—প্রতীকী চিত্র।
গত ছ’বারের মতো শুক্রবারে চলতি অর্থবর্ষের প্রথম ঋণনীতি ঘোষণাতেও সুদের হার ৬.৫ শতাংশে অপরিবর্তিত রাখল রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। সুদ না বাড়ায় গাড়ি, বাড়ি কেনার জন্য নেওয়া ধার শোধের মাসিক কিস্তি বা ইএমআই আর বাড়বে না ভেবে কিছুটা স্বস্তিতে ঋণগ্রহীতারা। তার উপর চলতি অর্থবর্ষে আর্থিক বৃদ্ধির পূর্বাভাস ৭ শতাংশেই রেখেছে আরবিআই। জুলাই-সেপ্টেম্বরে মূল্যবৃদ্ধির পূর্বাভাস নামানো হয়েছে ৩.৮ শতাংশে। যা বাস্তবায়িত হলে সুদ কমানোর রাস্তা চওড়া হবে। তবু দিনের শেষে ঋণনীতি দেশবাসীকে নিশ্চিন্ত করতে পারল না বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা। কারণ, আরবিআই গভর্নর শক্তিকান্ত দাস স্পষ্ট বলেছেন, এখনও খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি সব থেকে বড় মাথাব্যথা। দামে অস্থিরতা বহাল। এমনকি চড়া তাপপ্রবাহ শুরু হওয়ায় আনাজের দাম নিয়ে চিন্তা সবচেয়ে বেশি। তীব্র গরমের প্রভাব পড়তে পারে তাতে। ফলে কড়া নজর রাখতে হবে দামে।
ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা বহাল থাকা, সুয়েজ প্রণালী দিয়ে পণ্য চলাচল বিপর্যস্ত হওয়ার মতো বিষয়ও সরবরাহে কাঁটা বলে সতর্ক করেছেন শক্তিকান্ত। বলেছেন, এর প্রভাবেও দাম বাড়তে পারে। ধাক্কা লাগতে পারে জিডিপি বৃদ্ধিতে। তবে তাঁর আশা, ভাল বর্ষা হবে বলে আবহাওয়া দফতরের অনুমান সত্যি হলে স্বস্তি মিলবে। চলতি অর্থবর্ষের ত্রৈমাসিকগুলিতে মূল্যবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়েছেন তাঁরা। জুলাই-সেপ্টেম্বরে অনুমান ৩.৮%।
যদিও অর্থনীতিবিদ অভিরূপ সরকার বলেন, “সার্বিক ভাবে মূল্যবৃদ্ধি নামলেও খাদ্যপণ্যের দাম না কমলে আমজনতা স্বস্তি পাবেন না। বিশেষত আর্থিক ভাবে দুর্বল মানুষেরা। তাই খাদ্যপণ্যের দাম না কমলে মূল্যবৃদ্ধি কমার দাবি করার কোনও অর্থ থাকবে বলে মনে হয় না। তা ছাড়া, বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দাম কম থাকার কথা মাথায় রেখেই নিশ্চয়ই মূল্যবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। অথচ ওই দাম চূড়ান্ত অনিশ্চিত। তেলের দাম বাড়লে মূল্যবৃদ্ধির পূর্বাভাস মেলা কঠিন হবে। যে সব ভূ-রাজনৈতিক সমস্যার কথা গভর্নর বলেছেন, তার বিরূপ প্রভাবও পণ্যের মূল্য স্তরে পড়া স্বাভাবিক।’’ অর্থনীতিবিদ অজিতাভ রায়চৌধুরীর মন্তব্য, “অনেকগুলি ‘যদির’ উপর নির্ভর করে আরবিআই মূল্যবৃদ্ধির পূর্বাভাস ছেঁটেছে। একটি হল, ভাল বর্ষা। কিন্তু আদতে তা অনিশ্চিত। এ ছাড়া, ভোটের আগে কেন্দ্র তেলের দাম একটু কমিয়েছে। কিন্তু পরে বিশ্ব বাজারে তেলের দাম বৃদ্ধির জন্য যদি ভারতেও তার দাম বাড়ে, তাহলে পরিবহণ খরচ বেড়ে খাদ্যপণ্যের দামে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। সে ক্ষেত্রে মূল্যবৃদ্ধি কোথায় দাঁড়াবে, তা বলা কঠিন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy