Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
সেনসেক্স পড়ল ৩১৮

চিনের সুদ ছাঁটাইয়ে প্রাণ ফিরল না শেয়ার বাজারে

ফল মিলল না চিনের দাওয়াইয়ে। বাজারে স্থিতি ফেরাতে মঙ্গলবার চিন সুদ ছাঁটাই করলেও রুখতে পারল না সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জের পতন। ভরসা জোগাতে পারল না বিশ্ব বাজারকেও। বুধবারও অব্যাহত ছিল চিনের শেয়ার বাজারের পতন, যার রেশ ছড়ায় ভারতের বাজারেও। একদিন ওঠার পরে সেনসেক্স পড়ল ৩১৭.৭২ পয়েন্ট। বাজার বন্ধের সময়ে সূচক ফের ২৬ হাজারের ঘর থেকে নেমে থিতু হয় ২৫,৭১৪.৬৬ অঙ্কে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০১৫ ০২:২৪
Share: Save:

ফল মিলল না চিনের দাওয়াইয়ে।
বাজারে স্থিতি ফেরাতে মঙ্গলবার চিন সুদ ছাঁটাই করলেও রুখতে পারল না সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জের পতন। ভরসা জোগাতে পারল না বিশ্ব বাজারকেও। বুধবারও অব্যাহত ছিল চিনের শেয়ার বাজারের পতন, যার রেশ ছড়ায় ভারতের বাজারেও। একদিন ওঠার পরে সেনসেক্স পড়ল ৩১৭.৭২ পয়েন্ট। বাজার বন্ধের সময়ে সূচক ফের ২৬ হাজারের ঘর থেকে নেমে থিতু হয় ২৫,৭১৪.৬৬ অঙ্কে। এ দিন ডলারে টাকা পড়েছে ৪ পয়সা। মঙ্গলবার সেনসেক্স বেড়েছিল ২৯১ পয়েন্ট।
বুধবার সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জের সূচক পড়েছে ১.২৭%। চিনের অপর শেয়ার সূচক সেনঝেন কম্পোজিট ইনডেক্স পড়েছে ০.৩%। এই নিয়ে চিনের শেয়ার সূচক টানা পাঁচ দিন পড়ল। শুধু চিনের বাজারই নয়, পাশাপাশি ১.৫২% পতন হয়েছে হংকঙের হ্যাং সেং-এর, ০.৪৬% সিঙ্গাপুরের সূচকের। তবে জাপানের শেয়ার সূচক নিক্কেই বেড়েছে ৩.২০%এবং কোরিয়ার ২.৫৭%। ইউরোপের বেশির ভাগ সূচকের মুখও ছিল নীচের দিকে। তবে বাজার খোলার পরে ভাল রকম চাঙ্গা ছিল মার্কিন বাজার।
আজ বৃহস্পতিবার অগস্ট মাসের আগাম লেনদেনের সেট্‌লমেন্টের দিন। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, অনিশ্চিত বাজারে ঝুঁকি নিয়ে সেট‌্লমেন্টের আগেই লগ্নিকারীদের মধ্যে শেয়ার বেচে মুনাফার টাকা তোলার ধুম পড়ে যায়। যা সূচকের পতনে ইন্ধন জুগিয়েছে।
সূচকের এই উত্থান-পতন খুবই স্বাভাবিক বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হিসাবে চিনের সঙ্কটের জের স্বাভাবিক ভাবেই বিশ্বের অন্য দেশগুলির উপর পড়বে। তাই তাদের সমস্যার সমাধান না-হওয়া পর্যন্ত শেয়ার বাজারে স্থিতিশীলতা আসার সম্ভাবনা কম।
তবে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে প্রায় সকলেই যে-বিষয়ে একমত তা হল, এই ডামাডোলের মধ্যেও ভারত অন্য অনেক দেশের তুলনায় মজমুত জমিতে দাঁড়িয়ে। আইসিআইসিআই প্রুডেন্সিয়াল অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং সিইও নিমেষ শাহ বলেন, ‘‘ভারত বিপুল পরিমাণে পণ্য আমদানি করে। এখন বিশ্ব জুড়ে অশোধিত তেল-সহ বিভিন্ন পণ্যের দাম কমছে। তাই এটা ভারতের পক্ষে ভাল খবর। এর ফলে ভারতের বাণিজ্য ঘাটতি কমার সম্ভাবনা যথেষ্ট।’’

তবে ভারতের পক্ষে যে-বিষয়টি উৎকণ্ঠার তা হল, টাকার দাম কমা। শাহ বলেন, ‘‘কিন্তু এই মুহূর্তে ভারতের বিদেশি মুদ্রার ভাণ্ডার যথেষ্ট মজমুত অবস্থায় রয়েছে। প্রয়োজনে তার থেকে কিছু ডলার বাজারে ছেড়ে তার জোগান বাড়িয়ে দিতে পারে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। এটা করা হলে ডলারের দাম কমে বাড়বে টাকার দাম।’’

তবে পরিকাঠামো ক্ষেত্রে লগ্নি করার যে-পরিকল্পনার কথা কেন্দ্রীয় সরকার ঘোষণা করে রেখেছে, তা যত দ্রুত সম্ভব কার্যকর করায় তাদের উদ্যোগী হওয়া জরুরি বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

এখন কি লগ্নি করা ঠিক হবে?

এই প্রশ্নের উত্তরে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে অধিকাংশেরই মত, যাঁদের ঝুঁকি নেওয়ার ক্ষমতা আছে, তাঁরা ভাল সংস্থায় এখন বিনিয়োগ করতে পারেন। তবে সাধারণ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের উচিত, আপাতত সপ্তাহ দু’য়েক পরিস্থিতির উপর নজর রেখে তার পরে লগ্নির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া। এ ব্যাপারে শাহের মত, ‘‘দীর্ঘকালীন ভিত্তিতে ভারতের উন্নয়নের যে-রূপরেখা আমাদের সামনে রয়েছে, তার দিকে নজর রেখে বলা যায়, সাম্প্রতিক পতন লগ্নিকারীদের কাছে শেয়ারে বিনিয়োগ করার ভাল সুযোগ এনে দিয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE