অনুৎপাদক সম্পদের সমস্যা নিয়ে কেন্দ্র নাজেহাল। তাতে ডুবে রয়েছে প্রায় সমস্ত রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কই। এ বার সে বিষয়ে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ভূমিকা ও দায়িত্ব নিয়েই প্রশ্ন তুললেন কন্ট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল অব ইন্ডিয়া (সিএজি) রাজীব মহর্ষি। সরাসরি প্রশ্ন তুললেন, ব্যাঙ্কগুলি যখন আগে পাগলের মতো ধার দিচ্ছিল, তখন কী করছিল নিয়ন্ত্রক (শীর্ষ ব্যাঙ্ক)?
সরকারি হিসেবেই ২০১৮ সালের ৩১ মার্চ দেশে মোট অনুৎপাদক সম্পদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯.৬১ লক্ষ কোটি টাকা। যার মধ্যে ৭.০৩ লক্ষ কোটির পাহাড় জমেছে বিভিন্ন শিল্প সংস্থা সময়ে ধার শোধ না দেওয়ার কারণে। জুন ত্রৈমাসিকের শেষে অনাদায়ি ঋণের অঙ্ক আরও বেড়ে পৌঁছেছে প্রায় ১২ লক্ষ কোটি টাকায়। সেই সমস্যা কড়া হাতে সামাল দেওয়ার কথা বারবার বলছে কেন্দ্র। আগামী দিনে এই সমস্যার পুনরাবৃত্তি এড়াতে এক গুচ্ছ দাওয়াইয়ের কথা ঘোষণা করেছে খোদ রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। কিন্তু মহর্ষির প্রশ্ন, এখন সবাই সমস্যা সমাধানের উপায় খুঁজছে ঠিকই। কিন্তু আগে যখন বেহিসেবি ভাবে ব্যাঙ্কগুলি ধার দিচ্ছিল, তখন শীর্ষ ব্যাঙ্ক নীরব দর্শকের ভূমিকায় থাকল কেন?
মঙ্গলবার ইন্ডিয়ান স্কুল অব পাবলিক পলিসির উদ্বোধনে এসে মহর্ষির প্রশ্ন, ‘‘ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রের সঙ্কট কী ভাবে কাটানো যায়, সে বিষয়ে প্রায় প্রত্যেকের মতামত আছে। অন্যতম উপায় অবশ্যই পুঁজি জোগানো, যা আসলে ভর্তুকির নামান্তর। কিন্তু আসল প্রশ্ন কেউ জিজ্ঞাসা করছেন না। তা হল, নিয়ন্ত্রক (রিজার্ভ ব্যাঙ্ক) কী করছিল? তার ভূমিকা এবং দায়িত্ব ঠিক কী ছিল?’’ সেই সূত্রেই ওই ধার দেওয়ার সময়ে নিয়ন্ত্রকের দায়িত্ব পালন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের দাওয়াই প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় আর্থিক পরিষেবা সচিব রাজীব কুমারের দাবি ছিল, ‘‘ঋণখেলাপিদের ঘুম ভাঙানোর কাজ করবে এই নতুন নির্দেশিকা।’’ কিন্তু এ দিন কার্যত ধার দেওয়ার সময়ে শীর্ষ ব্যাঙ্কের নীরবতা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন মহর্ষি।
এ দিন অবশ্য অনাদায়ি ঋণের সমাধান খুঁজতে বৈঠকে বসেছিল শীর্ষ ব্যাঙ্কের পর্ষদ। উপস্থিত ছিলেন গভর্নর উর্জিত পটেল, কেন্দ্রীয় আর্থিক বিষয়ক সচিব সুভাষচন্দ্র গর্গ প্রমুখ। তা ছাড়া, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজনেরও অভিযোগ ছিল, তাঁর সময়ে বড় মাপের ব্যাঙ্ক প্রতারণার মামলার একটি তালিকা তিনি প্রধানমন্ত্রীর দফতরে পাঠিয়েছিলেন। অন্তত দু’-একজন প্রতারকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধও তাতে জানানো হয়েছিল। কিন্তু সে বিষয়ে কোনও অগ্রগতি হয়েছে কি না, তা তাঁর জানা নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy