Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

রাজ্যে বৈদ্যুতিন শিল্পগুচ্ছের প্রথম উৎপাদন প্রকল্পে অনুমোদন কেন্দ্রের

রাজ্যের প্রথম ‘ইলেকট্রনিক্স ম্যানুফ্যাকচারিং ক্লাস্টার’ প্রকল্প অনুমোদন করল কেন্দ্র। গত সপ্তাহে রাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি দফতরের কাছে বৈদ্যুতিন শিল্পগুচ্ছের প্রথম এই উৎপাদন প্রকল্প গড়া নিয়ে অনুমোদনের চিঠি এসেছে। গত মার্চ মাসেই কেন্দ্রের কাছে প্রকল্প রিপোর্ট জমা দিয়েছিল রাজ্য। তার ভিত্তিতেই কেন্দ্রের সিলমোহর পেয়েছে প্রকল্পটি। নৈহাটিতে রাজ্য শিল্পোন্নয়ন নিগমের শিল্প তালুকে প্রায় ৮০ একর জমিতে এই প্রকল্প তৈরি হবে।

গার্গী গুহঠাকুরতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০১৪ ০১:২৬
Share: Save:

রাজ্যের প্রথম ‘ইলেকট্রনিক্স ম্যানুফ্যাকচারিং ক্লাস্টার’ প্রকল্প অনুমোদন করল কেন্দ্র।

গত সপ্তাহে রাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি দফতরের কাছে বৈদ্যুতিন শিল্পগুচ্ছের প্রথম এই উৎপাদন প্রকল্প গড়া নিয়ে অনুমোদনের চিঠি এসেছে। গত মার্চ মাসেই কেন্দ্রের কাছে প্রকল্প রিপোর্ট জমা দিয়েছিল রাজ্য। তার ভিত্তিতেই কেন্দ্রের সিলমোহর পেয়েছে প্রকল্পটি।

নৈহাটিতে রাজ্য শিল্পোন্নয়ন নিগমের শিল্প তালুকে প্রায় ৮০ একর জমিতে এই প্রকল্প তৈরি হবে। রাজ্য সরকারি সূত্রের খবর, মূল বিনিয়োগকারী বা ‘অ্যাঙ্কর ইনভেস্টর’ খোঁজার দায়িত্ব অবশ্য উপদেষ্টা সংস্থা আইএল অ্যান্ড এফএস-এর উপরেই দেওয়া হয়েছে। এই সংস্থাই প্রকল্প রিপোর্ট তৈরি করেছে। প্রকল্পের জন্য মোট খরচের ৫০% টাকা দেবে কেন্দ্র। টাকার অঙ্কে এই অনুদানের পরিমাণ ৪০ কোটির কাছাকাছি।

জুলাই মাসে দক্ষিণ কোরিয়ার সংস্থা কোটরা বা কোরিয়া ট্রেড-ইনভেস্টমেন্ট প্রোমোশন এজেন্সির কর্তা ডি এস ছে এবং কোটরার অন্য প্রতিনিধিদের নিয়ে নৈহাটিতে জমি দেখাতে যান ওয়েবেলের আধিকারিকরা। প্রসঙ্গত দক্ষিণ কোরিয়ার দুই বৈদ্যুতিন ভোগ্যপণ্য নির্মাতা সংস্থা স্যামসাং ও এলজি ভারতে কারখানা গড়ছে। কলকাতার ভৌগোলিক অবস্থানগত সুবিধার কথা বলেছেন দুই সংস্থার কর্তৃপক্ষই। কিন্তু লগ্নির ক্ষেত্রে এ রাজ্য এখনও তাঁদের তালিকাভুক্ত হয়নি।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০১৫ সালের মধ্যে দেশের ইলেকট্রনিক্স পণ্যের বাজার দাঁড়াবে ৩৬,৩০০ কোটি ডলার। সেই বাজার এখনও রাজ্যের অধরা। পরিস্থিতি বদলাতে সোনারপুর হার্ডওয়্যার পার্ক দ্রুত বিনিয়োগকারীদের হাতে তুলে দেওয়ার উপযুক্ত করতে ওয়েবেলকে নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য। শিল্প তথা তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী অমিত মিত্রের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ভারতের মোট বৈদ্যুতিন পণ্য উৎপাদনের মাত্র ৪% এ রাজ্যে হয়।

নৈহাটির পাশাপাশি ফলতায় দ্বিতীয় ‘ইলেকট্রনিক্স ম্যানুফ্যাকচারিং ক্লাস্টার’ তৈরির কাজও চলছে বলে তথ্যপ্রযুক্তি দফতর সূত্রের খবর। ‘ডিটেলড প্রজেক্ট রিপোর্ট’ বা প্রকল্পের বিশদ পরিকল্পনা তৈরি করছে আইএল অ্যান্ড এফএস-ই। প্রয়োজনে দু’টি প্রকল্প একসঙ্গে তৈরি করে দিতেও রাজি রাজ্য। কারণ সফটওয়্যারে বড় লগ্নির অভাব বৈদ্যুতিন শিল্পের বিনিয়োগ পুষিয়ে দিতে পারবে বলে মত সংশ্লিষ্ট শিল্পমহলের।

সফটওয়্যারে লগ্নি টানার দৌড় দেরিতে শুরু করেছিল পশ্চিমবঙ্গ। সেই ভুল হার্ডওয়্যার শিল্পের ক্ষেত্রে শুধরে নিতে চেষ্টা করেছিল বাম সরকার। আর এই সরকার আর এক ধাপ এগিয়ে হার্ডওয়্যার শিল্পের তালিকায় এনেছে সৌর বিদ্যুৎ তৈরির যন্ত্রপাতিও। এমনকী নয়া তথ্যপ্রযুক্তি নীতিতেও এই শিল্পকে বিশেষ জায়গা দেওয়া হয়েছে। তবু এখনও এই শিল্পে দেশের বাজারে রাজ্যের ভাগ প্রায় নেই বললেই চলে।

বছর তিনেক আগে সম্ভাবনার ভিত্তিতে যে ছ’টি রাজ্যকে বেছে নিয়েছিল ইন্ডিয়ান সেমি-কন্ডাক্টর অ্যাসোসিয়েশন, তার মধ্যে অন্যতম ছিল পশ্চিমবঙ্গ। তার অন্যতম কারণ ছিল রাজ্যের মেধা-সম্পদ। বাকিগুলির মধ্যে ছিল তামিলনাড়ু, কর্নাটক, অন্ধ্রপ্রদেশও যারা ইতিমধ্যেই সংশ্লিষ্ট শিল্পে পাকা জায়গা করে নিয়েছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট মহলের মতে শিল্পের আগ্রহকে লগ্নিতে বদলে দিতে হার্ডওয়্যার ও চিপ ডিজাইনিং-এর মতো শিল্পে কলকাতা কিছুটা পিছিয়ে। এ রাজ্যে চিপ ডিজাইনিং সংস্থা নেই বললেই চলে। সেই কারণে রাজ্যের সংশ্লিষ্ট মেধাও পাড়ি দিয়েছে বেঙ্গালুরু ও হায়দরাবাদে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

gargi guhathakurta electronic manufacturing cluster
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE