Advertisement
১৮ মে ২০২৪
উন্নত দুনিয়া নিয়ে উদ্বিগ্ন জেটলি ,দেশে জোর আরও সংস্কারে

বিশ্বায়নের বিরোধিতা বিপদ ডাকতে পারে অর্থনীতির

বিশ্বায়ন এবং মুক্ত বাণিজ্য। উন্নত দুনিয়ায় এই দু’য়েরই বিরোধিতার ক্রমশ বাড়তে থাকা জনপ্রিয়তা বিশ্ব অর্থনীতির বিপদ ডাকতে পারে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। নাম না-করেও তুলে আনলেন মার্কিন মুলুকে প্রেসিডেন্ট পদে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভোট-প্রচারের প্রসঙ্গ।

সংবাদ সংস্থা
মুম্বই শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০১৬ ০২:৪৫
Share: Save:

বিশ্বায়ন এবং মুক্ত বাণিজ্য। উন্নত দুনিয়ায় এই দু’য়েরই বিরোধিতার ক্রমশ বাড়তে থাকা জনপ্রিয়তা বিশ্ব অর্থনীতির বিপদ ডাকতে পারে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। নাম না-করেও তুলে আনলেন মার্কিন মুলুকে প্রেসিডেন্ট পদে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভোট-প্রচারের প্রসঙ্গ। একই সঙ্গে জানালেন, বিশ্ব অর্থনীতির অস্থিরতার সঙ্গে যুঝতে সংস্কারকেই আঁকড়ে ধরতে চান তাঁরা। স্বাগত জানাতে চান বিদেশি লগ্নিকে।

শুক্রবারই গোয়ায় শুরু হচ্ছে পাঁচ দেশের (ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চিন এবং দক্ষিণ আফ্রিকা) ব্রিকস সম্মেলন। তার আগে বৃহস্পতিবার ব্রিকস লগ্নি সম্মেলনে জেটলি বলেন, ফের বাণিজ্যের রাস্তায় দেওয়াল তোলার কথা বলা হচ্ছে উন্নত দুনিয়ার এক বড় অংশে। জনপ্রিয় হচ্ছে বিশ্বায়ন বিরোধিতা। এই ধারা বজায় থাকলে, তার প্রভাব উন্নয়নশীল দেশগুলির উপরেও পড়বে। সব মিলিয়ে যা বিপদ ডেকে আনতে পারে বিশ্ব অর্থনীতির। তবে তাঁর আশা, এই বিরোধিতার অনেকটাই রাজনৈতিক জনপ্রিয়তা অর্জনের জন্য বলা। ফলে প্রশাসন চালানোর জন্য সেই অবস্থান থেকে সরতে হবেই।

বিশ্ব অর্থনীতি ও বাণিজ্যের আগল খোলার পরে সাধারণ মানুষের লাভ কতখানি হয়েছে, তা নিয়ে তর্ক রয়েছে বিস্তর। অনেকে বলেন, এতে বৃদ্ধির চাকায় গতি এসেছে। তার সুফল পেয়েছেন দুনিয়ার সকলে। উল্টো তরফের দাবি, এর দরুন বৈষম্য বেড়েছে। অন্যান্য দেশে অনেক কাজ চলে যাওয়ায় তা খুইয়েছেন উন্নত দুনিয়ার মানুষ। হালে সস্তার চিনা পণ্যে সারা দুনিয়ার বাজার ছেয়ে যাওয়ায় সেই অভিযোগ জোরালো হয়েছে। তাতে ঘি ঢেলেছে অভিবাসন সমস্যা। উন্নত দুনিয়ার মানুষদের এক বড় অংশ মনে করছেন, চিনা পণ্যের মতো সস্তা সামগ্রীর সঙ্গে দামের লড়াইয়ে টেক্কা দিতে না-পেরে একের পর এক কারখানার দরজা বন্ধ হচ্ছে আমেরিকা, ইউরোপে। আউটসোর্সিংয়ের জেরে তাঁদের কাজ নিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নশীল দেশগুলি। ফলে মুক্ত বাণিজ্য নিয়ে বিতৃষ্ণা তৈরি হয়েছে কিছুটা। তার উপর ২০০৮ সালের বিশ্বজোড়া মন্দায় বহু মানুষ কাজ হারানোয় তিতকুটে ভাব দানা বেঁধেছে বিশ্বায়ন সম্পর্কেও।

জনমানসে তৈরি হওয়া এই অসন্তোষকেই কাজে লাগাচ্ছেন বিভিন্ন রাজনীতিবিদ। হোয়াইট হাউসকে পাখির চোখ করা ট্রাম্পই আওয়াজ তুলেছেন, ‘‘আমেরিকা ফার্স্ট।’’ বাণিজ্যে ফের দেওয়াল তোলার কথা বলছেন তিনি। প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, ক্ষমতায় এলে মার্কিন মুলুকের অধিকাংশ মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি খারিজ করার। এমনকী মার্কিন সংস্থাগুলি চিন-সহ বিভিন্ন দেশে যে কারখানা গড়েছে, সেই উৎপাদন ব্যবস্থাও দেশে ফেরাতে চান তিনি। এ দিন অর্থমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘বাণিজ্যে ক্রমশ বেশি করে দেওয়াল তুলছে আমেরিকা।’’

শুধু আর্থিক কারণে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেয়নি ব্রিটেন (ব্রেক্সিট)। কিন্তু অভিবাসনের কারণে ভূমিপুত্রদের চাকরি হারানো ইন্ধন জুগিয়েছে তাতে। এ সমস্ত কিছু নিয়ে উদ্বেগ সত্ত্বেও জেটলির আশা, প্রশাসন চালানোর বাস্তব বিশ্বায়নের রাস্তা থেকে সরতে দেবে না। ঠিক যে কারণে ‘ব্রেক্সিটের পরে’ মুক্ত বাণিজ্যের কথাই ফের বলছে ব্রিটেন।

অর্থমন্ত্রীর দাবি, বাইরের এই ঝড় সামাল দিতে দেশে সংস্কারেই জোর দেবেন তাঁরা। ইতিমধ্যেই অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিদেশি লগ্নির রাস্তা প্রশস্ত করা হয়েছে। সংস্কারের অভাবেই এত দিন পরিকাঠামো, বিদ্যুতের মতো ক্ষেত্রে ঋণ খেলাপের সমস্যা বেড়েছে বলেও দাবি জেটলির।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

globalization Arun jaitley free trade
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE