পড়ে থাকার পেছনে ‘খলনায়ক’ হিসেবে উঠে এসেছে তিন কারণ। তুলনায় কম কর্মসংস্থানের সুযোগ, জিএসটি ও আবাসন আইন কার্যকর হওয়ায় দেরি।
ফ্ল্যাটের চাহিদায় টান দেশের অন্যান্য শহরেও স্পষ্ট। তবে নাইট ফ্র্যাঙ্কের অর্থনীতিবিদ স্যমন্তক দাসের মতে, কলকাতার ক্ষেত্রে এই ঘাটতি আরও প্রকট হয়ে উঠছে সার্বিক আর্থিক উন্নয়ন ফিকে হওয়ার কারণে। তাঁর কথায়, ‘‘যে কোনও জায়গায় মূলত কর্মসংস্থানের হাত ধরেই বাড়ে আবাসনের চাহিদা। কলকাতায় কাজ কম বাড়ছে। তাই সমস্যা আরও বেশি।’’ সঙ্গে রয়েছে জিএসটি জমানায় ক্রেতা, বিক্রেতাদের মধ্যে করের প্রভাব সম্পর্কে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ও এখনও পশ্চিমবঙ্গে আবাসন আইন চালু করা নিয়ে বহাল থাকা টালবাহানা।
শিল্প ও বিশেষজ্ঞদের প্রায় সকলেই মনে করছেন, বিশেষত নতুন আইনটি চালু না হওয়া পর্যন্ত ফ্ল্যাট-বাড়ি কেনা থেকে হাত গুটিয়ে রাখার কৌশলই নিচ্ছেন বহু ক্রেতা। একই সঙ্গে স্যমন্তকবাবুর অবশ্য দাবি, এ রাজ্যে তুলনায় বেশি স্ট্যাম্প ডিউটিও নির্মাণ শিল্পের মাথাব্যথার বড় কারণ।
দিল্লি, মুম্বই, কলকাতা, বেঙ্গালুরু-সহ ৮টি শহরে সমীক্ষা চালিয়েছে নাইট ফ্র্যাঙ্ক। দেখা গিয়েছে, সার্বিক ভাবে নতুন প্রকল্প ঘোষণার সংখ্যা গত
বছরের তুলনায় ৪১% কম। প্রপটাইগার ডট কমের কর্তা অঙ্কুর ধাওয়ান জানান, দেশের ৯টি বড় শহরেই ১৭% বিক্রি কমেছে। নাইট ফ্র্যাঙ্কের তথ্য অবশ্য বলছে, কলকাতায় ১৭% বিক্রি কম হলেও, মুম্বইতে বিক্রি পড়েছে ১৯%, বেঙ্গালুরুর ৩৪%। যদিও এই দুই শহরে অবিক্রিত ফ্ল্যাটের সংখ্যা কলকাতার তুলনায় কম।
এই পরিস্থিতিতে কলকাতার ভরসা ফ্ল্যাটের দাম সাধারণত মানুষের সাধ্যের মধ্যে থাকা। যা বলছে অ্যাফোর্ডেবিলিটি ইনডেক্স বা সাধ্যের সূচক। এর নিরিখে অন্যান্য শহরের তুলনায় কলকাতা অনেকটা এগিয়ে। বিশেষজ্ঞদের দাবি, তার প্রধান কারণ এখানে বাড়ির দাম অনাবশ্যক বাড়িয়ে না রাখা। যা হয়েছে স্থানীয় নির্মাণ সংস্থাগুলির বাস্তব বুদ্ধির পাশাপাশি বাজারের চরিত্র মেনে। ফাটকা-বাজদের বাজার হিসেবে চিহ্নিত নয় এ শহর। যাঁদের প্রয়োজন, তাঁরাই বাড়ি কিনছেন। নির্মাণ শিল্পের সংগঠন ক্রেডাইয়েরও দাবি, দাম বাড়বে বলে ফ্ল্যাটে লগ্নির মানসিকতা এখানে কম।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy